thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১,  ১৭ জমাদিউস সানি 1446

চোখে ছানি

২০১৩ ডিসেম্বর ১৮ ১৪:২৪:২৭
চোখে ছানি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আমাদের চোখের ভেতরেও একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেন্স আছে। যা সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে আমরা দূর ও কাছের জিনিস স্পষ্ট করে দেখি। এই লেন্সটি বিভিন্ন কারণে অস্বচ্ছ হয়ে যায়। এমনটি হলে আমরা চোখে ঝাপসা দেখি অথবা কোনো কোনো সময় কিছুই দেখতে পাই না। লেন্সের এই ঝাপসা হয়ে যাওয়া রোগটির নামই ছানি পড়া বা ক্যাটারাক্ট (Cararact)।

তবে আশার কথা এই অন্ধত্ব বা ঝাপসা দেখা স্থায়ী ব্যাপার নয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে এই রোগী ফের দৃষ্টি পেতে পারে।

বিভিন্ন বয়সে এ সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় জন্মগতভাবেও শিশুছানি পরা চোখ নিয়ে জন্মাতে পারে। তবে বৃদ্ধ বয়সেই বা মধ্য বয়সে সাধারণ এ সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পর এই রোগটি হতে শুরু করে। তবে এর আগেও হতে পারে। আর একটি বিষয় হচ্ছে, বৃদ্ধ বয়সে যত লোক অন্ধ হয়ে যায় তার বেশির ভাগই চোখে ছানি পড়ার কারণে হয়ে থাকেন।

আরও কিছু বিষয় হচ্ছে- ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের সুগার অনিয়ন্ত্রিত থাকলে এ রোগ জেঁকে বসতে পারে। অনেক সময় চোখে আঘাত পেলে, রেডিয়েশনের কারণে, চোখে কোনো কেমিক্যাল লাগলে কিংবা বিদ্যুতায়িত হওয়ার কারণেও অল্প বয়সে এই রোগ হতে পারে।

রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে সবকিছু ঝাপসা দেখা যায়, অনেক সময় কোনো জিনিসের দুইটি প্রতিবিম্ব দেখা যায়। কখনো কখনো আবার চোখে রংধনুর সাত রং-ও ভেসে উঠতে পারে। চোখে ছানি যাদের পড়ে তারা সাধারণত সন্ধ্যায় বা রাতের অন্ধকারে কিছুটা ভালো দেখে। তবে ছানি যখন পরিপক্ক হয় তখন রোগী তার দৃষ্টিক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেন। ফলে এ বিষয়ে কোনোপ্রকার অবহেলা করা চলবে না। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অভিজ্ঞ চক্ষুবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া বাঞ্চনীয়।

চোখের ছানির চিকিৎসা অবশ্যই একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের (Opthalmologist) তত্ত্বাবধানে করাতে হবে। রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে কালোচশমা বা সানগ্লাস পরলে রোগীর দৃষ্টির কিছুটা উন্নতি হয়, চোখে এট্রপিন জাতীয় ড্রপ ব্যবহারও এতে কিছুটা সাহায্য করে থাকে। ছানি পক্বতা লাভ করলে অপারেশনই এর একমাত্র চিকিৎসা। অপারেশন করে চোখের ভেতর লেন্স লাগিয়ে নিলে রোগী আগের মতো দেখতে পাবে। ফ্যাকো সার্জারির মতো আধুনিক সার্জারি চোখের ছানি পড়া চিকিৎসায় আরও সহজ ও ফলপ্রসূ করে তুলেছে।

যাদের খাবারে ভিটামিন ‘সি’-এর পরিমাণ কম থাকে তাদের চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যারা বেশি পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ ও এন্টিঅক্সাইডেন্টস গ্রহণ করে তাদের এ পরিস্থিতির শিকার হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম । বাংলাদেশের মতো স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে মানুষের মধ্যে খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ‘সি’ এর মাত্রা বেশ কম। ফলে চোখে ছানি পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ।

আমাদের দেশে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বহু ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আমলকিতে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন “সি” রয়েছে। ফলে চোখে ছানি পড়লে আমাদের খাদ্য সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আইজেকে/লতিফ/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর