thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

দুই নেত্রীর দিকেই তাকিয়ে দেশবাসী

২০১৩ ডিসেম্বর ০৫ ২০:৫৫:১৯
দুই নেত্রীর দিকেই তাকিয়ে দেশবাসী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাংলাদেশে গণতন্ত্র ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে। তাই আগামী মাসে ‍একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা খুবই জরুরি। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বুধবার এমনটিই দাবি করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওই দৈনিকে ‘টু লিডারস’ এনমিটি স্ট্রোকস কনসার্ন ওভার ভোট ইন ফ্র্যাজাইল ডেমোক্রেসি -শীর্ষক এক নিবন্ধে এ কথা বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে মধ্যস্থতা করতে এ সপ্তাহেই ভারত(ইতোমধ্যেই দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করছেন), যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে আরও অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। ফলে বিরোধী দল আরেক দফা নির্বাচনের দাবিতে আবারও রাজপথে আন্দোলন শুরু করতে পারে। যা দেশটিতে সেনা শাসনের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। আর সেনাবাহিনী এ সময় জাতীয় স্থিতিশীলতা কথা বলে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে।

এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার ব্যাপারে চেষ্টা করেছেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে বিসওয়াল বলেন, ‘আমরা মনে করি এখন একটা আলোচনা হওয়া খুবই জরুরি। দলগুলোকে আলোচনায় বসে তাদের মধ্যকার দূরুত্ব কমিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করতে হবে।’

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে বলা হয়, দেশটিতে শক্তিশালী এবং বিষাক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নির্বাচনে উদ্বেগজনক ফলাফল আসতে পারে। যদি দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হয় এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে আওয়ামী লীগ নিশ্চিতভাবেই নির্বাচনে জয়লাভ করবে। কিন্তু এই ফলাফল মানুষ বৈধ বলে মেনে নেবে কি না সে বিষয়ে খুব কমই নিশ্চয়তা রয়েছে। তবে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বিষয়টিকে বৈধতা দিতে পারে। কারণ নির্বাচনে যদি অর্ধেকের বেশি মানুষ ভোট দেয় তাহলে হাসিনা তার পক্ষে জনগণের সমর্থন রয়েছে এমনটা জোরালোভাবেই দাবি করতে পারবেন।তবে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশে নির্বাচনে ধর্মের একটি ভূমিকা রয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা যেখানে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করেন, অন্যদিকে খালেদা বরাবরই ইসলামকে রক্ষার কথা বলেছেন। তবে দরিদ্র এ দেশে স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও।

এদিকে দেশটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, দেশটির সবচেয়ে বড় ইসলামি দলের কয়েকজন নেতার ‍বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। যার ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ট্রাইব্যুনালে ত্রুটি আছে উল্লেখ করে এটির সমালোচনা করেছে। আর জামায়াত দাবি করেছে এই বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আবার গত আগস্টে দলটিকে্ হাইকোর্ট নিষিদ্ধ করলে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

তবে অব্যাহত রাজনৈতিক সহিংসতা দেশটির অর্থনীতির ক্ষতি করছে। গত সপ্তাহে বিরোধীদের বিক্ষোভ চলাকালে একটি বাসে আগুন দিলে একজন নিহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা রাজনৈতিক সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছে। কেননা সহিংসতার কারণে তাদের কারখানা এবং অন্যান্য ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। দেশটির গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন, অবরোধের কারণে তারা সময়মতো পণ্য পাঠাতে পারছে না এবং যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভীত করে তুলতে পারে।

তবুও শেষ পর্যন্ত ‘দুই নারীর’ দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে। তারা অতীতের তিক্ত ইতিহাস ভুলে আগামী ৫ জানুয়ারি একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে পথ খুঁজে পেতে পারেন কি না।

(দ্য রিপোর্ট/আদসি/এনডিএস/ডিসেম্বর ০৫,২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর