thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউস সানি 1446

বৃহস্পতিবার না হলে আগামী বছর

২০১৩ ডিসেম্বর ১১ ২৩:০৭:৩৩
বৃহস্পতিবার না হলে আগামী বছর

জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি বৃহস্পতিবারের মধ্যে না হলে আগামী বছর পর্যন্ত তার ফাঁসির রায় কার্যকরের বিষয়টি ঝুলে যেতে পারে। এমনটাই মনে করছেন অনেকে।

বুধবার রিভিউ আবেদনের শুনানিকালে খোদ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

শুনানির জন্য ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দুইদিনের সময় চাইলে, মাহবুবে আলম বলেন, ‘এই মামলায় রিভিউ চলে না। আসামিপক্ষকে দুইদিন সময় দেওয়া হলে রায় বাস্তবায়ন কার্যত আগামী বছর পর্যন্ত ঝুলে যাবে।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হবে কি হবে না এ ব্যাপারে রিভিউ আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে ‍শুনানি হবে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবারই আপিল বিভাগের শেষ কার্যদিবস। এরপর সাপ্তাহিক বন্ধ ও বিজয় দিবসের ছুটিসহ শুরু হবে শীতকালীন অবকাশ। আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে আদালত। এ সময় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি বসলেও নিয়মিত কোনো আদালত বসবে না।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সমন্বয়কারী এমকে রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আশা করি কালকের (বৃহস্পতিবার) মধ্যেই বিষয়টির সমাধান হবে। তা না হলে কি হয় দেখা যাবে। নিয়মিত আদালত না বসলেও স্পেশাল বেঞ্চে শুনানির সুযোগ থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে দেখা যাবে।’

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ০১ মিনিটে আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় কার্যকরের কথা ছিলো। কিন্তু আসামিপক্ষের আবেদনে সুপ্রিমকোর্টের চেম্বার জজ বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মঙ্গলবার রাতে এক আদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত করেন।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে বুধবার সকালে আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রায় কার্যকরের স্থগিতাদেশের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং আসামিপক্ষে বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক শুনানিতে অংশ নেন। এ সময় দুই পক্ষের বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রথম দফায় স্থগিতাদেশের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আদালত রিভিউ পিটিশন গ্রহণযোগ্য হবে কি হবে না, এর উপর শুনানির জন্য সাড়ে ১১টায় শুনানির সময় দেন। সাড়ে ১১টায় রিভিউ আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে দুপুর ১টার দিকে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রিভিউ আবেদনের শুনানি মুলতবী ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এরপর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের পর জাতীয় সংসদে আইন সংশোধনের মাধ্যমে কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে, নির্দোষ দাবি করে আপিল করেন কাদের মোল্লা। এরপর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ দুই পক্ষের শুনানি শেষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে এ রায় দেওয়া হয়। গত ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হয় গত ৮ ডিসেম্বর।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কাদের মোল্লার স্বজনরা মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিং করে রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের ঘোষণা দেন।

এর পর পরই কাদের মোল্লার আইনজীবীরা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বাসায় গিয়ে রায় কার্যকরের স্থগিতাদেশের আবেদন করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চেম্বার বিচারপতি বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্যকর না আদেশ দেন।

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/সাদি/এইচএসএম/ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর