thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৭ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

আইএএস-আইপিএস মিলবে, চিকিৎসক মিলবে না : মমতা

২০১৩ ডিসেম্বর ১৮ ১০:৩৭:৫৯
আইএএস-আইপিএস মিলবে, চিকিৎসক মিলবে না : মমতা

কলকাতা প্রতিনিধি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। ২০১০ সালে ভারতের ২৮টি রাজ্য আর সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মিলিত তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ ছিল ১৫ নম্বরে। এখন ষোলো নম্বরে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সারাদেশ খুঁজে আড়াই হাজার চিকিৎসক জুটছে না। আইএএস, আইপিএস মিলবে কিন্তু চিকিৎসক মিলবে না। চাওয়াটা সহজ। বলতে তো ট্যাক্স লাগে না।’

উল্লেখ্য, ‘বিকাশপুরুষ’ নরেন্দ্র মোদির গুজরাট এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে, শিশুমৃত্যুর গড় সেই রাজ্যে ২০১২ সালে ছিল ৩৮। তবে সেখানে দুই বছরে উন্নতি হয়েছে। ২০১০ সালে গুজরাটে এই হার ছিল ৪৪। বাম ফ্রন্ট পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গের থেকে তখন অনেকটাই পিছিয়ে ছিল গুজরাট। এখন গুজরাটে শিশুমৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ৩৮-এ। পশ্চিমবঙ্গ গত দুই বছরে পিছিয়ে গেলেও গুজরাট এগিয়েছে। অর্থাৎ, ব্যবধান কমালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অথচ শিশুমৃত্যু নিয়েই বাম ফ্রন্টের বিরুদ্ধে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ২০১১ সালে ওই ইশ্‌তেহারের ২৯নং পাতায় মমতা লিখেছিলেন, ‘শিশুমৃত্যুর হার পশ্চিমবঙ্গে ১০০০-এ ৩৮।’ তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই ২০১১ সালের ৩০ জুন দুই দিনে ১৮ শিশুরমৃত্যু হয়েছিল কলকাতার বিসি রায় হাসপাতালে। সে দিন মমতা বলেছিলেন, ‘৩৪ বছর ধরে কিছুই করেনি। ডাক্তার নেই, নার্স নেই, ইকুইপমেন্ট নেই। তার মধ্যে ঘুঘুর বাসা।’

কিন্তু চলতি মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী পেশ করেছে- শিশুমৃত্যু সম্পর্কে সাম্প্রতিক রিপোর্ট জানাচ্ছে ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ৩১। ২০১২ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৩২-এ। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের মতে, ‘শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে এটি যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। কারণ এ হার কোথাও দশ-বারো করে বাড়ে বা কমে না। ২০০৯ সালে ৩৩ থেকে ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গ ৩১-এ ছিল।’ এই রিপোর্ট সম্পর্কে অবশ্য রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় কুমার দে মঙ্গলবার বলেছেন, ‘কোথায় এমন তথ্য কেন্দ্রীয় সরকার পেল, আমার জানা নেই। আমি রিপোর্টটি বিস্তারিত না দেখে কিছু বলতে পারব না। স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসআরএস) এখনো হয়নি। এসআরএস ২০১২ সাল অনুযায়ী ওই রিপোর্ট তৈরি করেছে। রিপোর্টে ২০০৯ সালে পরিসংখ্যানও রয়েছে। চার বছরের তুলনামূলক আলোচনা করা হয়েছে। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে ২০০৯ সালে এ রাজ্যে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ৩৩, যা ২০১০ সালে নেমে হয় ৩১। এখন তা ৩২। রাজ্যের নবজাতকদের চিকিৎসার জন্য একটি টাস্কফোর্স গড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন টাস্কফোর্স রাজ্যটিতে গত আড়াই বছরে বিস্তর হয়েছে। নবজাতকদের চিকিৎসার এই টাস্কফোর্সের প্রধান ড. ত্রিদিব ব্যানার্জি। তিনি অসুস্থ বলে কোন মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু কেন্দ্রের রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশে গুটিকয় রাজ্য আছে যেখানে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েছে। সেগুলো হলো- অরুণাচল প্রদেশ (৩২ থেকে হয়েছে ৩৩), মিজোরাম (৩৪ থেকে হয়েছে ৩৫)। এছাড়া ২৮টি রাজ্য, সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাকি কোথাও শিশুমৃত্যুর হার বাড়েনি।

উল্লেখযোগ্য, বিহার, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, গুজরাট, আসামও গত দুই বছরে এক্ষেত্রে এগিয়েছে। এমনকি শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের মতো অস্থির ও পিছিয়ে থাকা রাজ্যে। দেশে ২০১০ সালে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ৪৭। ২০১২ সালে তা ৪২-এ উঠে এসেছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশে শিশুমৃত্যুর হারে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাজ্য মধ্যপ্রদেশ। সেখানে হার ৫৬। তারপরই রয়েছে আসাম। সেখানে হার ৫৫।

(দ্য রিপোর্ট/এসএম/এমসি/শাহ/এমডি/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর