thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মে 24, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৯ জিলকদ  1445

রাজনৈতিক শক্তি থাকলে কারসাজি করলে  শাস্তি হয় না: শারমীন রিনভী

২০২৩ আগস্ট ০৯ ১৫:৫০:৫৮
রাজনৈতিক শক্তি থাকলে কারসাজি করলে  শাস্তি হয় না: শারমীন রিনভী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:শেয়ারবাজারে বড় ধরনের কারসাজি করে ধরা খেয়ে, সামান্য শাস্তি বা জরিমানা দিয়ে সবাই বেরিয়ে আসছে। আবার কারসাজি যদি রাজনৈতিক শক্তি বা ক্ষমতাধর হয় তাহলে তাদের বেলায় সেই জরিমানাও হয় না। এসব কারনে শেয়ারাবাজারে কারসাজি থামানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ইকোনমিক রিপোর্টারস ফোরামের (ইআরএফ) সাবেক প্রেসিডেন্ট শারমীন রিনভী।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত `পুঁজিবাজারে নারী’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়েত উল ইসলাম। আর বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।

শারমীন রিনভী বলেন, বিশ্বের সব শেয়ারবাজারে কারসাজি হয়, উদিয়মান বাজারে একটু বেশী হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। বিশ্বে শেয়ারবাজারে যেকোন ধরনের কারসাজি তাদের রেগুরেটলরা কঠোর আইনে রোধ করে থাকে। অর্থদণ্ড ও শাস্তির আওতায় এনে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে রাখে। কিন্তু বাংলাদেশে কারসাজিতে দেখা যায় অন্যটি। শাস্তি ক্ষেত্রে জাতপাত বিবেচনা করে। রাজনৈতিক শক্তি বা ক্ষমতাধর হলে জরিমানা বা শাস্তি হয় না। আর তা না হলে শাস্তি হয়। যা হয় তাও সামান্য। এটা ঠিক না। এই বৃত্ত থেকে সংশ্লিষ্টদের বেরিয়ে আসার আহবান করেন।

আইন ভঙ্গের দায়ে ভারতের রিলায়েন্সের কর্ণধার অনিল আম্বানীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, অনিল আম্বানী শেয়ার লেনদেনের আইন অমান্য করার দায়ে ২০১১ সালে সেদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া জরিমানা আদায় করে ৫০ কোটি রুপি। একই সাথে এক বছরের জন্য শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ করে। কিন্তু আমাদের দেশে কেউ যদি কারসাজি করে ৫ কোটি টাকা আয় করে, সেটা ধরা খেলে তার অর্থদণ্ড হয় ৫০ লাখ টাকা। মানে ১০টি শেয়ার নিয়ে কারসাজি হলে জরিমানা হয়েছে ১টি শেয়ার কারসাজির জন্য। এজন্য দেশের কারসাজি থামানো যাচ্ছে না।

দেশের শেয়ারবাজার থেকে গত সাত বছরে নারী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৫৮ শতাংশ জানিয়ে তিনি বলেন, সিডিবিএলের তথ্য অনুসারে ২০১০ সালে নারী বিনিয়োগকারী ৮ লাখ ছাড়িয়েছিলো। সেই বছরের ডিসেম্বর মাসে বড় ধ্বস হয় শেয়ারবাজারে। এরপর লোকসান লাগাম টানতে না পারায় ২ লাখ বাজার ছেড়ে চলে যায়। ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর শেষে নারী বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা হয়েছিল ৮ লাখ ৬৫ হাজার ২৫০ জন। ২০১৭ সালে কমে ৭ লাখ ৯৬ হাজারে নেমে আসে। সেখান থেকে আরও কমে ২০১৮ সালে দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৩৩ হাজারে। পরে সামান্য বেড়ে ২০১৯ সালে দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৫৩ হাজারে। সেখান থেকে কমে ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছিল ৬ লাখ ৮৪ হাজারে। এরপর বেড়ে ২০২১ সালে ৬ লাখ ৮৭ হাজারে পৌচ্ছে। সেখান থেকে কমে ২০২২ সালে দাঁড়িয়েছিল ৫ লাখ ১৪ হাজারে। সবশেষে ২০২৩ সালের ৭ আগষ্ট পর্যন্ত নারী বিনিয়োগকারী দাঁড়ায় ৪ লাখ ২২ হাজার ৫১৬টি। গত সাত বছরে শেয়ারবাজারে নারী বিনিয়োগকারী কমেছে ৪ লাখ ৪৩ হাজার বা ৫৮ শতাংশ।

শেয়ারবাজারে নারীদের অংশগ্রহন অতি সামান্য জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২২ সালের জনশুমারীতে দেশে নারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জনে। আর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে নারীর অংশগ্রহণ শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ। এটা দিয়ে শক্তিধর শেয়ারবাজার করা যাবে না। শক্তিধর শেয়ারবাজারের জন্য নারীদের অংশগ্রন আরো অনেক বাড়াতে হবে।

শেয়ারবাজারে নারীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশী নারী, অন্যদিকে প্রকৃতিগতভাবেই নারীরা ধৈর্যশীল ও বাস্তববাদী। তাই শেয়ারবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে শুধু লিঙ্গ সমতা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে তা নয় সুসংহত, স্থিতিশীল ও দক্ষ শেয়ারবাজার সৃষ্টি হবে।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর