thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মে 25, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২,  ১৮ জিলকদ  1446

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে বাধা কোথায়: নজরুল ইসলাম খান

২০২৫ মে ১৬ ২০:১৪:১৯
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে বাধা কোথায়: নজরুল ইসলাম খান

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নানা মহলে নানা আলোচনা চলছে। আলোচনার বিস্তারে না গিয়ে আমরা শুধু এতটুকুই বলব যে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হোক।

যারা এর বিরোধিতা করছেন, তারা শুধু বলুন, কোনো যুক্তিতে ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন হওয়া উচিত? কারণটা কী?

শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে মাওলানা মতিনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে গত আগস্টে ঘোষিত এক দফার একটি পর্যায় এরই মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এখন মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের দাবির অবশিষ্ট অংশ পূরণের আশায়। দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। অনেক তরুণ আছেন, যাদের বয়স কম, কিন্তু ভোটার হয়েছেন অনেকদিন আগে তবুও আজ পর্যন্ত তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। তারা সেই অধিকার প্রয়োগ করতে চায়, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজেদের মতামত জানাতে চায়। এটি তাদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক অধিকার। এ অধিকার অর্জনের জন্যই হাজার হাজার মানুষ কারারুদ্ধ হয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

তিনি বলেন, কারো দল গোছানোর জন্য সময় দরকার, কারো বন্ধু জোগাড় করার জন্য সময় দরকার। কিন্তু তার জন্য জনগণের ভোট দেওয়ার যে মৌলিক মানবাধিকার বিলম্বিত হবে এটা হতে পারে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যেই বলেছে, তারা জুন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো অসুবিধাই থাকার কথা নয়। অনেকে বলছেন, আগে সংস্কার করতে হবে। তাহলে প্রশ্ন আসে, আপনারা কবে থেকে সংস্কারের কথা বলছেন? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তো ১৯৭৬-৭৭ সালেই ১৯ দফা সংস্কার কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে অত্যন্ত সুবিন্যস্ত ২০৩০ ভিশন দিয়েছিলেন, যা ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা। এরপর ২০২২ সালে তারেক রহমান ২৭ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেটি সমৃদ্ধ করে, আন্দোলনে যুক্ত সবার অংশগ্রহণে ২০২৩ সালে আমরা ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের কর্মসূচি ঘোষণা করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংস্কারের বিপক্ষে নই, আমরা পরিপূর্ণভাবে সংস্কারের পক্ষে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে সংস্কার কী একবারেই সম্পন্ন করার বিষয়? পরিবর্তনের দুটি পথ—একটি বিপ্লব, অন্যটি সংস্কার। বৈপ্লবিক পরিবর্তন দ্রুত ঘটে যায়, আর সংস্কার হয় একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, সবার সম্মতিতে—বিশেষ করে যারা স্টেকহোল্ডার।

তিনি বলেন, অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, মে মাসের মধ্যেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে—যে কোন কোন প্রস্তাবে সব দল একমত এবং কোন কোন প্রস্তাবে ভিন্নমত রয়েছে। যদি মে মাসের মধ্যেই এ বোঝাপড়া স্পষ্ট হয়ে যায়, তাহলে জুন মাসের মধ্যেই তা সংকলন করে একটি সনদ হিসেবে তৈরি করা সম্ভব—যাতে সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করবে, একমত হবে। যেসব সংস্কার তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব, তা আইনের বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে কার্যকর হবে; যেগুলোর জন্য সংবিধান পরিবর্তন দরকার, তা নির্বাচিত সংসদে হবে। এ কাজ যদি জুনের মধ্যেও সম্ভব না হয়, জুলাইয়ের মধ্যেও হতে পারে। তাহলে প্রশ্ন হলো—ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাধাটা কোথায়?

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান ইরান ও মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর