thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ১২ মে 25, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২,  ১৪ জিলকদ  1446

ব্যাংকের তহবিল প্রতারণায় দায়ী হবেন এমডি-চেয়ারম্যানও, অধ্যাদেশ জারি

২০২৫ মে ১২ ১৪:০৯:১৩
ব্যাংকের তহবিল প্রতারণায় দায়ী হবেন এমডি-চেয়ারম্যানও, অধ্যাদেশ জারি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:আর্থিক খাতের দুর্নীতি দমনে ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ জারি করেছে সরকার। এ অধ্যাদেশের ফলে ব্যাংকের তহবিল প্রতারণায় এমডি-চেয়ারম্যানও দায়ী হবেন।

নতুন এই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যেকোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নেওয়া যাবে।

এতে বলা হয়, তফসিলি কোনো ব্যাংকের তহবিল প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহারে দায়ী হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তি যেই হোক— তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিংবা ঋণের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেক স্তরের কর্মকর্তারাও দায়ী হবেন। এরূপ ব্যক্তিদের প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহৃত বা অপব্যবহৃত ব্যাংকের সম্পদ বা তহবিল সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পরিশোধ করতে হবে। যদি পরিশোধ না করেন— তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

এমন ধারা যুক্ত করে শুক্রবার ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন করেছিল উপদেষ্টা পরিষদ।

ব্যাংক খাত সংকট ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল নামে, সাত সদস্যের আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছে অধ্যাদেশে। উপদেষ্টা পরিষদ ছয় সদস্যের সংস্থা গঠনের কথা বললেও পরে এক সদস্য বাড়ানো হয়েছে। এই কাউন্সিল সংকট ব্যবস্থাপনা কৌশল ও আপৎকালীন বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করবে।

কাউন্সিলের প্রধান হবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন অর্থসচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক সচিব, রেজুল্যুশনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্নর ও গভর্নরের মনোনীত আরেকজন ডেপুটি গভর্নরকে রাখা হয়েছে। প্রতি তিন মাসে কাউন্সিল একটি করে সভা করবে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের সুবিধাভোগী মালিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যাংকের সম্পদ বা তহবিল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করলে ও প্রতারণামূলকভাবে অন্যের স্বার্থে ব্যবহার করলে, বাংলাদেশ ব্যাংক ওই ব্যাংককে রেজুল্যুশন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে দুর্বল যেকোনো ব্যাংকে অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অধ্যাদেশে এমন ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ওই ব্যাংকের বিদ্যমান শেয়ারধারী বা নতুন শেয়ারধারীদের মাধ্যমে মূলধন বাড়াতে পারবে। ব্যাংকের শেয়ার, সম্পদ ও দায় তৃতীয় পক্ষের কাছে হস্তান্তর করার সুযোগ থাকছে এ অধ্যাদেশে।

অধ্যাদেশে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি মনে করে, কোনো ব্যাংক আর কার্যকর নয় বা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই, দেউলিয়া হয়ে গেছে বা দেউলিয়া হওয়ার পথে, আমানতকারীদের পাওনা দিতে পারছে না, বা না দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন এ ধরনের ব্যাংকের ভালো করার স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অধ্যাদেশটি পাস হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক এখন আলাদা বিভাগ গঠন করবে, অধ্যাদেশেই একথা বলা রয়েছে।

ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও কার্যকর পরিচালনা অব্যাহত রাখতে এক বা একাধিক ব্রিজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার সুযোগও থাকছে এ অধ্যাদেশে। পরে সেগুলো তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রিও করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো দুর্বল ব্যাংকের সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করতে পারবে। দুর্বল বা দেউলিয়া হওয়া ব্যাংকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে পরিচালনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ব্যাংক হলো ব্রিজ ব্যাংক।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল করা হলে- বাংলাদেশ ব্যাংক তার অবসায়নের জন্য আদালতে আবেদন করবে। আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোনীত কাউকে অবসায়ক নিয়োগ দেবে। অবসায়ন আদেশ কার্যকর হওয়ার পর কোনো ব্যাংকের দায়ের ওপর সুদ বা অন্য কোনো মাশুল কার্যকর হবে না।

আবার কোনো ব্যাংক নিজে থেকেও অবসায়নের প্রক্রিয়ায় যেতে পারবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে না। নতুন এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী লাইসেন্স প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমানতও দুই মাসের মধ্যে অন্যান্য দায় পরিশোধ করতে হবে।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর