thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ৫ মে 24, ২২ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৬ শাওয়াল 1445

যেকোনো মূল্যে নির্বাচন প্রতিহত করা হবে : হাফিজ

২০১৩ ডিসেম্বর ২৩ ১৭:৩২:৪৭
যেকোনো মূল্যে নির্বাচন প্রতিহত করা হবে : হাফিজ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: যেকোনো মূল্যে প্রহসনের নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচনের কারণে জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে। অথচ ক্ষমতাসীনদের কোনো লজ্জা নেই। তারা ৫ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘বন্দী গণতন্ত্র ও বিপন্ন মানবতা’। এতে আরও বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরবিক্রম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম প্রমুখ।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় জীবনে এক ক্রান্তিলগ্ন চলছে। দেশের গণতন্ত্র আজ বন্দী। জীবনানন্দের ভাষায়, ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ, যারা অন্ধ তারাই আজ বেশি চোখে দেখে।’

তিনি বলেন, ‘অনেককেই আজ দেখি মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ বলে বড় বড় বক্তৃতাবাজি করে। লজ্জা হয়, তারা রণাঙ্গন থেকে দেড়-দুশ’ মাইল দূরে ছিল। থিয়েটার রোডের উদ্বাস্তু মুক্তিযোদ্ধা ওরা। এরাই সুবিধাভোগী, লুটপাটকারী। অথচ দেশের লাখ লাখ সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা, যারা যুদ্ধ শেষে অস্ত্র জমা দিয়ে নিজের কাজে ফিরে গেছেন; একটি সার্টিফিকেট নেওয়ারও প্রয়োজন অনুভব করেননি, তাদের অনেকে রয়েছেন না খেয়ে, খুব কষ্টে।’

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চিরদিনই স্বৈরাচারী দল। এরা গণতন্ত্রে কোনোদিনই বিশ্বাস করে না। এখন আবার তারা গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করতে চাচ্ছে। একতরফা ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু তাদের সফল হতে দেওয়া হবে না। ১৮ দল যেকোনো মূল্যে এ প্রহসনের নির্বাচনকে প্রতিহত করবে।’

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি। এখনও আমাদের শত্রু রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ। তবে ওই শাহবাগী বা আওয়ামী লীগের মতো এক শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ নয়, আমাদের শত্রু দুইজন। এক. ৭১ সালে আমরা যে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম, তাদের উত্তরাধিকারীরা যদি এখনও থেকে থাকে তাদের বিরুদ্ধে। দুই. ওই সময় ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছিল বলে এখন ‘জামাই’ হয়ে আমাদের বিছানায় এসে আমাদের অত্যাচার-নির্যাতন করবে, তা হবে না। তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের যুদ্ধ।’

সাবেক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা জেনারেল ইব্রাহিম আরও বলেন, ‘সে জন্য নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ নয়, আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দেশ যখন আগুনে পুড়ছে, সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আমরা তখন ঘরে বসে বন্দী গণতন্ত্র ও বিপন্ন মানবতা নিয়ে কথা বলছি।’

তিনি বলেন, ‘তারা কথায় কথায় সংবিধান সংবিধান করে। সংবিধানকে ধর্মগ্রন্থ বানিয়ে ফেলেছে। সেই সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদেই আছে দেশের মালিক জনগণ। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটেই শাসকরা নির্বাচিত হবে। অথচ সেই জনগণের ৫২ ভাগ আজ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার খুঁটির জোর জনগণ নয়, ভারত। কারণ, বাংলাদেশে ‘খয়ের খাঁ’ সরকার না থাকলে ভারত অখণ্ড থাকতে পারবে না। ভাগ হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘পাগলরা নিজেদের বাড়িতে আগুন দেয় না। অন্যের বাড়িতে দেয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চারপাশে আগুন জ্বলছে না, দেশে জ্বলছে। আর এ সব আগুন দিচ্ছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র।’

ডা. জাফর আরও বলেন, ‘শান্তির জন্য জীবন দিতে হয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতি বছর তাকে কমপক্ষে ১০টি গোল্ড মেডেল দেওয়া উচিত। যাতে ২০১৪ সালে নোবেল কমিটি তাকে একটি প্রাইজ দিতে পারে। তাহলে অন্তত ড. ইউনূসের সঙ্গে তার ঝগড়াটা মিটে যেত।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম বলেন, ‘যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি; চলছে। বিজয় খুব দূরে নয়; কাছে। অতি সন্নিকটে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার আমাদের দেশের প্রতিটি সেক্টরকে বিতর্কিত করেছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, অর্থনীতি, ব্যাংক, পুলিশসহ সব সেক্টরই আজ বিতর্কিত। আজকে অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। সেনাবাহিনীর ভাইদের উদ্দেশে বলছি, আপনারা দেশের গর্বের সেনাবাহিনী। আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। নিপীড়ক শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করবেন না। তার ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহৃত হবেন না।’

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এসকে/নূরুল/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর