thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

ঈশ্বরদীতে প্রাচীন সুড়ঙ্গ : নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ?

২০১৩ ডিসেম্বর ২৩ ২২:৪২:৪৩
ঈশ্বরদীতে প্রাচীন সুড়ঙ্গ : নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ?

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীর এক গ্রামে পুকুর খনন করতে গিয়ে ২৫ ফুট নিচে প্রাচীন সুড়ঙ্গ ও ইটের তৈরি বাড়ি সদৃশ স্থাপনার সন্ধান পাওয়া গেছে। উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামে সোমবার সকালে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে পুকুর খনন করার সময় এই প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়।

জমির মালিক খন্দকার খায়রুল ইসলাম জানান, তিনি ১৯৪৭ সালে জনৈক অন্তু মজুমদারের কাছ থেকে এই জমি কিনেছিলেন। কয়েকদিন আগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে খননের কাজ শুরু করি। প্রায় ২৫ ফুট খননের পর শ্রমিকরা প্রথমে কিছু পুরনো ইটের সন্ধান পায়। এরপর মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে পাকা ঘরের মোটা বিম ও চওড়া দেওয়াল আবিষ্কৃত হয়। এ সময় বাড়ি সদৃশ স্থাপনা ও দেওয়ালের পাশেই একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়। সুড়ঙ্গ দেখে শ্রমিকরা ভয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশকে তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে রয়েছে। সেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তাদের বিশেষজ্ঞ টিম স্থাপনার বিষয়টি খতিয়ে দেখে যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

পাবনা জেলার ইতিহাস রচয়িতা এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. এম আবদুল আলীম বলেন, ‘বৃহত্তর পাবনা জেলায় বিভিন্ন স্থানে ব্রিটিশ শাসকরা নীলকুঠি স্থাপন করে নীল চাষ করাতেন। ড. খলীকুজ্জামানের লেখা ‘বৃহত্তর পাবনা জেলার প্রাচীন প্রত্নতত্ত্ব জরীপ প্রতিবেদন’ শীর্ষক বইয়ের ৭২ নম্বর পৃষ্ঠায় আছে, পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুণ্ডা ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর গ্রামে নীলকুঠি ছিল এবং বর্তমান অবদি এখানে নীলকুঠির কিছু স্মৃতি বিদ্যমান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাসের সূত্র ধরেই ধারণা করা যায়, আজকের আবিষ্কৃত এই প্রাচীন প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন তৎকালীন ব্রিটিশদের নীলকুঠিই হবে।’

এদিকে এই প্রাচীন নিদর্শন দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমাচ্ছে নুরুল্লাপুর গ্রামে। গ্রামের ছোট-বড় অনেকেই টর্চ নিয়ে সুড়ঙ্গের ভেতরে প্রবেশ করেছিল। সুড়ঙ্গে প্রবেশকারী সেলিম মৃধা (৪২) জানান, সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৫ ফুট। সুড়ঙ্গটির শেষদিকে দু’টি পথ দু’দিকে চলে গেছে। একটি দিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ভয়ে দ্বিতীয় পথটি দিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি তারা।

এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তি জানিয়েছেন, তারা পূর্বপুরুষ থেকে শুনে আসছেনে এই গ্রামে নীলকরদের কুঠি ছিল। তবে তারা শুধু কয়েকটি প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পেয়েছেন বলে জানান।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এসকে/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর