thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

সহিংস হামলা থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করতে সরকারের প্রতি আহবান জাতিসংঘের

২০২৪ জুলাই ১৭ ১২:০৪:৩৬
সহিংস হামলা থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করতে সরকারের প্রতি আহবান জাতিসংঘের

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, আন্দোলনকে ঘিরে বাংলাদেশে চলমান ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত রয়েছে।

এছাড়া সহিংস হামলা থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি। জাতিসংঘ আরও বলেছে, মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার আছে এবং সরকারকে সেই অধিকার রক্ষা করতে হবে।

একইসঙ্গে বাংলাদেশে চলমান ঘটনাপ্রবাহ জাতিসংঘ উদ্বেগের সাথে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এসব মন্তব্য করেন।

এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে তথাকথিত কোটা পদ্ধতির পরিবর্তে মেধাভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলছে। সরকারের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নিরাপত্তা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিক্ষোভে হামলায় ছয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব কি এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন?

জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, হ্যাঁ। আমরা (বাংলাদেশে চলমান) পরিস্থিতি সম্পর্কে খুব ভালো ভাবে অবগত আছি। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে এবং উদ্বেগের সাথে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি- বাংলাদেশে হোক বা বিশ্বের অন্য কোথাও, মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার রয়েছে এবং যেকোনও ধরনের হুমকি বা সহিংসতা থেকে বিক্ষোভকারীদের রক্ষা করার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। বিশেষ করে যুবক বা শিশু বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মতো যাদের যাদের অতিরিক্ত সুরক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, যেন তারা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে পারে।

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে প্রদর্শন করতে পারা একটি মৌলিক মানবাধিকার এবং সরকারের উচিত সেই অধিকারগুলোকে রক্ষা করা।

উল্লেখ্য, রোববার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাতে প্রথমে রোকেয়া হলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে আসেন। তারা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিক্ষোভ শেষে হলে ফিরে যান তারা।

এরপর গত সোমবার দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলা সংঘর্ষে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং সারা দেশের সব পর্যায়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর