thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৭ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

`মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না’

২০১৩ ডিসেম্বর ০৬ ১৯:০১:৫৮
`মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, শহীদদের রক্ত ও ১৬ কোটি মানুষের দোহাই, আপনি দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবেন না। আপনি মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তিন দল আয়োজিত শুক্রবার বিকেলে সাদা পতাকা ও শান্তি সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আয়োজিত সমাবেশের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবেদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার স্বরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আ স ম আবদুর রব বলেন, এ ডিসেম্বর মাসেই আমরা রক্ত দিয়ে দেশকে হানাদার মুক্ত করেছিলাম। আর এ বিজয়ের মাসে আমরা আবার দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। আজকের পরিস্থিতি দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের মানুষের চেতনাকে উপেক্ষা, গণতন্ত্রের চেতনাকে উপেক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উপেক্ষা করার ফলেই বর্তমানে এ অবস্থা।

তিনি বলেন, শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খাকে উপেক্ষা করা নিন্দনীয়। বর্তমান সরকার এককেন্দ্রীয় ক্ষমতায়নের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করার প্রক্রিয়া অনেক দিন ধরে চলছে।

ডাকসুর এই সাবেক নেতা বলেন, আমরাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করি। এই জোট অচিরেই আত্মপ্রকাশ করবে। মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রকে মুখোমুখি করে বর্তমান সরকার দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই গণতন্ত্রের চেতনা।

সাবেক বিরোধী দলের এই নেতা বলেন, সরকার সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কথা বলে একদলীয় নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতবদ্ধ। জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলনই সংবিধান। জনগণের আকাঙ্খাকে তোয়াক্কা না করে ১৫তম সংশোধনী আনাই বর্তমান সংকটের মূল উৎস। গণতান্ত্রিক চেতনাকে উপেক্ষা করে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এই সংশোধনী।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নে আপনারই যুক্তি এবং সে অবস্থা এখনও বিদ্যমান। প্রধানমন্ত্রী আপনি নিজেই বলেছেন, দেশের জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে আপনি প্রস্তুত। আপনি আপনার কথা রাখুন। পদত্যাগ করুন, পার্লামেন্ট বাতিল করুন।

রব বলেন, বিরোধী দলের অবরোধ এবং হরতালের সময় নীরিহ মানুষের দুর্ভোগ এবং জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি আমরা সমর্থন করি না। কিন্তু সরকার শান্তিপূর্ণ মিছিল-মিটিং-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিরোধী দলের রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রেফতার নিন্দনীয়। অপরাধীকে গ্রেপ্তার করুন, একই সঙ্গে রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করুন।

তিনি আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বহির্বিশ্বের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের অভিমত ব্যক্ত করে আরো বলেন, অস্থিতিশীল বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব। এ কারণে অর্থনৈতিক অবরোধের মুখে পড়তে পারে দেশ। ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ জারি আছে। বর্তমান সরকারের অসহনশীল মনোভাবের কারণে দেশের ১৬ কোটি মানুষ এই বিপর্যয়ের মুখোমুখি। আমরা সকলের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাই। শুধু দলীয় ক্ষমতায়নের জন্য একপক্ষীয় পররাষ্ট্রনীতি দেশের স্বার্থবিরোধী।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীর প্রতীক, এম এ গোফরান, আতাউল করিম ফারুক, মো. সিরাজ মিয়া, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, ইকবাল সিদ্দিকী, কাজী শহীদ প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এমএআর/ডিসেম্বর ৬, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর