thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১,  ২০ মহররম 1446

অস্ত্র জমার নির্দেশনা নেই ইসি’র!

২০১৩ ডিসেম্বর ০২ ১২:৩০:৩৮
অস্ত্র জমার নির্দেশনা নেই ইসি’র!

কাজী জামশেদ নাজিম, দ্য রিপোর্ট : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো বৈধ অস্ত্র জমার নিদের্শনা দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও তেমন তৎপরতা নেই। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্ত্র উদ্ধারে ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালনা করলেও এবার এখনো তা করা হয়নি।

জানা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুই দফায় বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বৈধ অস্ত্র ফিরিয়ে নিতে নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেয়। একইসঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ‘বিশেষ অভিযানে’র ঘোষণা আসে। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও পেশী শক্তির ব্যবহার বন্ধের জন্যই নির্বাচন কমিশন থেকে বৈধ অস্ত্র জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে হরতাল-অবরোধে সহিংস ঘটনা ঘটছে। এরপরও অস্ত্র উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক হয়। সেখানে বৈধ-অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ রবিবার দ্য রিপোর্টকে বলেন, বৈধ অস্ত্র থানায় জমা দেওয়ার নির্দেশনা এখনো দেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশন সচিব এ বিষয়টি দেখছেন।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈধ অস্ত্র জমা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশনা দেওয়া হয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশন অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য পুলিশের মাধ্যমে নিদের্শনা দিয়েছিল। তফসিল ঘোষণার পরেই অস্ত্র জমার নির্দেশনা হিসেবে পরিপত্র জারি করা উচিত।

সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। প্রতিনিয়তই সহিংস ঘটনা ঘটছে। দলীয় মনোনয়ন নিয়েও বিরোধ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া উচিত। পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের খাতায় বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা তিন লাখ। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের নামে রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩২৯টি। রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তির রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯১৮টি। বৈধ এ অস্ত্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল ২০০৫ সালে। এই তথ্য আপডেট করেনি সরকার বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর ছিল অস্ত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সবাই অস্ত্র জমা না দেওয়ায় ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক লাখ ২৩ হাজার ৫৯২টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়ে। ওই সময় দেশে লাইসেন্স করা অস্ত্রের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৮০টি। জমা না পড়া অস্ত্রের সংখ্যা ৫০ হাজার ৭৮৮টি। তখন সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে বলা হয়েছিল, ৫২ হাজার লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা পড়েনি। ২০০৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর ডিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার নাঈম আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জমা না পড়া এসব অস্ত্র এখন অবৈধ।

বৈধ-অবৈধ অস্ত্র জমা বা উদ্ধার বিষয়ে এখনো কোনো নিদের্শনা পায়নি পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আশরাফুজ্জামান দ্য রিপোর্টকে বলেন, বৈধ অস্ত্র জমার নির্দেশনা এখনো আসেনি। অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে পুলিশ সব সময় অভিযান পরিচালনা করে। এটা রুটিন ওয়ার্ক। জাতীয় সংসদ নির্বাচকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোনো নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি।

পুলিশ সদর দফতরের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, তফসিল ঘোষণার পর অস্ত্র জমার নির্দেশনা আসে নির্বাচন কমিশন থেকে। নির্দেশনা এলেই পুলিশের রেঞ্জ অফিস, মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ সুপারকে কপি পাঠানো হবে।

(দ্য রিপোর্ট/কেজেএন/এসবি/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০২, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর