thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মে 24, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৯ জিলকদ  1445

‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ বাস্তবায়ন হচ্ছে না

২০১৩ নভেম্বর ১২ ১৯:৫৩:১১
‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ বাস্তবায়ন হচ্ছে না

রেজোয়ান আহমেদ, দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতার জন্য ‘ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ প্রয়োজন হলেও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক গতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় আইনটি বর্তমান সরকারের শেষ অধিবেশনে পাশ হওয়া কথা ছিল।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সোমবার সচিবালয়ে আইনটি পাশ না হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে। কাজগুলো সম্পন্ন করে চূড়ান্ত করে যাবো। তবে আইনটি বর্তমান সরকারের সময়ে পাশ করা সম্ভব হবে না।’

অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে হতাশ বিনিয়োগকারীরা। তারা জানান, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ফিন্যান্সিয়াল রিপোটিং অ্যাক্ট অবশ্যই প্রয়োজন ছিল। এটি কার্যকর হলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের অনৈতিকতা কমে যেতো।

তাদের মতে, যেসব অডিটরস অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেন তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আইনটি পাশ না হওয়ায় অডিটরসরা পার পেয়ে গেলো।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ সাজিদ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট আন্তর্জাতিক ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) ও আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) পরিপালন করে স্বচ্ছ প্রতিবেদন তৈরি করবে। আর তার সত্যতা যাচাই করবে অডিটরস। এরপর ইস্যু ম্যানেজার তার উপর ভিত্তি করে দর নির্ধারণ করবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় সরকার ফিন্যান্সিয়াল রির্পোটিং অ্যাক্টের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকউন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।

আইসিএবি নিয়ন্ত্রক হওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোন অস্বচ্ছ প্রতিবেদনের জন্য কোন অডিটরসের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি বলে জানান সাজিদ হোসেন।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনেক কোম্পানির প্রতিবেদনে অনৈতিকতা পেয়েছে। কিন্তু ওই প্রতিবেদন যাচাই করা কোন অডিটরস শাস্তির আওতায় আসেনি। আইসিএবির দুর্বলতার কারণে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন।

তিনি প্রতিবেদনে স্বচ্ছতার জন্য আইসিএবিকে শক্তিশালী হওয়ার পরামর্শ দেন। অন্যথায় ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট দরকার বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী জানান, অনেক মনগড়া আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয় যা অডিটরসরা সত্যায়িত করেন। ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারে তারা অনৈতিকতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। আর এই ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্টের বিরোধীতা করেছেন।

আইসিএবি প্রস্তাবিত ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট এবং এর আওতায় ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারেও দ্বিমত পোষণ করে। তাদের মতে, প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হিসাব ও নিরীক্ষা পেশার স্বাধীনতা শুধু ক্ষুণ্নই নয়, হিসাব ও নিরীক্ষা পেশায় সাংঘর্ষিক ও অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। ফলে আর্থিক বিবরণী প্রস্তুত ও নিরীক্ষার কাজ বাধাগ্রস্ত হবে।

এর আগে, অর্থমন্ত্রী আইনটি বর্তমান সরকারের মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএ/এসবি/এমএআর/নভেম্বর ১২, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর