thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

ফখরুল-আশরাফ-তারানকোর বৈঠক এখনও ফলাফল শূন্য

২০১৩ ডিসেম্বর ১২ ০১:০২:৪৭
ফখরুল-আশরাফ-তারানকোর বৈঠক এখনও ফলাফল শূন্য

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। কিন্ত কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি তারা।

সংকট নিরসনে আলোচনা হলেও নেতারা তাদের অবস্থানে অটল থাকায় এখন পর্যন্ত কোন ঐক্যমতে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা দ্য রিপোর্টকে বলেছেন, এখনও সমাধানের ফলাফল শূন্য। তিনি বলেন, বলার মত এখনও তেমন কিছু ঘটেনি। আরো অপেক্ষা করতে হবে।

রাজধানীর গুলশান-২ এর ইউএনডিপির একটি প্রজেক্ট অফিসে বুধবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলেই চলে যান।

বৈঠক শেষে গওহর রিজভী গাড়ির ভিতর থেকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনার ব্যাপারে তারানকো সন্ধ্যার সময় কথা বলবেন।’

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয়ে সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী মহাসচিব এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বলেন, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে দু’টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম আমরা। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলকে আলোচনা শুরুর জন্য সম্মত করা এবং সহিংসতা বন্ধ করা। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করি। আলোচনার মাধ্যমে সামনের দিনে সমস্যা সমাধান হবে বলে আমি আশা করি।’

তারানকো বলেন, ‘আলোচনার দুয়ার আগে বন্ধ ছিল, এখন সেটা খুলেছে। সমাধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য থেকেই আসবে। আমরা আশা করি, অবাধ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক এবং সহিংসতামুক্ত একটি নিবার্চন করতে সমর্থ হবে বাংলাদেশ।’

এদিকে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নৈরাজ্য ও কর্মসূচি বন্ধ করলেই আলোচনার অগ্রগতি সম্ভব। তবে প্রথম বৈঠকের মতো বুধবারের আলোচনায়ও তারানকোর কোনো প্রস্তাব ছিল না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, হত্যা, হরতাল, অবরোধ, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস, রেললাইন উপড়ে ফেলাসহ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, জানমালের নিরাপত্তাহীনতাসহ সকল প্রকার নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করলেই আটককৃতদের মুক্তি এবং আলোচনার অর্থবহ পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

বিরোধী দলের নৈরাজ্য বন্ধ না করা হলে আলোচনা কখনই অর্থবহ হবে না বলেও দাবি করেছে দলটি।

আওয়ামী লীগ থেকে জানানো হয়, বিএনপি তাদের দাবিতে অটল রয়েছে। এখান থেকে সরে আসতে হবে। এছাড়া হরতাল, অবরোধসহ সকল নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করলেই নির্বাচনকালীন সরকারসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়া বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করারও আহ্বান জানানো হয়।

বিএনপি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার কোনো ছাড় দিতে রাজি হচ্ছে না। তারা আন্দোলন কর্মসূচি বন্ধ করার কথা বলছে। সরকারের মনোভাব এমন অনমনীয় হলে, সরকার কোনো ছাড় না দিতে রাজি না হলে আলোচনায় কোনো ফল হবে না। নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে আলোচনা ফলপ্রসু হবে না।

এছাড়া বিএনপির অভিযোগ, সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলের নেতাকর্মীদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের গুম করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করার জন্য সরকারি দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানায় দলটি।

পাশাপাশি অবিলম্বে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করার দাবিও জানায় দলটি। আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে।

ফখরুল-আশরাফ-তারানকোনোর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ড. শমসের মবিন চৌধুরী।

এর আগে মঙ্গলবার তারানকোর উপস্থিতিতে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নীল ওয়াকারের গুলশান-১ নম্বরের বাসায় বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা।

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এআইএম/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর