thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

যে হাতে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে- প্রধানমন্ত্রী 

২০২৩ জানুয়ারি ০৮ ০০:২৫:৪৭
যে হাতে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে- প্রধানমন্ত্রী 

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র মিলে ২১ আগস্ট থেকে শুরু করে অনেক মানুষ হত্যা করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। আগামীতে যদি আর একজন মানুষেরও ক্ষতি করে, তাহলে যে হাতে আগুন দেবে সেই হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে। যে হাতে মানুষ খুন করবে, সেই হাতকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে। এই কথাটা যেন সকলের মনে থাকে।

আজ শনিবার দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমান হত্যা, খুন ও গুম শুরু করেছিলেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতকে ঘৃণা জানাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করতে এসে প্রতি নির্বাচনেই তাঁর দল সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে মানুষের সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। আর সেজন্য আজকে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতার ৭ মার্চের যে ভাষণ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর এদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সেই ৭ মার্চের ভাষণ আজ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। যে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগান নিষিদ্ধ ছিল তাকে আমরা আজকে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ফিরে পেয়েছি এবং বাংলাদেশ আজকে আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি মানুষের আর্থসামাজিক পরিবর্তন হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত আমরা পারি মানুষের জন্য দু’বেলা দ’ুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা আমরা করতে পেরেছি। আর জাতির পিতা শেখ মুজিবের বাংলায় কোন মানুষ আর ভুমিহীন-ঘরহীন-ঠিকানা বিহীন থাকবে না, আমরা ঘর করে দিচ্ছি। যারা বাকী আছে তাদেরকেও ঘর করে দেব।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি ঘরে আলো জে¦লে প্রতি ঘরকে আমরা আলোকিত করেছি।

পাশাপাশি, সাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ থেকে ৭৫ দশমিক ২ ভাগে উন্নীত করা, মানুষের আয়ুস্কাল ৬৪ বছর থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত করা, খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করণ, ১৮ হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানসহ চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং করোনা ভ্যকসিন বিনা পয়সায় বিতরণেও তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনার সময় একদম তৃনমূল মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবীদের যেন কোন সমস্যা না হয় সেজন্য নগদ অর্থসহ বিভিন্ন প্রনোদণা দিয়ে ব্যবসা-বানিজ্য, কৃষি, শিল্পসহ অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার তথ্যও দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে আরো ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়েছে। আজকে উন্নত দেশও হিমসিম খাচ্ছে এবং নিজেদেরকে তারা অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে কিন্তু আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশ এখনও সে পর্যায়ে যায়নি এবং তাঁর সরকার এখনও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি, সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির কলেবর বৃদ্ধি করে দিয়েছে। অতি উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে ক্রয় করতে হলেও ভর্তুকি প্রদান করে নিত্যপণ্য মানুষের মাঝে সরবরাহ করছে।

এরমধ্যে মাত্র ১৫ টাকায় চাল ক্রয়, মধ্যবিত্তের জন্য টিসিবি’র বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে চাল ক্রয়ের সুবিধা, ভিজিডি-ভিজিএফ এর মাধ্যমে একেবারে হত দরিদ্রদের খাদ্য সাহায্য প্রদান, বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্ততা ভাতা ও প্রতিবন্ধি ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা বর্ধিত হারে প্রদান করছে, যাতে মানুষের কোন কষ্ট না হয়।

তিনি এ সময় দেশের সকল অনাবাদী জমিকে চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোয় তাঁর আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, অনেক দেশে আজকে খাদ্যের জন্য হাহাকার। কিন্তু আমরা এই মাটিকে যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যকেও সাহায্য করতে পারবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পুণর্গঠনকালে জাতির পিতা বলেছিলেন আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে এই মাটি ও মানুষ দিয়েই আমি এদেশকে গড়ে তুলবো। তিনি আরো একটি কথা বলতেন, যে দেশের মাটি এত উর্বর যেখানে বীজ ফেললেই ফসল হয় সেদেশের মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে কেন? আমরা তারই নীতি অনুসরণ করি। সেজন্য আমার এটাই আহ্বান যে আমাদের দেশে যে যেভাবে পারেন ফসল ফলাতে হবে। নিজেকেই নিজের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যা করণীয় সেটা আওয়ামী লীগ যতদিন সরকারে আছে- মানুষের কষ্ট দূর করার জন্য যা যা করণীয় তা করে যাবে। সেটা আমরা করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের মানুষকে স্বাধীনতা যেমন এনে দিয়েছে তেমনি আর্থসামাজিক উন্নতিও এনে দিয়েছে। মাত্র ১৪ বছরে বাংলাদেশ আজকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশে^ একটা মর্যাদা পেয়েছে। এই জাতিকে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাচ্ছি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। সেই সঙ্গে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নিয়েছি। সারা বাংলাদেশে আমরা যেমন হাইটেক পার্ক করছি, স্কুলগুলোতে কম্পিউটার ল্যাব করছি, প্রযুক্তি শিক্ষা এবং বহুমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর