thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউস সানি 1446

দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বেড়েছে

২০১৩ নভেম্বর ১৭ ২১:২৯:০৭
দেশে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বেড়েছে

দিরিপোর্ট প্রতিবেদক : গত এক দশকে অর্থনৈতিক ইউনিটের (ক্ষেত্র) হার বেড়েছে। এ হার দাঁড়িয়েছে ১১৮ শতাংশ। বর্তমানে শুমারিকালীন মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের সংখ্যা ৮০ লাখ ৭৫ হাজার ৭০৪। ২০০১-২০০৩ সালের শুমারিতে এ সংখ্যা ছিল ৩৭ লাখ ৮ হাজার ১৪৪ এবং ১৯৯৬ সালের শুমারিতে ছিল ২১ লাখ ৬৯ হাজার ৪১৯।

এ ক্ষেত্রে ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০১-২০০৩ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক ইউনিট বাড়ার হার ছিল ৭১ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো অর্থনৈতিক শুমারির প্রাথমিক ফলাফলে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রবিবার বিকেলে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

বিবিএস ভবনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকার। প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ আব্দুস সামাদ।

অনুষ্ঠানে আবুল মাল আবদুর মুহিত বলেন, ‘আমাদের তথ্য সরবরাহের ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নতমানের। সেবা খাতের প্রসার হচ্ছে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিশেষ নজর দিতে হবে।’

দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে মাইলফলক ছুঁয়েছে। যা কয়েক বছর আগে কল্পনাও করা যেত না। অর্থনৈতিক শুমারির ফল প্রমাণ করেছে কৃষির বাইরে এসে বাংলাদেশ মিশ্র অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। এটি সরকারের শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির নির্দেশক।’

মসিউর রহমান বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের পরিসংখ্যানের মান একেবারেই খারাপ নয়।’

আবদুস সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা দ্রুত দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভাঙ্গতে পেরেছি। চরাঞ্চলের মঙ্গা এখন আর নেই।’

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নজিবুর রহমান ও বিবিএসের মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আঞ্চলিক বৈষম্য এখনো বিদ্যমান : প্রাথমিক ফলাফল থেকে দেখা গেছে, বিভাগীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক ইউনিট পরিলক্ষিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম সিলেটে।

আঞ্চলিক পর্যায়ে ব্যবসা ও শিল্পায়নে ভারসাম্যপূর্ণ অগ্রগতি : ব্যবসা ও শিল্পায়নের ক্ষেএে সামঞ্জস্যপূর্ণ অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা শক্তিশালী ঊর্ধ্বগামী প্রবণতার সঙ্গে স্থায়ীভাবে অর্থনৈতিক ইউনিট সর্বোচ্চ সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা ১৯৮৬ সালে ছিল ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৭৯৯, যা ২০০১ ও ২০০৩ সালে বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৩৮ এবং ২০১৩ সালে ২৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৩ হয়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানিকীকরণের দিকে যাচ্ছে: এ ক্ষেত্রে বলা যায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সময়ের ব্যবধানে বাড়ছে। ১৯৮৬ সালে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯, যা ২০০১ ও ২০০৩ সালে বেড়ে ২৯ লাখ ৯১ হাজার ২৩৮ এবং ২০১৩ সালে ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬ হয়েছে।

দেশের উত্তরাঞ্চলে উচ্চমাত্রার প্রবৃদ্ধি গ্রামীণ অর্থনীতিকে বিকশিত করেছে: শুমারির প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, ২০০১ ও ২০০৩ সালের চেয়ে ২০১৩ সালে পল্লী এলাকায় শহর এলাকার তুলনায় প্রবৃদ্ধি বাড়ার হার উল্লেখযোগ্য। এ হার পল্লী এলাকায় ১৫০ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ৬২ দশমিক ৯০ শতাংশ।

অর্থনৈতিক ইউনিট বাড়াতে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহের অগ্রণীভূমিকা: এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, সেবা খাতের মধ্যে মোটরগাড়ি এবং মোটরসাইকেল মেরামতসহ খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা সর্বোচ্চ ৪৫ দশমিক ৯১ শতাংশ স্থান দখল করে আছে। পরিবহন এবং মজুদ ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অপরপক্ষে উৎপাদন ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং অন্যান্য সেবা কার্যক্রম ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অধিকাংশ উপখাতের অংশ ৫ শতাংশের নিচে এবং কিছু উপখাত শতকরা ১ ভাগেরও নিচে।

প্রতি দশ বছর পর পর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।

এ বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশের মানুষের কৃষিবহির্ভূত আর্থসামাজিক অবস্থা জানতে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন জরিপ পরিচালনা করে আসছে বিবিএস। এর মধ্যে অর্থনৈতিক শুমারি অন্যতম।’

বিবিএস সূত্র জানায়, দশ বছরের ধারাবাহিকতা অনুসারে চলতি বছর তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য প্রকাশ করা হলো। চলতি বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত দুইপর্বে এ শুমারি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর আগে ১৯৮৬ সালে প্রথমবার কৃষিবহির্ভূত অর্থনৈতিক শুমারি করা হয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় শুমারিতে প্রথম পর্বে ২০০১ সালে শহর এলাকায় আর দ্বিতীয় পর্ব ২০০৩ সালে পল্লী এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

(দিরিপোর্ট/জেজে/এনডিএস/এমডি/নভেম্বর ১৭,২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর