thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

প্রকল্প অনুমোদনে ইসির অনুমতি মেলেনি

২০১৩ ডিসেম্বর ১৬ ০০:৫৮:০৫
প্রকল্প অনুমোদনে ইসির অনুমতি মেলেনি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশনকে প্রকল্প অনুমোদনের অনুমতি দেয়নি নির্বাচন কমিশন। পরিকল্পনা কমিশন থেকে অনুরোধপত্র পাঠানোর ১৪ দিন পর উত্তর দিয়েছে সংস্থাটি। তবে দেশের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে মাত্র একটি প্রকল্প অনুমোদনের সম্মতি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টিকে মেনে নিয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে মনে করছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম।

এ বিষয়ে রবিবার রাতে ড. শামসুল আলম দ্য রিপোর্টকে জানান, আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধপত্র পাঠিয়েছিলাম। তাদের পক্ষ থেকে যে মতামত দেওয়া হয়েছে তা মেনে নেওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। আর তিন সপ্তাহ প্রায় বাকি রয়েছে জাতীয় নির্বাচনের। এর পরই নতুন সরকার দায়িত্বে আসলে তখন হয়ত সংকট কেটে যাবে। তাই এ মুহূর্তে অপেক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া কিছুই করার নেই।

সূত্র জানায়, এ সংক্রান্ত পত্রটি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গত ১১ ডিসেম্বর পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহিদ খানের কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-১ শখার উপসচিব মিহর সারওয়ার মোর্শেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৩ক এর উপবিধি (১) অনুসারে নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করা যাবে না।

এ জন্য শুধু দেশের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে আইসিসি টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে গৃহীত ইমপ্রুভমেন্ট অব রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড বিউটিফিকেশন ওয়ার্ক এরাউন্ড মিরপুর শের-ই-বাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম অব মেজর রোডস অব ঢাকা সিটি ফর আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপ টি-২০ বাংলাদেশ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সম্মতি রয়েছে।

তবে নৈমিত্তিক অর্থ ছাড় ও অন্যান্য জরুরি বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রকল্পের কোনো জরুরি প্রয়োজনে প্রকল্পভিত্তিক প্রস্তাব কমিশনের অনুমোদনের জন্য পাঠানো যেতে পারে।

সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কারণে সময়মতো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন না হওয়ায় বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিশ্রুত অর্থ অন্যদেশে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়ার পাশাপাশি উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা চলছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যেসব প্রকল্প জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সেসব প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয় পরিকল্পনা কমিশন।

গত ২৭ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে পাঠানো চিঠিতে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিধি অনুযায়ী ২৫ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একনেক বৈঠক বাতিল করা হয়। কিন্তু বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্ত কারিগরি সহায়তা প্রকল্প, যা সরাসরি নির্বাচনে প্রভাব পড়ে এমন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় সেসব বৈদেশিক চুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অনুমোদন হওয়া প্রয়োজন। সব কারিগরি সহায়তা প্রকল্প পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন করে থাকে, এর জন্য একনেক বৈঠকের প্রয়োজন হবে না। এ ছাড়া চলমান প্রকল্পের সংশোধনীর ক্ষেত্রে (যা প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে সংশোধন জরুরি) যেমন যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেসব প্রকল্পের সুষ্ঠু সমাপ্তির জন্য অনুমোদন দরকার। এক্ষেত্রেও যেসব প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি অনধিক ২০ শতাংশ অথবা মোট সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয় ২৫ শতাংশের নিচে সেসব প্রকল্প জনস্বার্থে অনুমোদন হওয়া প্রয়োজন।

এ অবস্থায় ওই চিঠিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এবং পরিকল্পনামন্ত্রীর এখতিয়ারভুক্ত সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন করা যাবে কি না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মতামত বা ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহিদ খানের পাঠানো একটি চিঠির অনুলিপিও পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে দেশের ভাবমূতি রক্ষা, বহির্বিশ্বে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে তিনটি জনগুরুত্ব প্রকল্পের জরুরিভিত্তিতে অনুমোদন প্রয়োজন।

প্রকল্পগুলোর বিষয়ে বলা হয়েছে, এলজিইডির বাস্তবায়িতব্য মিউনিসিপাল গভর্ন্যান্স সার্ভিসেস প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশ অনুযায়ী পুনর্গঠন করে গত ১৩ নভেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫১৭ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও বড় অংকের ঋণ রয়েছে। ঋণচুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইতোমধ্যেই নেগোশিয়েশন সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পটি যথাসময়ে অনুমোদন না হওয়ায় বাংলাদেশ যথাসময়ে প্রকল্প সাহায্য হতে বঞ্চিত হতে পারে।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের বাস্তবায়িতব্য ইমপ্রুভমেন্ট অব রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড বিউটিফিকেশন ওয়ার্কস এরাউন্ড মিরপুর শেরইবাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম অ্যান্ড মেজর রোডস অব ঢাকা সিটি ফর আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপ টি-২০ বাংলাদেশ ২০১৪ নামের প্রকল্পটি গত ২৫ নভেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ২০১৪ সালের মার্চ-এপ্রিল আইসিসি ওয়ার্ল্ডকাপ টি-টুয়েন্টি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। বহির্বিশ্বে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে এ প্রকল্পটি জানুয়ারীর মধ্যেই অনুমোদন প্রয়োজন। প্রকল্প সময়মতো শুরু করতে না পারলে ভেন্যু পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। এ ছাড়া ডিপিএইচই’র বাস্তবায়নাধীন বিশেষ গ্রামীণ পানি সরবরাহ প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপি গত ১১ নবেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। গ্রামীণ জনগণের সুপেয় পানি সরবরাহের মাধ্যমে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ প্রকল্পের ভূমিকা অপরিসীম। তাই এটির সংশোধিত প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদন প্রয়োজন। এগুলোর মধ্যে একটি ছাড়া অন্য কোনো প্রকল্প অনুমোদনের অনুমতি দেয়নি নির্বাচন কমিশন।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/ এএস/ডিসেম্বর ১৬, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর