thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৪ মে 24, ২১ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৫ শাওয়াল 1445

যোগ্যতা ছাড়াই পদোন্নতি পেল বেরোবির শিক্ষক আসাদ।

২০২৩ সেপ্টেম্বর ২৭ ০০:৩৪:১২
যোগ্যতা ছাড়াই পদোন্নতি পেল বেরোবির শিক্ষক আসাদ।

দ্য রিপোর্ট প্রতি‌বেদক, রংপুর।

শর্ত অনুযায়ী যোগ্যতা অর্জন না করেও সহযোগী অধ্যাপক (গ্রেড-৪) এর শুন্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট এর ৯৮তম সভায় এই নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিয়োগ পাওয়ার পর তড়িঘরি করে সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনই উক্ত পদে যোগদান করেন আসাদ মন্ডল। তাঁর যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী।

জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে বিশ^বিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে দুই জন স্থায়ী সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। উক্ত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এ পদে আবেদনের শেষ দিন ছিল ২২ নভেম্বর, ২০২২। সহযোগী অধ্যাপক পদে আবেদনের যোগ্যতা চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও অন্যুন দ্বিতীয় শ্রেণীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রীসহ পিএইচডি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চার বছরসহ কমপক্ষে সাত বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা। এছাড়াও এমফিল ডিগ্রীধারীদের ক্ষেত্রে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছরসহ মোট ১০ বছরের শিক্ষকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

লোকপ্রশাসন বিভাগে দুইটি সহযোগী অধ্যাপকের শুন্য পদে চারজন প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে তিনজন একই বিভাগের শিক্ষক। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের পূর্বের নীতিমালা (বর্তমানে অভিন্ন নীতিমালা কার্যকর) অনুযায়ী উক্ত শিক্ষকবৃন্দের কেউই সহযোগী অধ্যাপকের শুন্য পদে আবেদনের যোগ্য নন। তবে অভ্যন্তরীণ শিক্ষকবৃন্দের পদ আপগ্রেডেশন নীতিমালা (পুরাতন) অনুযায়ী শুধুমাত্র জুবায়ের ইবনে তাহের সহযোগী অধ্যাপক পদে আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।

প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অপর দুই শিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ এর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ০৮ বছর ০১ মাস ০৯ দিন এবং সাব্বীর আহমেদ চৌধুরীর মোট চাকুরিকাল ০৮ বছর ০১ মাস ০৮ দিন ছিল। তাদের দুজনের কারোরই পিএইচডি কিংবা এমফিল ডিগ্রী না থাকায় শিক্ষকতার এই অভিজ্ঞতায় কেউই সহযোগী অধ্যাপক পদে আবেদনের জন্য যোগ্য ছিলেন না। শুন্য পদে আবেদন করা অপর প্রার্থী ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ রুহুল আমিন। নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্যতা না থাকলেও অভ্যন্তরীণ প্রার্থী হিসেবে একটি শর্ত শিথিল দেখিয়ে একাডেমিক ডিগ্রী (পিএইচডি/এমফিল) শিথিল করে সবাইকে নিয়োগ বোর্ডের জন্য যোগ্য ঘোষণা করে গত ১৩/০৭/২০২৩ তারিখে বাছাই বোর্ড সম্পন্ন করা হয় এবং প্রার্থীদের মধ্যে আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ এবং জুবায়ের ইবনে তাহের উপস্থিত হলেও বাকি দুই প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেননি। এর ফলে যোগ্যতা না থাকলেও মাত্র ০৮ বছরএক মাসের চাকুরির অভিজ্ঞতায় আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদসহ অপর প্রার্থী জুবায়ের ইবনে তাহেরকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

কিন্তু গত ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে সিন্ডিকেট এর ৯৬তম সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে প্রার্থীর যোগ্যতা না থাকায় বোর্ডের সুপারিশ অনুমোদিত হয় নি। ওই সভার আলোচ্যসূচি-০৫ এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সুপারিশটি পুনরায় বাছাই বোর্ডে প্রেরণ করা হয়। এ অবস্থায় বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়, রংপুর আইন-২০০৯ এর প্রথম সংবিধি ৫(৪) ধারা অনুযায়ী বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য বোর্ডের মাধ্যমে চ্যান্সেলরের কাছে প্রেরণ করার নিয়ম কিন্ত তা না করে গত ২৩/০৯/২০২৩ তারিখে বাছাই বোর্ডের মাধ্যমে আবারও যোগ্যতাহীন প্রার্থী আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদকে শুন্য পদে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করেন উপাচার্য। যা ২৪/০৯/২০২৩ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট এর ৯৮তম সভায় অনুমোদন করিয়ে নেন তিনি।

।অযোগ্য এই প্রার্থীকে কোন ডিগ্রী ছাড়াই মাত্র ০৮ বছর এক মাসের চাকরির অভিজ্ঞতায় সহযোগী অধ্যাপক (গ্রেড-৪) পদে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান না করার জন্য গত ২৩/০৯/২০২৩ তারিখে সিন্ডিকেট সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বরাবর চিঠি দিয়েছিলেন বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান।

তিনি তাঁর অভিযোগ পত্রে বলেছিলেন, এই অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকের সিনিয়রিটি লঙ্ঘণ হবে এবং তারা ন্যয্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। কিন্তু সেটিতে কর্ণপাত করেন নি উপাচার্য।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হয়েও যোগ্যতা ছাড়াই নিয়োগ পেতে কেন আবেদন করেছেন জানতে চাইলো আসাদুজ্জামান মন্ডল বলেন, আমি প্রার্থী হিসেবে আবেদন করতেই পারি, কেন নিয়োগ দিয়েছে বাছাইবোর্ডকে জিজ্ঞেস করেন। এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।

বিশবিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এখানে কোন অনিয়ম হয় নি। আইন অনুযায়ী বাছাইবোর্ড কাউকে সুপারিশ করতেই পারে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. হাসিবুর রহমান বলেন, সিন্ডিকেট কমিটির সুপারিশক্রমে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

এএইচ/এসকে/দ্যরিপোর্টটুয়েন্টিফোরডটকম।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর