thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

সেই বিএনপির কাছে এখন নীতি কথা শুনতে হয়:প্রধানমন্ত্রী

২০২২ আগস্ট ০১ ১৫:৪১:০৯
সেই বিএনপির কাছে এখন নীতি কথা শুনতে হয়:প্রধানমন্ত্রী

দ্যরিপোর্ট প্রতিবেদক: সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখে এখন নির্বাচন নিয়ে ‘নীতি কথা শুনতে হচ্ছে’ বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০১ সালের যে নির্বাচনে জিতে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, সেই নির্বাচনে ‘প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

শোকের মাস অগাস্ট উপলক্ষে সোমবার কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি’র অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা।

বিএনপির আমলে দেশের মানুষের ভোট দেওয়ার ‘অধিকারটাই ছিল না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্য হল, একটা মিলিটারি ডিক্টেটর অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় থেকে যে দল গঠন করেছিল ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে, তাদের কাছে এখন নানা রকম নীতির কথা শুনতে হয়।

“যারা এই বাংলাদেশটাকে বানিয়েছিল অস্ত্র চোরাকারবারির একটা জয়গা, সন্ত্রাসীর দেশ, জঙ্গিবাদের দেশ, বাংলা ভাই সৃষ্টির দেশ।”

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের জয়ের প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেই নির্বাচন কি নির্বাচন হয়েছিল? সেখানে কি কোন মানুষ ভোট দিতে যেতে পেরেছে? সমস্ত বাংলাদেশে আর্মি ডিপ্লয় করা হয়েছে। সেখানে কি সিল মারা বলে? এরা তো প্রকাশ্যে সিল মারতো।

“এখানে রাতের ভোট না, একেকটা বাসে করে যাবে বিএনপির সন্ত্রাসীরা, একেকটা বুথে ঢুকবে, সিল মারবে, বাক্স ভরবে, আর চলে আসবে। আর সেটা না পারলে সোজা ঘোষণা “

১৯৯৪ সালের মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচন এবং অন্য ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনগুলোর উদাহরণ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “এসব নির্বাচন তো মানুষের চোখে দেখা। কোনো মানুষ তো ভোট দিতে পারেনি। ভোট দেওয়ার অধিকারটাই মানুষের ছিল না বিএনপির আমলে।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তাদের (বিএনপি) কাছ থেকেও কথা শুনতে হয় নির্বাচন নিয়ে, তারা কথা বলে কোন মুখে? কারণ নির্বাচনের মাধ্যমে তো তাদের ক্ষমতায় আসা না। অবৈধভাবে আসা অথবা দেশ বিক্রির (মুচলেকা) দিয়ে আসা। এই তো?”

বিএনপির শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশকে খাদ্য ঘাটতিতে রেখে মানুষকে ভিক্ষুক জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করানো এবং ভিক্ষা চেয়ে নিয়ে আসা।… এই খাদ্য কিনবে, ব্যবসা করবে এবং কমিশন খাবে এটাই ছিল বিএনপির নীতি।”

বিএনপির সময়ে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা তো বিএনপির এক নেতারই বক্তব্যে আছে। গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে এই সমস্ত কাজ করানো হতো। সেই দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে। একটা চালান ধরা পড়েছে। এই রকম কতো চালান এই দেশে এসেছে আর গিয়েছে।”

সে সময় দেশকে সম্পূর্ণ ‘পরনির্ভরশীল’ করে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করে ফেলা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি করা, পাঁচ পাঁচ বার দুর্নীতিতে এই বাংলাদেশ এক নম্বরে ছিল।… প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি।… শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করা। স্বাক্ষরতার হার আবার কমিয়ে সেই ৪৫ থেকে ৫০ ভাগে নামিয়ে নিয়ে আসা…।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা ‘মানি লন্ডারিংয়ের জড়িত’ এবং তাদের পাচার করা টাকা ‘দেশে ফেরত আনা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “এটা ভুলে যায় কেন। টাকা তো আমরা ফেরত এনেছি। তাদের দুর্নীতি আমাদের বলতে হবে কেন। একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা আমেরিকার এফবিআই, তারাই তো খুঁজে বের করেছে যে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া- এরা কার কার কাছ থেকে দুর্নীতি করে কত টাকা নিয়েছে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে,এদেশের মানুষ যেন সম্মানের সাথে চলতে পারে, কারো কাছে যেন হাত পাততে না হয় বলেও জানান তিনি।

জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে… কারো কাছে যেন হাত পাততে না হয়।

“ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না- এটাই জাতির পিতার কথা। বাংলাদেশ যেন কখনো ভিক্ষুক জাতি না হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতাকে হত্যা করে মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যারা এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিল, যুদ্ধাপরাধী ও খুনিদের রাজত্ব গড়ে তুলেছিল… এদেশে যেন আর কখনো বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।”

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, দপ্তর সম্পদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষক লীগের সভপতি সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর