thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউস সানি 1446

‘হাসিনার বক্তব্য ধোয়াচ্ছন্ন, খালেদার বাস্তবসম্মত’

২০১৩ অক্টোবর ২৩ ১৯:২৮:১৯ ০০০০ 00 ০০ ০০:০০:০০
‘হাসিনার বক্তব্য ধোয়াচ্ছন্ন, খালেদার বাস্তবসম্মত’
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে অস্পষ্ট ও ধোয়াচ্ছন্ন বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। একইসঙ্গে বিরোধী দলীয় নেত্রী নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে যে রূপরেখা প্রস্তাব করেছেন তা স্পষ্ট, গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত বলেও মনে করেন তিনি।

বুধবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বিকল্পধারা বাংলাদেশের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘দুই নেত্রীর প্রস্তাব বিপরীতমূখী হলেও তা সংলাপের পথ উন্মুক্ত করেছে। এই দুই প্রস্তাবকে সামনে রেখে সংকটময় পরিস্থিতির সমাধান করা সম্ভব।’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বি. চৌধুরী বলেন, ‘দেশে সংকটময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। দেশ যখন একটি নির্বাচনের সামনে তখন আমাদের মতো দেশের জনগণও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর চাই। যাতে করে কোন অরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করতে না পারে।’

তিনি বলেন,‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা পেশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও ধ্যানধারণা থেকে দিয়েছেন। কিন্তু তার বক্তব্যে বেশ কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন সে বিষয়ে তিনি কিছু স্পষ্ট করে বলেননি। অবশ্য পরবর্তীতে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আরো অস্পষ্টতার বিষয় হলো সর্বদলীয় এই সরকারের কেবিনেটের আকার এবং কেবিনেটে কোন দলের কতজন প্রতিনিধি থাকবেন তা বলেননি। এমনকি নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য তারিখও তিনি উল্লেখ করেননি।’

বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের তুলনায় বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রস্তাব বাস্তব ও স্পষ্ট। তার প্রস্তাবে তিনটি দুর্বল দিক আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তারপরও তার স্পষ্টতা ও নিরপেক্ষতার বিচারে বিকল্পধারা বাংলাদেশ মনে করে প্রস্তাবটি আলোচনাযোগ্য এবং আলোচনার টেবিলে এটি উত্থাপন করা যায়। নীতিগতভাবে বিকল্পধারা বিরোধী দলীয় নেত্রীর এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছে।’

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ‘বিরোধী দলীয় নেতার প্রস্তাব অনুযায়ী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২০ জন উপদেষ্টার মধ্যে কয়েকজন মারা গেছেন, কেউ কেউ অসুস্থ আবার বেশ কয়েকজন দায়িত্ব নিতে রাজি নন। এক্ষেত্রে যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার সংখ্যা ১০ জন পূর্ণ না হয় সেক্ষেত্রে কি করা হবে সে বিষয়ে বিরোধী দলীয় নেতার প্রস্তাবে কিছু নেই। আর এমন অবস্থায় আমরা প্রস্তাব করছি, যদি ১০ জন উপদেষ্টার পদ পূরণ না হয় সেক্ষেত্রে ১৪ দলীয় জোট ও ১৮ দলীয় জোটের বাইরে যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে যেমন জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাসদ, সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরীক ঐক্য এবং বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শূণ্য উপদেষ্টা পদে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের নির্বাচন করবেন।’

প্রধান উপদেষ্টা বা নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান নির্বাচন নিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী যদি প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচনে ঐক্যমতে পৌঁছাতে না পারেন সেক্ষেত্রে কেবিনেটের দশজন উপদেষ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে সরকার প্রধান হিসেবে নির্বাচন করবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বি. চৌধুরী বিরোধী দলীয় নেতার এই প্রস্তাবকে আগামী নির্বাচনের জন্য একটি অস্থায়ী সমাধান উল্লেখ করে বলেন, ‘এবারের নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলীয় নেতার প্রস্তাব নিয়ে সংলাপ করা যেতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে সে ব্যাপারে বিকল্পধারার একটি প্রস্তাবনা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও দূর্নীতি দমনে নির্দলীয় ও অরাজনৈতিক নাগরিক সমাজ যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। এ অবস্থা আমরা প্রস্তাব করছি বাংলাদেশের যথাসম্ভব সকল পেশাজীবীদের মধ্য থেকে নূন্যতম প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্ধারিত মেয়াদের জন্য স্থায়ীভাবে একটি জাতীয় নাগরিক কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে। যে কাউন্সিল নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও দূর্নীতি দমন কমিশনের সকল কর্মকাণ্ড তত্ত্বাবধায়ন করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/এমডি/অক্টোবর ২৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর