thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে 24, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১১ জিলকদ  1445

অস্তিত্ব সংকটে মুসলিম ব্রাদারহুড

২০১৩ ডিসেম্বর ২৬ ১৫:০৯:২৯
অস্তিত্ব সংকটে মুসলিম ব্রাদারহুড

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কঠিন সময়ের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড। ব্রাদারহুড সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দলটির অনেক নেতাকর্মী কারারুদ্ধ হয়েছেন। অনেকেই আবার পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মিশরের সেনা সমর্থিত অন্তবর্তী সরকার মুসলিম ব্রাদারহুডকে প্রথমে সন্ত্রাসী দল ঘোষণা করেছিল। সবশেষে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করা হয়। এ সব কারণে অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে দলটি।

মিশরের বর্তমান সেনা সমর্থিত সরকারের দমন-পীড়নের জেরে অনেকটা ছন্নছাড়া হয়ে গেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। দেখা দিয়েছে দলটির অস্তিত্বের প্রশ্নও।

তবে ব্রাদারহুডের আছে লড়াইয়ের সমৃদ্ধ ইতিহাস। ৮৫ বছরের পুরোনো ইসলামপন্থী এ দলটি হোসনি মুবারকের পতনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিল। ২০১১ সালে হোসনি মুবারকের পতনের মধ্যদিয়েই মিশরে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে মোহাম্মদ মুরসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

তবে মোহাম্মদ মুরসি বেশ কয়েকটি কারণে অজনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরে বিক্ষোভের মুখে চলতি বছরের ৩ জুলাই তাকে ক্ষমতাচ্যুত ও অবরুদ্ধ করা হয়।

এর পর থেকে অব্যাহত বিক্ষোভে ব্রাহারহুডের এক হাজারেরও বেশি সমর্থক নিহত হন। আটক করা হয় ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতাদের।

ব্রাদারহুডের ওপর সেনা-সমর্থিত সরকারের দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহে পুলিশ সদর দফতরে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে দেশটির অন্তবর্তী সরকার। যদিও সিনাইভিত্তিক একটি জিহাদী দল এ হামলায় দায় স্বীকার করেছে।

এর আগে চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। অবশ্য এর আগেও দলটি আরো দুইবার নিষিদ্ধ হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে বোমাবাজি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ ফাহমি আল-নোকরাশি হত্যার চেষ্টার অভিযোগে নিষিদ্ধ হয় মুসলিম ব্রাদারহুড। ১৯৫৪ সালে প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসেরকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ফের নিষিদ্ধ করা হয় দলটিকে।

১৯২৮ সালে স্কুলশিক্ষক হাসান-আল-বান্নার হাত ধরে গড়ে ওঠে আজকের মুসলিম ব্রাদারহুড। উপনিবেশবাদ ও ইহুদিবাদের প্রতিবাদে এবং তৎকালীন ধর্মনিরপেক্ষ মিশরে ইসলাম ফিরিয়ে আনার জন্য তৃণমূল পর্যায়ের আন্দোলনের অংশ হিসেবে দলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

শুরুর দিকে মুসলিম ব্রাদারহুড অনেক উগ্রপন্থী ছিল। বারবার সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ ‍উঠেছে দলটির বিরুদ্ধে।

ব্রাহারহুড অবশ্য বরাবরই আনুষ্ঠানিকভাবে সহিংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। কয়েকদশক আগে ব্রাদারহুড তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতিতেও সক্রিয় হয়েছে। ১৯৫৪ সাল থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিষিদ্ধ হওয়ার পরও হোসনি মুবারকের অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে দলটি। এক্ষেত্রে আল-কায়েদার মতো অন্যান্য উগ্রপন্থী ইসলামী সংগঠনগুলোর সঙ্গে পার্থক্য আছে মুসলিম ব্রাদারহুডের। কারণ এসব সংগঠন ভোটকে অন-ইসলামিক মনে করে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন চড়াই-উতড়াই পার হতে হয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুডকে। তাই মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীদের কাছে কারাগার মোটেও নতুন নয়। তবে ব্রাদারহুডের ওপর এবারের সেনা-সমর্থিত সরকারের দমন নীতি ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে সরকারের এই কঠোর মনোভাব আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেখা যাক এবারও টিকে যায় কি না প্রায় শত বছরের পুরোনো এই দলটি।

(দ্য রিপোর্ট/ কেএন/ এমডি/ ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর