thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

পিলখানা হত্যা মামলায় ফাঁসির রেকর্ড

২০১৩ ডিসেম্বর ২৬ ২১:৫০:২৪
পিলখানা হত্যা মামলায় ফাঁসির রেকর্ড

বিশ্বের ইতিহাসে একটি মামলায় সবচেয়ে বেশি আসামির ফাঁসির আদেশের রেকর্ড হয়েছে ২০১৩ সালে। বাংলাদেশের বড় হত্যাকাণ্ড পিলখানায় সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৫২ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

অপরদিকে কোনো মামলায় এক সঙ্গে ৫৭৫ জনকে শাস্তি প্রদান করাও ইতিহাসে প্রথম। যদিও প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরাজিত শক্তির সেনাবাহিনীর অনেককে মৃত্যুদণ্ডের আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো এক মামলায় এত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান ইতিহাসের পাতায় প্রথম হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি পিলখানা মামলায় ১৬১জনকে যাবজ্জীবন, ২৬২জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭১জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান গত ৫ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

বিডিয়ার বিদ্রোহের অভিযোগে সারাদেশে ১১টি বিশেষ আদালতে ৫৭ মামলায় ৬ হাজার ৪৫জনকে আসামি করা হয়। এতে ৫ হাজার ৯২৬জনের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এবং ১১৯জন খালাস পেয়েছেন।

একই সঙ্গে একটি ঘটনায় সর্বমোট ৫৯টি মামলার ঘটনাও ইতিহাসে বিরল।

এ মামলা সম্পর্কে পর্যবেক্ষকরা বলেন, বিপুলসংখ্যক মৃত্যুদণ্ডসহ একসঙ্গে এত আসামির শাস্তির ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে এটাই প্রথম।

এ রায় সম্পর্কে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক দ্য রিপোর্টকে বলেন, এক মামলায় এতজনের ফাঁসির আদেশ বিশ্বে এটাই প্রথম। তবে এ শাস্তির আদেশ সম্ভবত টিকবে না।

তিনি বলেন, এটা মিডিয়া ট্রায়াল (আদালতের বিচার) হয়েছে। এটা ঠিক নয়।মিডিয়াতে বেশি বেশি প্রচার হওয়ার কারণেই এ রায় হয়েছে।মিডিয়া নয় বরং আইনানুযায়ীই বিচার হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম সরদার জানান, ইতিহাসে কোন একক মামলায় এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক ফাঁসির আদেশ।

একটি মামলায় অতীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে দেওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুদণ্ডের আদেশের ইতিহাস সে কথাই বলে।

এ বছরের ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক আট জনকে ফাঁসির আদেশ দেন।

২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মলয় কুমার বোস শহরের কোতোয়ালি এলাকার রণকাইল গ্রামের নিমাই দাসের বাড়ির সামনে খুন হন। এ মামলায় চলতি বছরের ২৪ মার্চ ৯জনের ফাঁসি ও ১২জনের যাবজ্জীবন দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মোতাহের হোসেন।

২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলায় আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০১২ সালের ২০ জুন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. মোতাহার হোসেন ১০ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

তিনজনকে হত্যার দায়ে ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১২জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন চুয়াডাঙ্গার দায়রা জজ আদালত।

২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারি বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান বুনতে গেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের চোরের ভিট গ্রামের তিন কৃষক প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। এ মামলার ৮জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক এ বি এম সাজেদুর রহমান।

এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় ১৯৯৮ সালে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে ১৫জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এরপর উচ্চ আদালতে আপিলের পর ২০০১ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তিনজনকে খালাস দিয়ে ১২জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যার দায়ে ১৩জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল সেনাবাহিনীর বিশেষ আদালত।

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এসবি/সাদিক/ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ আয়োজন এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ আয়োজন - এর সব খবর