thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি 25, ৪ মাঘ ১৪৩১,  ১৮ রজব 1446

আইএমএফের প্রতিবেদন

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কমেছে রিজার্ভ

২০২৩ জুলাই ২০ ২০:৪৫:৩৮
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কমেছে রিজার্ভ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:মহামারি করোনার পর বৈশ্বিক মন্দায় বিশ্বের প্রায় সব দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। ফলে বেড়েছে ডলারের সংকট। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান কমেছে। ফলে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় নিত্যপন্যের দাম বেড়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে সংকট তৈরি হয়েছে। খাদ্যপণ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে বৈদেশিক খাত বিবেচনায় বেশিরভাগ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা দুর্বল অবস্থানে চলে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। তবে প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুতগতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

বুধবার (১৯ জুলাই) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে অধিকাংশ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে। যেসব দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি ছিল সেসব দেশ ঘাটতির বর্ডার লাইন পৌঁছেছে। বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে ওইসব দেশ অর্থনৈতিকভাবে সংকটে পড়েছে

আরো দেখা যায়, ২০২১-২০২২ সালে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপানসহ অনেক দেশের রিজার্ভ কমেছে। তবে বেড়েছে সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন ও তুরস্কের।

আরো দেখা যায়, দুর্বল অবস্থান রয়েছে আর্জেন্টিনা ও ইটালি। রিজার্ভ কমে দুর্বল হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চীন, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্পেন, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। মাঝারি অবস্থানে রয়েছে কানাডা, ফ্রান্স, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। আর শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে জার্মানি, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, থাইল্যান্ড ও সুইডেন। আর যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ভারত, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরব ।

আইএমএফ’র প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০২২ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৩৭৭ কোটি ডলার। ২০২১ সালে ছিল ৪৬১৫ কোটি ডলার। এক বছরের হিসাবে দেশের রিজার্ভ কমেছে ১২৩৮ কোটি ডলার। ২০২২ সালে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি ছিল ১৮৬৪ কোটি ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৯৯৭ কোটি ডলার। এ হিসাবে রিজার্ভ কমেছে ১৬১৮ কোটি ডলার।

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার রিজার্ভ ছিল ৫৮০০ কোটি ডলার, ২০২২ সালে তা কমে ৫৭০০ কোটি ডলারে নেমেছে। জিডিপির হিসাবে রিজার্ভ ৩.৫ শতাংশ থেকে কমে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

একই সময়ে কানাডার রিজার্ভ ১০ হাজার ৭০০ ডলারে অপরিবর্তিত রয়েছে। জিডিপির ৫.৩ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশ হয়েছে।

ইউরোপীয় অঞ্চলের দেশের মোট রিজার্ভ ২০২১ সালে ছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। ২০২২ সালে তা কমে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে নেমেছে। এদিকে জিডিপির হিসাবে রিজার্ভ ৮.২ শতাংশ বেড়ে ৮.৪ শতাংশ হয়েছে।

২০২১ সালে জাপানের রিজার্ভ ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। ২০২২ সালে তা কমে ১ লাখ ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। তবে জিডিপির হিসাবে ২৮.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। দেশটিতে গত বছর অর্থনৈতিক মন্দায় জিডিপির আকার কমায় রিজার্ভের অনুপাত বেড়েছে।

সিঙ্গাপুরের রিজার্ভ ৪২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার থেকে কমে ২৮ হাজার ৯০০ কোটি ডলার হয়েছে। এই সময়ে জিডিপির হিসাবে রিজার্ভের অনুপাত ১০০.৩ শতাংশ থেকে কমে ৬২ শতাংশ হয়েছে। দেশটি অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজমান।

সুইজারল্যান্ডের রিজার্ভ ১ লাখ ১১ হাজার থেকে কমে ৯২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ১৩৮.৮ শতাংশ থেকে কমে ১১১ শতাংশ হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের রিজার্ভ আলোচ্য সময়ে ১৯ হাজার ৪০০ কোটি ডলার থেকে কমে ১৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ৬.২ শতাংশ থেকে কমে ৫.৭ শতাংশ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ ২০২১ সালে ছিল ৭১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। গত বছর তা কমে ৭০ হাজার ৭০০ কোটি ডলার নেমেছে। জিডিপির হিসাবে ৩.১ শতাংশ থেকে কমে ২.৮ শতাংশ হয়েছে।

২০২১ সালে চীনের রিজার্ভ ছিল ৩ লাখ ৪২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। গত বছর তা ৩ লাখ ১২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে নেমেছে। জিডিপির হিসাবে ১৯.৩ থেকে কমে ১৭.৩ শতাংশ হয়েছে।

ভারতের রিজার্ভ একই সময়ে ৬৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার থেকে কমে ৫৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ২০.৩ শতাংশ থেকে কমে ১৬.৮ শতাংশ হয়েছে।

২০২১ সালে মালয়েশিয়ার রিজার্ভ ছিল ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। সেখান থেকে কমে ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে তা ৩১.৩ শতাংশ থেকে কমে ২৮.১ হয়েছে।

এদিকে রাশিয়ার রিজার্ভ ৬৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার থেকে কমে ৫৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে তা ৩৪.৪ শতাংশ থেকে কমে ২৬.৩ শতাংশ হয়েছে।

পাশাপাশি থাইল্যান্ডের রিজার্ভ একই সময়ে ২৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার থেকে কমে ২১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে নেমেছে। জিডিপির হিসাবে তা ৪৮.৭ শতাংশ থেকে কমে ৪০.৪ শতাংশ হয়েছে।

২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সৌদি আরবের রিজার্ভ ৪৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ৪৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। অবশ্য জিডিপির হিসাবে তা ৫৪.৬ শতাংশ থেকে কমে ৪৩.২ শতাংশ হয়েছে। ফলে জিডিপির অনুপাতে রিজার্ভ কমেছে।

তুরস্কের রিজার্ভ ১১ হাজার কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১২ হাজার ৯০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ১৩.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪.২ শতাংশ হয়েছে। একই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রিজার্ভ ৫৮০০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ৬১০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ১৩.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪.৯ শতাংশ হয়েছে।

অপরদিকে সুইডেনের রিজার্ভ ৬২০০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ৬৮০০ কোটি ডলার হয়েছে। জিডিপির হিসাবে ৯.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১.৫ শতাংশ হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর