ইশতেহারের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ
সুশাসন, গণতন্ত্রায়ন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রায়ন
১.১ শান্তি-স্থিতিশীলতা : জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান, তাদের কাজের ও চলাফেরার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
১.২ সংবিধান ও সংসদ : সংবিধান সুরক্ষা, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত করা হবে। সংসদকে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংসদের ভেতরে এবং বাইরে সংসদ সদস্যদের সামষ্টিক ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ বিধি-বিধান করা হবে।
১.৩ জাতীয় ঐকমত্য : গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত এবং নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়ন নিশ্চিত করার মতো মৌলিক প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সিভিল সমাজসহ দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১.৪ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার : সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ : যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন এবং শাস্তি কার্যকর করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে গিয়ে আন্দোলনের নামে হত্যা, সন্ত্রাস, পবিত্র কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ, শিল্প-কারখানায় অগ্নিসংযোগ, রেলওয়ের ফিশপ্লেট উপড়ে ফেলা, সড়ক কাটাসহ রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদের ধ্বংস সাধন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, উপাসনালয় ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও বৃক্ষ নিধনের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প-কারখানাসহ অর্থনীতির পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান এবং নাশকতার ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনা পুনর্নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সকল নাগরিকের স্ব স্ব ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। ধর্ম, বর্ণ, নৃ-পরিচয়, লিঙ্গ এবং সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে, রাষ্ট্রের চোখে সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
১.৫ বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন : বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা সংহত করা হবে। সর্বস্তরে জনগণের বিচার প্রাপ্তি সহজলভ্য এবং মামলাজট মুক্ত করে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে বিচার সম্পন্ন করার জন্য গৃহীত প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারসহ বিচার বিভাগের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির বাস্তবায়নাধীন ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। সবার জন্য আইনের সমান প্রয়োগ, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম জোরদার করা হবে। ন্যায়পাল নিয়োগ ও স্বাধীন মানবাধিকার কমিশনকে আরও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে।
১.৬ নির্বাচন ব্যবস্থা : ইতোমধ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তোলার যে সূচনা হয়েছে তা সংহত এবং শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা হবে। নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী, দক্ষ এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী করা হবে। যুগের প্রয়োজনে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার অব্যাহত থাকবে।
১.৭ ক্ষমতার বিকেন্দ্রায়ন, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন : রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের ক্ষমতায়ন ও অধিকতর অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। বর্তমান কেন্দ্রীভূত প্রশাসনিক কাঠামোর গণতান্ত্রিক পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের কাছে অধিকতর ক্ষমতা ও দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি স্তর বিন্যাসের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হবে। সর্বস্তরে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে অধিকতর ক্ষমতাশালী ও দায়িত্বশীল করার লক্ষ্যে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করা হবে। প্রশাসনিক সংস্কার এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। সর্বস্তরে ই-গভর্নেন্সকে সম্প্রসারিত করা হবে।
১.৮ দুর্নীতি প্রতিরোধ : দুর্নীতি প্রতিরোধে, আইনি, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ জোরদার করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে প্রতিষ্ঠানটির কার্যকারিতা আরও বাড়ানো হবে। ঘুষ, অনোপার্জিত আয়, কালো টাকা, চাঁদাবাজি, ঋণখেলাপি, টেন্ডারবাজি ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিজেদের সম্পদ, আয়-রোজগার সম্পর্কে সর্বস্তরের নাগরিকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে।
১.৯ পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী : জনগণের নিরাপত্তা, শিল্পে শান্তি, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানিকে নির্বিঘ্ন করা এবং চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস কঠোরহস্তে দমনের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল শাখাকে অধিকতর শক্তিশালী, দক্ষ এবং আধুনিক সাজ-সরঞ্জামে সজ্জিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আরও উন্নত করা হবে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, পরিবারের সদস্যদের আবাসন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা হবে। পুলিশ প্রশাসনেরও প্রতিসংক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, দ্রব্যমূল্য ও সামষ্টিক অর্থনীতি
২.১ জনগণের জীবনযাত্রার ক্রমাগত মানোন্নয়ন, তাদের আয়-রোজগার বৃদ্ধি এবং খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখা হবে। দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা, খাদ্য সংশ্লিষ্ট ভোগ্যপণ্যের পর্যাপ্ত উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বাজার ব্যবস্থার সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। ‘ভোক্তা অধিকার’কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হবে এবং ভোক্তাদের সহায়তায় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মোকাবেলা করা হবে। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
২.২ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্য দৃঢ় করা হবে। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা হবে। শুল্ক-কর নীতি হবে ব্যবসায়বান্ধব। সরকারের ঘাটতি ব্যয় পরিমিত পর্যায়ে রাখা হবে। মুদ্রাবিনিময় নীতি হবে নমনীয়। বৈদেশিক লেনদেনে ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য বজায় রাখা হবে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সরকারি সূত্রে যে কোনো সংগ্রহ উদ্যোগে পূর্ণ খরচ আদায়ের রীতি অনুসরণ করা হবে এবং ভর্তুকি হবে জনগণের কষ্ট নিরসন ও বিশেষ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে।
আমাদের গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি
শিল্পায়ন
৩.১ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে শিল্পায়ন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্প-সভ্যতার ভিত্তি রচনার জন্য দেশি-বিদেশি এবং প্রবাসী বাঙালি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ জন্য ভৌত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা নিরসনের লক্ষ্যে আইন ও বিধি সহজ করা, ওয়ানস্টপ সার্ভিস কার্যকর করা, কঠোর হস্তে দুর্নীতি দমন, বিনিয়োগবান্ধব রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি, অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণ, একই সঙ্গে রপ্তানি পণ্য বহুমুখী করণ এবং বিনিয়োগকারীদের যুক্তিসম্মত রাজস্ব ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদান হবে শিল্পায়নের কৌশল। এ জন্য প্রণীত সমন্বিত শিল্পনীতি ও কৌশলপত্র ভবিষ্যতে আরও সময়োপযোগী করা হবে।
৩.২ খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণ, হাল্কা প্রকৌশল, ঔষধ, প্লাস্টিক, খেলনা, গৃহস্থালি সহায়ক সামগ্রী, আইটি, চামড়া ও রাসায়নিক শিল্পের মতো সম্ভাবনাময় শিল্প চিহ্নিত করে আগ্রহী ও দক্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের শুল্ক-কর ও আর্থিক (ঋরংপধষ/ঋরহধহপরধষ) সহায়তা দেওয়া হবে। পাট শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করা হবে। পাটের জন্মরহস্য আবিষ্কারের পরিপ্রেক্ষিতে পাটের বিকল্প ব্যবহারের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হবে। পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পকে আরও শক্তিশালী, নিরাপদ এবং প্রতিযোগিতা সক্ষম করা হবে।
৩.৩ বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা ও শিল্পাঞ্চল স্থাপনের প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। মফস্বল ও প্রান্তিক এলাকায় কৃষিনির্ভর এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পাঞ্চল স্থাপন এবং বিদ্যমান ইপিজেডগুলোতে শিল্পায়নের সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার উৎসাহিত করা হবে। কম উন্নত এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ এবং রাজস্ব ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
৩.৪ শ্রমঘন ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের বিকাশের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ ও পুনঃঅর্থায়নের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণের বিশেষ ব্যবস্থা ও অন্যান্য সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং সম্প্রসারিত করা হবে। যারা শুল্ক-কর ও ব্যাংক ঋণ নিয়মমাফিক পরিশোধ করেছেন এবং পরিচালনায় বিশেষ দক্ষতা দেখিয়েছেন তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সহায়তা দেওয়া হবে।
৩.৫ ঐতিহ্যবাহী তাঁত, তামা, কাসা ও মৃৎশিল্পসহ গ্রামীণ শিল্পকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের বিকাশ, বাজার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি বৃদ্ধি উৎসাহিত করা হবে। জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের লাভজনক ও উৎপাদনশীল বিনিয়োগ, পর্যটন শিল্পের সম্প্রসারণকে সর্বতোভাবে সহায়তা দেওয়া হবে। অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি পণ্যের নির্বিঘ্ন পরিবহন ও চলাচল নিশ্চিত করতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি
৪.১ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত ও আরও দ্রুততর করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত এবং বাস্তবায়নাধীন মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের ভেতর দিয়ে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। ২০১৬ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। ২০২১ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার মেগাওয়াট; কিন্তু শিল্পায়ন ও ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির সক্ষমতার প্রেক্ষিতে উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন-বণ্টনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পরিকল্পিত ৩০ লাখ সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার সহজলভ্য ও ব্যাপক করা হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। কয়লাসম্পদের যথাযথ অর্থনৈতিক ব্যবহারের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা। ১৩০০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ইতোমধ্যে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি করা হবে। ২০৩০ সালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের হিস্যা হবে প্রায় ৫০ শতাংশ।
৪.২ গ্যাসের যুক্তিসঙ্গত উত্তোলন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে আরও শক্তিশালী করার নীতি অব্যাহত থাকবে। গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উত্তোলনে বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও রিগ এবং আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংগ্রহ করা হবে। নতুন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র আবিষ্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বাংলাদেশের উপকূল ও গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে অন্যান্য দেশ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার প্রচেষ্টা জোরদার করা হবে। দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অবশিষ্ট জেলাগুলোয় গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপচয় হ্রাসের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। গ্যাসের মজুদ সীমিত বিধায় ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির যে প্রক্রিয়া চলছে তা সম্পন্ন করা হবে এবং এজন্য মহেষখালি দ্বীপে এলএনজি টার্মিনালসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
৫.১ দারিদ্র্য নিরসনে আওয়ামী লীগ সরকারের গৌরবোজ্জ্বল সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। দারিদ্র্যের লজ্জা ঘুচিয়ে একটি ক্ষুধামুক্ত মানবিক সমাজ নির্মাণে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা (গউএ) অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আওয়ামী লীগের দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলের লক্ষ্য ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে দারিদ্র্যের অনুপাত ১৫ শতাংশেরও নিচে অর্থাৎ ১৩ শতাংশে নামিয়ে আনা। ইতোমধ্যে বার্ষিক দারিদ্র্য হ্রাসের হার নির্ধারিত ১.৭ থেকে ২.৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। নির্ধারিত হার ছাড়িয়ে অর্জিত হার বজায় থাকলে ২০২১ সালের আগেই, অর্থাৎ আগামী পাঁচ বছরেই দারিদ্র্যের অনুপাত ১৫ শতাংশে নেমে আসবে। বৈষম্য দূরীকরণে বর্তমান অগ্রগতির ধারা বজায় থাকবে।
৬.১ সামাজিক নিরাপত্তা : দারিদ্র্য হ্রাসে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্জিত গতিশীলতা এবং হত-দরিদ্রদের জন্য টেকসই নিরাপত্তা বেষ্টনীর যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা আরও জোরদার করা হবে। জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, অতি দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য ও টেস্ট রিলিফ ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্ভাবিত- একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ, গৃহায়ন, আদর্শ গ্রাম, গুচ্ছ গ্রাম, ঘরে ফেরা প্রভৃতি কর্মসূচি ফলপ্রসূ প্রমাণিত হয়েছে। এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা অব্যাহত থাকবে। দরিদ্রদের কর্মসংস্থানের কর্মসূচি গ্রাম পর্যায়ে বৃদ্ধি করা হবে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করা এবং সেই সঞ্চয় গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যবহার করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক স্থাপন করা হবে।
দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিশেষ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। একটি সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের কাঠামোর আওতায় গৃহীত কর্মসূচিগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হবে, যাতে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন অধিকতর ফলপ্রসূ ও দ্রুততর হয়।
৬.২ বর্তমান অভিজ্ঞতার নিরিখে বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে পেনশন ব্যবস্থা প্রচলনের উদ্যোগ শুরু হবে ২০১৮ সালে। এবং ২০২১ সালে সকলের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি জাতীয় পেনশন ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হবে।
কর্মসংস্থান
৭.১ আওয়ামী লীগের কর্মসংস্থান নীতির মূল লক্ষ্য উৎপাদনমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে আধাদক্ষ ও দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা। এ লক্ষ্য অর্জনে- (ক) মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হবে। (খ) গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও পূর্ত কাজকে গতিশীল করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। (গ) মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাত উৎসাহিত করা হবে। (ঘ) প্রশিক্ষিত যুবক, যুব মহিলাদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। (ঙ) দুই বছরের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রচলিত ‘ন্যাশনাল সার্ভিস’ কর্মসূচিকে পর্যায়ক্রমে সকল জেলায় সম্প্রসারিত করা হবে। (চ) কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি করা হবে। (ছ) কৃষি ও সেবা খাতে কর্মসংস্থানের বিদ্যমান সুযোগ আরও সম্প্রসারিত করা হবে এবং ব্যাপক সামাজিক কর্মসংস্থান প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৃত্তি এবং পেশা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকে সমন্বিত ও প্রসারিত করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ কর্মক্ষম সব বেকার ও প্রচ্ছন্ন বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
৭.২ অর্থনীতিতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় আয়ে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের অবদান ৩০ শতাংশ; ৪৫ শতাংশ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। কুটির শিল্প, তাঁত, রিকশা/ভ্যান প্রভৃতি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি উপকরণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ এবং শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। প্রচ্ছন্ন বেকারত্ব ও দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে আরও গতিশীল ও উৎপাদনশীল করা হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক খাতের সঙ্গে সম্পর্ক গভীরতর করা হবে।
কৃষি, খাদ্য, ভূমি ও পল্লী উন্নয়ন
৮.১ জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের ধারাকে সুসংহত করা হবে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বিবেচনায় রেখে দেশবাসীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশকে খাদ্যে উদ্বৃত্ত করা, আপদকালীন নির্ভরযোগ্য মজুদ গড়ে তোলার পাশাপাশি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করাই হবে কৃষি উন্নয়নের মূল লক্ষ্য। এজন্য সার, বীজ, সেচসহ কৃষি উপকরণে ভর্তুকি প্রদান, রেয়াতি সুদে প্রয়োজনীয় কৃষি ঋণ সরবরাহ এবং উৎপাদক কৃষক পর্যায়ে কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা হবে। কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে বর্গাচাষিদের জামানত ছাড়া কৃষি ঋণ প্রদান অব্যাহত থাকবে। কার্ডের মাধ্যমে কৃষি উপকরণ বিতরণ ও ভর্তুকি প্রদানে অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত যে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা গড়ে উঠেছে তা অব্যাহত রাখা হবে। সেচ সুবিধা বৃদ্ধি এবং ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহার বাড়ানোর নীতি অব্যাহত থাকবে।
ধান ছাড়াও গম, ভুট্টা, শাক-সবজি, তেল বীজ, মসলা, ফল-মূল প্রভৃতি ফসল এবং ফুল, লতা-পাতা-গুল্ম উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা এবং সম্ভাব্য সব খাতে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের প্রয়াস আরও জোরদার করা হবে। ভোজ্য তেল উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা মেটানো হবে।
মাছ, দুধ, ডিম, মুরগি, গবাদি পশু ও লবণের বাণিজ্যিক উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির ব্যাপারে উৎপাদক পর্যায়ে রাজস্ব ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। কৃষিপণ্যভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলাকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়া হবে। চিনি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে একদিকে উচ্চফলনশীল জাতের আখ উদ্ভাবন এবং একরপ্রতি ফলন বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া হবে; অন্যদিকে বিট চাষ প্রসারে জোর দেওয়া হবে। চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন, অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ এবং চিনিকলসমূহে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি করে সংবৎসর চালু রাখার মাধ্যমে চিনির উৎপাদন ব্যয় হ্রাস ও লাভজনক করা হবে।
কৃষি গবেষণাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাটের মতো অনাবিষ্কৃত অন্যান্য অর্থকরী ফসলের জীবনরহস্য আবিষ্কার এবং খরা, লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের সূচিত ধারাকে আরও বেগবান করা হবে। জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উদ্ভাবন ও ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
৮.২ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় খাদ্য ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ক্রমাগত বাড়ানোর নীতি অব্যাহত থাকবে। কেবল পরিমাণগত নয়, প্রতিটি মানুষের পুষ্টিমানসম্মত সুষম খাদ্য প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হবে। কৃষি উৎপাদনে যাতে মন্দাভাব ও নিরুৎসাহ দেখা না দেয়, সে জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণের জন্য প্রণোদনামূলক মূল্যে খাদ্যশস্য ক্রয় এবং পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তোলার নীতি-পরিকল্পনা অব্যাহত থাকবে।
৮.৩ খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো বন্ধের উদ্দেশ্যে প্রণীত ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশবাসীর জন্য ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হবে।
৮.৪ শিল্পায়ন, আবাসন ও ক্রমবর্ধমান নগরায়নের ফলে আবাদযোগ্য ভূমি ও জলাশয়ের পরিমাণ হ্রাসের উদ্বেগজনক হার নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানসম্মত ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করা হবে। আগামী পাঁচ বছরে দেশের সব জমির রেকর্ড ডিজিটালাইজড করার কাজ সম্পন্ন করা হবে। জমির সর্বোচ্চ যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। খাস জমি, জলাশয় এবং নদী ও সমুদ্র থেকে জেগে ওঠা জমি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভূমিহীন ও বাস্তুভিটাহীন হত-দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
৮.৫ পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্য হবে, গ্রামাঞ্চলে কর্মসৃজন, গ্রামাঞ্চলে নাগরিক সুযোগ-সুবিধার বিস্তৃতি সাধন এবং গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের হার কমিয়ে আনা। প্রতিটি ইউনিয়ন সদরকে পরিকল্পিত পল্লী জনপদ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আবাসন, শিক্ষা, কৃষিনির্ভর শিল্পের প্রসার, চিকিৎসাসেবা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানীয় জল ও পয়ঃনিষ্কাষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে উপজেলা সদর ও বর্ধিষ্ণু শিল্প কেন্দ্রগুলোকে আধুনিক শহর-উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন
৯.১ আমাদের জাতীয় উন্নয়নে শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন পালন করবে নিয়ামক ভূমিকা। শিক্ষা খাতে ২০০৯-১৩ পর্বে অনুসৃত নীতি ও সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বর্তমান শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে।
৯.২ প্রাথমিক শিক্ষার স্তর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হবে। নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উপবৃত্তি অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে গঠিত প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে স্নাতক পর্যন্ত বৃত্তি প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হবে। ভর্তির হার ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিনামূল্যে বই বিতরণ বাড়ানো হবে।
শতভাগ সাক্ষরতা অর্জনের লক্ষ্যে বয়স্কদের জন্য গৃহীত উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
৯.৩ শিক্ষার মানোন্নয়নকে সর্বাধুনিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত হ্রাস, প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি ও শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক-প্রশিক্ষণ, সকল পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি ও মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর ব্যবহার সম্প্রসারিত করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা অব্যাহতভাবে বাড়ানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল ও স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন করা হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়া রোধে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
৯.৪ মানবসম্পদ উন্নয়ন আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয়। আমাদের জনসংখ্যায় শিশু-কিশোরের প্রাধান্য বিবেচনায় এ কাজটি অতিরিক্ত গুরুত্ব দাবি করে। ইতোমধ্যে কতিপয় উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে মিলে আমরা মানবসম্পদ উন্নয়নে একটি সার্বিক কৌশল গ্রহণ করেছি। এ কৌশলের অংশ হিসেবে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এবং ব্যক্তি মালিকানা খাত ও সরকারি উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করা হবে। শিক্ষার বিষয়বস্তু বা কারিকুলামও চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবানুগ করা হবে। বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা এবং বিভিন্ন পেশায় ও প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ ঢেলে সাজানোর যে কাজ শুরু হয়েছে তা সুচারুভাবে সম্পন্ন করা এবং সারাদেশে এর প্রচলন নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া, প্রত্যেক উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন টেকনিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় ভোকেশনাল ট্রেনিং কোর্স প্রবর্তনের কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারিত করা হবে। প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মডেল বিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মূলধারার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে কম্পিউটার ও অনার্স কোর্স চালুসহ যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।
৯.৫ উচ্চশিক্ষার প্রসার এবং ভর্তি সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। বেসরকারি খাতে উপযুক্ত মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি প্রদানের নীতি অব্যাহত থাকবে। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও বিজ্ঞান চর্চা উৎসাহিত করা হবে।
৯.৬ শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, অপরাজনীতি, দলীয়করণ ও সেশনজট দূর করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনিক ও পরিচালন ব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার পাশাপাশি শিক্ষকদের দলাদলির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হতে পারে সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশগুলো পুনর্মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।
স্কুল ও কলেজের পরিচালন ব্যবস্থাকেও দলীয়করণমুক্ত, অধিকতর গণতান্ত্রিক, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণমূলক, দায়িত্বশীল এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করা হবে।
বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি
১০.১ আমাদের দেশের বিপুল জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদের সীমাবদ্ধতা, দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নের প্রেক্ষিতে কৃষি জমি ও জলাশয়ের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি খাতে গবেষণা ও উন্নয়নকে (আরএনডি) সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, আবিষ্ক্রিয়া, প্রযুক্তি ও মানবজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনে রাষ্ট্র ও সরকার বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান করবে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের বিশেষ মর্যাদা দান, তাদের চাকরির বয়সসীমা এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রণোদনা এমন পর্যায়ে আনা হবে যাতে তারা আরাধ্য গবেষণা সাফল্যের সঙ্গে শেষ করতে পারেন এবং নতুন নতুন আবিষ্কারে আত্মনিবেদন করতে পারেন।
১০.২ বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা এবং পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন ও হালনাগাদ করা হবে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরে আইটি শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা, মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার এবং ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারিত করার কর্মসূচি বাস্তবায়ন দ্রুততর করা হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে আইটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও কম্পিউটার শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার করা হবে।
সফটওয়্যার শিল্পের প্রসার, আইটি সার্ভিসের বিকাশ, দেশের বিভিন্ন স্থানে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইসিটি ইনকুবেটর এবং কম্পিউটার ভিলেজ স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন এসব কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। একই সঙ্গে আউট সোর্সিং ও সফটওয়্যার রপ্তানি ক্ষেত্রে সকল প্রকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
১০.৩ দেশজুড়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা যেমন থ্রি-জি চালু হয়েছে। ফোর-জি-ও চালু করা হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
১১.১ স্বাস্থ্যনীতি ও কর্মপরিকল্পনাসমূহের বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখা হবে। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও মাতৃমঙ্গল এবং সন্তান প্রসবের নিরাপদ সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রশিক্ষিত নার্স ও মহিলা ডাক্তার নিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মাতৃমৃত্যু হার ২০১৫ সালের মধ্যে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা প্রতি হাজারে ১৪৩ জন অর্জন এবং আরও কমানোর কর্মসূচি সম্প্রসারণ ও জোরদার করা হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস রোগীদের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও শিশুমৃত্যু হার আরও কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ২০২১ সালের মধ্যে গড় আয়ুষ্কাল ৭২ বছরে উন্নীত এবং জন্ম হার হ্রাসের লক্ষ্যে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি কার্যকর করা হবে। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের (ডাক্তার) উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সেবার মান উন্নত এবং ঔষধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মনিটরিং ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যায়ক্রমে জেলা থেকে উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত করার উদ্যোগ ত্বরান্বিত করা হবে। টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করা হবে।
১১.২ সকলের জন্য আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ সুপেয় পানি, প্রতি বাড়িতে স্যানিটেশন এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ভেজালমুক্ত খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
১১.৩ চিকিৎসা শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ত করা হবে। চিকিৎসা ও চিকিৎসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বাড়ানো হবে। নার্সিং ও মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষার সম্প্রসারণ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো হবে।
১১.৪ ইউনানি, আয়ুর্বেদ ও হোমিওপ্যাথিসহ দেশজ চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভেষজ ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে।
১১.৫ সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ এবং উদ্বেগজনক হারে ক্রমবর্ধমান ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতি অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ হ্রাস ও চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারণে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১১.৬ প্রতিবন্ধী কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। অটিস্টিক ও অন্য প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা, পুষ্টি, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ, কর্মসংস্থান, চলাফেরা এবং তাদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বিজ্ঞানসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।
নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা
১২.১ নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ দৃঢ়ভাবে অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে কেবল সংখ্যাগত সাম্য প্রতিষ্ঠাই নয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নারীর অধিকতর অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়ানো হবে। প্রশাসন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে নারীর অধিক সংখ্যায় নিয়োগের নীতি অব্যাহত থাকবে।
১২.২ নারীর প্রতি সহিংসতা, যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি, বৈষম্য বন্ধ এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে গৃহীত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে।
১২.৩ নারীর কর্মের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্রে এবং চলাফেরায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। নারীকে গৃহবন্দী রাখার জন্য ধর্মের অপব্যাখ্যা এবং নারী-বিদ্বেষী অপপ্রচার বন্ধে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধের পাশাপাশি কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারী শ্রমের মর্যাদা সুরক্ষা করা হবে। শিল্প-বাণিজ্য ও সেবা খাতে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রণোদনা, সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত ও বাড়ানো হবে।
শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম
১৩.১ শিশু-কিশোরদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার সংরক্ষণ সনদ অনুসরণ এবং জাতীয় শিশুনীতি হালনাগাদ করা হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইতিহাস চেতনা, জ্ঞানস্পৃহা ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে এবং তাদের আনন্দময় শৈশব নিশ্চিত করতে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পোশাক শিল্পের মতো অন্যান্য শিল্প এবং অসংগঠিত খাতেও শিশুশ্রম পর্যায়ক্রমে নিষিদ্ধ করা হবে। শিশু নির্যাতন বিশেষ করে কন্যা শিশুদের প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, তাদের নাশকতা ও সহিংসতার ঢাল হিসেবে ব্যবহার কঠোর হাতে দমন করা হবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বয়সে তরুণ। বাংলাদেশ প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা সৃজনশীল সাহসী তরুণ-তরুণীদের দেশ। তরুণ-তরুণীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, তাদের মেধা ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ অবারিত করা এবং জাতীয় নেতৃত্ব গ্রহণে সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য আওয়ামী লীগ সম্ভাব্য সকল রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আওয়ামী লীগ নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের হাতে আগামী দিনের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্বভার ন্যস্ত করবে।
যোগাযোগ : সড়ক, রেলওয়ে, বিমান ও নৌ-পরিবহন
১৪.১ দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক কর্মকা-, পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী পরিবহনের জন্য বিদ্যমান সড়ক ও জনপথ অপর্যাপ্ত হয়ে পড়েছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিদ্যমান সড়কের মেরামত, সংরক্ষণ, মানোন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং লেন সংখ্যা বাড়ানো হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে (ক) ইতোমধ্যে শুরু হওয়া পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা (খ) চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ (গ) ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চার লেন নির্মাণ সমাপ্তকরণ এবং (ঘ) পটুয়াখালীতে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দর-পায়রা বন্দরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া, ঢাকা-মংলা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে চার লেন নির্মাণের প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। দেশের বিদ্যমান সড়কপথগুলোর প্রশস্তকরণ এবং দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন সড়কপথ নির্মাণ করা হবে।
১৪.২ দ্বিতীয় যমুনা সেতু ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের কারিগরি ও অন্যান্য প্রস্তুতি দ্রুত সম্পন্ন করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ দুটি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করা হবে।
১৪.৩ অধিকতর পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী বিবেচনায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ঢেলে সাজানো হবে। রেল খাতে বর্ধিত বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। বিদ্যমান রেলপথ এবং কোচের সংস্কার, আধুনিকায়ন এবং যাত্রী ও মাল পরিবহনের ক্ষমতা বাড়ানো হবে। খুলনা-মংলা রেল সংযোগ, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-গাজীপুর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে লাইন সংখ্যা বাড়ানো হবে। ঢাকা-মংলা রেল সংযোগ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং ঢাকা মহানগরীকে ঘিরে সার্কুলার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। বাণিজ্যিক সক্ষমতার লক্ষ্যে দক্ষতা ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হবে। রেলওয়েকে লাভজনক করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
১৪.৪ বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিমানকে লোকসানি প্রতিষ্ঠান থেকে লাভজনক করার যে উদ্যোগ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার গ্রহণ করেছিল, তা আরও ফলপ্রসূ ও জোরদার করতে হবে। ইতোমধ্যে ৪টি বোয়িং সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও বিমান সংগ্রহ, অপচয়, অদক্ষতা ও দুর্নীতি রোধ করে বিমানের সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সামর্থ্য বাড়ানো হবে। ২০১৪ সাল থেকে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করা হবে।
ঢাকা ও কক্সবাজার বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। মংলা বিমানবন্দরের কাজ নতুন করে শুরু করা হবে।
ঢাকার অদূরে আন্তঃমহাদেশীয় যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তাবিত সর্বাধুনিক বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের চূড়ান্ত স্থান নির্ধারণ এবং নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
১৪.৫ নৌ-পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদীপথ খনন ও পুনর্খননের যে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, তা আরও জোরদার করা হবে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ক্রমশ ভরাট হয়ে যাওয়া নৌ-পথগুলো পুনরুদ্ধার ও খননের মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি, নৌ চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। প্রধান নদী ও নৌ-পথগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধি ছাড়াও ভরাট ও পরিত্যক্ত নৌ-পথগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদী পুনরুজ্জীবনের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ অব্যাহত থাকবে।
এজন্য প্রয়োজনীয় ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়েছে। মংলা বন্দরের জন্য নিজস্ব ড্রেজার ক্রয় করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে পণ্য পরিবহন ক্ষমতা বাড়ানো এবং নৌ-চ্যানেলগুলো নিয়মিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে যেভাবে নাব্য রাখা হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকবে।
১৪.৬ সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলার গৃহীত কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হবে।
মাদকাসক্তি প্রতিরোধ
১৫.১ আমাদের দেশে মাদকাসক্তি উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। মাদকের প্রধান শিকার তরুণ সমাজ। সামগ্রিকভাবে আমাদের সমাজ ও তারুণ্যের শক্তিকে মাদক ও নেশার হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কঠোরতম হাতে মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান এবং ব্যবহার বন্ধ করা হবে। অন্যান্য নেশা জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঘোষিত তামাক ও তামাক-জাত বিড়ি-সিগারেট সেবনকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে তামাকের আবাদ ও বিড়ি-সিগারেটের উৎপাদন-বাজারজাতকরণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুয়া ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়া হবে।
১৫.২ মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবার সুযোগ বৃদ্ধি, তাদের পুনর্বাসন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সামাজিক উদ্যোগ গড়ে তোলা হবে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, পাচার ও চোরাচালান বন্ধে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন : পরিবেশ ও পানিসম্পদ
১৬.১ বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগসমূহ অব্যাহত থাকবে এবং সম্প্রসারিত হবে। ২০০৯ সালে সরকারের গৃহীত বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনা মূল্যায়ন এবং হালনাগাদ করা হবে। জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডে অর্থবরাদ্দ অব্যাহত থাকবে এবং আন্তর্জাতিক উৎস হতে সহায়তা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১৬.২ বাংলাদেশে বিদ্যমান বন সংরক্ষণ, নতুন বন সৃজন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং উপকূল ও চরাঞ্চলে টেকসই বনায়নের কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশে পরিবেশের অধিকতর বিপর্যয় রোধ করার উদ্দেশ্যে উল্লিখিত পদক্ষেপ ছাড়াও পানিসম্পদ রক্ষা, নদী খনন, নদীর ভাঙন রোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, লবণাক্ততা রোধ ও খরা মোকাবিলায় সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া জোরদার করা হবে। সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ, লবণাক্ততা রোধ, সুন্দরবনসহ অববাহিকা অঞ্চলে মিঠা পানির প্রবাহ বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৬.৩ বায়ু ও পানি দূষণ প্রতিরোধে বিশেষ করে শিল্প-বর্জ্য ও মহানগর ও নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত করা হবে। ইতোমধ্যে গৃহীত প্রযুক্তিগত এবং আইনগত উদ্যোগের যথাযথভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রমিক ও প্রবাসী কল্যাণ
১৭.১ সংবিধানের ১৫, ২৮, ৩৮ ও ৪০ অনুচ্ছেদের আলোকে এবং আইএলও কনভেনশন অনুসরণে শ্রমনীতি ও শ্রমিক কল্যাণে বহুমুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। জীবনধারণের ব্যয়, মূল্যস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও পুনর্নির্ধারণ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। এ জন্য মজুরি কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট আইনসমূহের ভূমিকা বৃদ্ধি করা হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও শ্রমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ব্যবস্থার পাশাপাশি তাদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
১৭.২ পোশাক শিল্পের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর এবং কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। শিল্পের নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সকল শিল্প শ্রমিক, হত-দরিদ্র এবং গ্রামীণ কৃষি শ্রমিক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং প্রথা চালু করা হবে।
১৭.৩ প্রবাসে কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী শ্রমজীবীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির রক্ত সঞ্চালক উপাদান। বিভিন্ন দেশে আরও বেশি সংখ্যায় প্রশিক্ষিত কর্মী প্রেরণ এবং তাদের শ্রমলব্ধ অর্থের আয়বর্ধক এবং লাভজনক বিনিয়োগ নিশ্চিতকরণ সম্পর্কিত নীতি-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।
সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে নমনীয় শর্তে ও সুদে বিদেশে যাওয়ার জন্য এবং দেশে ফেরার পর স্থায়ী কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মসংস্থান এবং প্রবাস-আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য আরও অধিক সংখ্যক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হবে। ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির উদ্যোগ ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে বিদেশে আরও ২৩টি শ্রম উইং খোলার যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
নগরায়ন : পরিকল্পিত উন্নয়ন
১৮.১ ২০১১ সালের লোক গণনা অনুসারে বাংলাদেশে শহরে বসবাসকারী জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ। নগরায়নের মাত্রা প্রায় ২৮ শতাংশ। নেপাল বাদ দিলে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হারে শহরের জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও ভৌত অবকাঠামো বাড়ছে না। অপরিকল্পিত নগরায়ন নাগরিক জীবনে সৃষ্টি করছে দুঃসহ সমস্যা ও দুর্ভোগ। আওয়ামী লীগ আগামীতে সারাদেশের জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় নগরায়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।
গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন কমানোর লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থান এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। ইউনিয়ন সদর, উপজেলা সদর ও শিল্পাঞ্চলগুলোতে পরিকল্পিত জনপদ ও গ্রামীণ-শহর গড়ে তোলা হবে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে কৃষি জমি ও জলাশয় হ্রাসের হার কমানো এবং ভূমির সর্বানুকূল ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
১৮.২ রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের জন্য যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, দ্রুতগতিতে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে। ঢাকার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ কমানোর লক্ষ্যে যে ৪টি উপশহর বা স্যাটেলাইট শহর নির্মাণের বাস্তবায়নাধীন পরিকল্পনা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। ঢাকার যানজট নিরসনে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগুলোর নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা হবে। পরিকল্পিত মেট্রোরেল, মনোরেল, সার্কুলার রেলের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হবে। এ ছাড়া আরও ছোট-বড় উড়াল সেতু, টানেল এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। ক্রমবর্ধমান নগরায়নের ভৌগোলিক সুষম বিন্যাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভাগীয় সদরের জন্য যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নের কাজ দ্রুততর ও বিস্তৃত করা হবে। জেলা সদরসহ পুরনো শহরগুলোর পরিকল্পিত উন্নয়ন এবং নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
১৮.৩ পরিকল্পিত নগরায়ন ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং নগর প্রশাসনের বিকেন্দ্রায়ন করা হবে।
গণমাধ্যম ও তথ্য অধিকার
১৯.১ সকল প্রকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংরক্ষণ এবং অবাধ-তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার নীতি অবিচলিতভাবে অব্যাহত রাখা হবে। জনগণের তথ্য জানা এবং সরকারের সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রণীত তথ্য অধিকার আইন এবং তথ্য কমিশনকে অধিকতর কার্যকর ও ফলপ্রসূ করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তথ্যপ্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সামাজিক গণমাধ্যম এবং অনলাইন পত্রিকার ভূমিকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনলাইন পত্রিকা এবং সামাজিক গণমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়া হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আরও অধিক সংখ্যক কমিউনিটি রেডিও-র লাইসেন্স দেওয়া হবে।
১৯.২ সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গঠিত অষ্টম মজুরি বোর্ড বাস্তবায়িত করা হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
জাতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় স্বাধীনতা
২০.১ বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশে আওয়ামী লীগ সরকারের অনুসৃত নীতি ও কর্মপরিকল্পনা অব্যাহত থাকবে। বাংলা ভাষা সাহিত্য, চারু ও কারুকলা, সংগীত, যাত্রা, নাটক, চলচ্চিত্র এবং সৃজনশীল প্রকাশনাসহ শিল্পের সব শাখার ক্রমাগত উৎকর্ষ সাধন ও চর্চার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো হবে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতির সংরক্ষণ, প্রগতিশীল বিকাশ, চর্চা, মেলা, উৎসবসহ প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগসমূহকে উৎসাহিত করা হবে।
প্রত্যেক উপজেলায় মুক্তমঞ্চ নির্মাণের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। প্রতœতাত্ত্বিক অনুসন্ধান, গবেষণা ও উৎখননকে উৎসাহিত করা হবে। প্রত্নসম্পদ ও দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য আরও জাদুঘর নির্মাণ করা হবে।
পাঠকের মতামত:

- সীমান্তে আগ্রাসন আর মেনে নেব না : নাহিদ ইসলাম
- "পিআর পদ্ধতিতে কোনো দলই ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারবে না"
- কঠোর নিরাপত্তায় রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত
- হাসিনা-রেহানাসহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশ
- বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
- ডেঙ্গু আক্রান্ত ১২ হাজার ছাড়াল
- চার সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত
- ‘মবে’ জড়িতদের ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- "সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার বাড়ালে ব্যাংকে কেউ টাকা রাখবে না"
- চিকিৎসা না পেলে আবার জুলাই হবে : পঙ্গু হাসপাতালে আহতদের হুঁশিয়ারি
- "প্রশিক্ষণ শুধু পেশাগত জ্ঞান নয়, দায়িত্ববোধও বাড়ায়"
- ইরান ভিন্ন জায়গায় পরমাণু কর্মসূচি ফের শুরু করতে পারে: ট্রাম্প
- মধ্যরাতেই নারী দলের সংবর্ধনা, ভক্তদের নানা পরিকল্পনা
- তানভিরের ৫ উইকেট, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
- যেভাবে মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার
- ‘রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে স্বৈরাচারের পুনঃপ্রবর্তন ঠেকানো যাবে’
- পতিত আওয়ামী স্বৈরাচার দেশকে কারবালার প্রান্তর বানিয়েছিল: মির্জা ফখরুল
- এ অবস্থায় ভোট হবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে গণহত্যার শামিল: জামায়াত আমির
- নতুন আইন কোনোভাবেই প্রেস ফ্রিডমে হস্তক্ষেপ করবে না: প্রেস সচিব
- এখনও চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসী-মাফিয়া সিস্টেম বদলায়নি: নাহিদ ইসলাম
- অনেকে জামানত বাজেয়াপ্তের ভয়ে আনুপাতিক নির্বাচন চান: সালাহউদ্দিন
- পুশ ইন করতে হলে হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান: নাহিদ
- এনসিপির জুলাই প্রদর্শনী চলার মধ্যে দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ
- বনানীর হোটেলে নারীদের ওপর হামলায় অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে
- নির্বাচনের আগে টেলিকম নীতিমালা প্রণয়নে বিএনপির উদ্বেগ
- আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- যেকোনো ব্যর্থতার ফল চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে: ডা. সায়েদুর রহমান
- বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতা আরও বাড়াতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
- রাজনৈতিক সংকটের অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- সতীর্থ জোটার মৃত্যুতে রোনালদোর আবেগঘন বার্তা
- ডাবল সেঞ্চুরিতে যত রেকর্ড গড়লেন গিল
- শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
- গাজার মানুষ নিরাপদে থাকুক, এটাই চাই : ট্রাম্প
- পাবনায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩
- ওয়ালটন ডিজি-টেককে অ্যাডভান্সড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সেবা দেবে ব্র্যাক ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংকের সাথে ড্যাফোডিল কম্পিউটারস-এর চুক্তি
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইনের পুরস্কার প্রদান
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি বিনিয়োগ আদায়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ও ‘শহীদ দিবস’ পালন বাধ্যতামূলক
- গণঅভ্যুত্থান শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়: হাসনাত
- জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মব নয়: মাহফুজ আলম
- গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর
- পুরনো সিস্টেম ও দখলদারিত্ব ফিরে আসার চেষ্টা চলছে: নাহিদ
- ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপন খসড়া পর্যায়ে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে ঐকমত্য: আলী রীয়াজ
- গাজায় ক্যাফে, স্কুল এবং ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৯৫
- আল হিলালের কাছে হেরে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ম্যানসিটির
- শান্তর ওপর আস্থা রাখছেন অধিনায়ক মিরাজ
- সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করলো সরকার
- আমরা এক থাকলে আমাদের সামনে কিছুই টিকতে পারবে না: ফারুকী
- আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন : রুবিওকে ড. ইউনূস
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
- আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই: নাহিদ ইসলাম
- ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’
- ১ জুলাই : আওয়ামী লীগ শাসন পতনের অভূতপূর্ব সূচনা
- ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালিত
- ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত
- আবারো ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পেল ওয়ালটন হাই-টেক
- ঢাকায় হালকা বৃষ্টির আভাস, দিনভর আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা
- বিএসইসি-অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে সমন্বিত সভা
- মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
- সামাজিক ব্যবসা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে –প্রধান উপদেষ্টা
- ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তার বদলি
- ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি
- "শান্তিপূর্ণ আচরণ করলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে"
- মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
- ভুলবশত গুলির ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়: আসিফ মাহমুদ
- মোট রিজার্ভের নতুন মাইলফলক, অতিক্রম করলো ৩১ বিলিয়ন ডলার
- ঢাকার আকাশ মেঘলা, হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক আজ
- মুরাদনগরের ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা দায়ী
- এইচএসসি দ্বিতীয় পরীক্ষা আজ : সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ
- কেক পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
- মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
- ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তার বদলি
- মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
- সামাজিক ব্যবসা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে –প্রধান উপদেষ্টা
- আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন : রুবিওকে ড. ইউনূস
- ভুলবশত গুলির ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়: আসিফ মাহমুদ
- ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’
- মোট রিজার্ভের নতুন মাইলফলক, অতিক্রম করলো ৩১ বিলিয়ন ডলার
- মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
- সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করলো সরকার
- আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- ১ জুলাই : আওয়ামী লীগ শাসন পতনের অভূতপূর্ব সূচনা
- ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি
- ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত
- আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই: নাহিদ ইসলাম
- ঢাকায় হালকা বৃষ্টির আভাস, দিনভর আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা
- আমরা এক থাকলে আমাদের সামনে কিছুই টিকতে পারবে না: ফারুকী
- বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতা আরও বাড়াতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
- ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান
- পুশ ইন করতে হলে হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান: নাহিদ
- জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মব নয়: মাহফুজ আলম
- বিএসইসি-অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে সমন্বিত সভা
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
- আবারো ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পেল ওয়ালটন হাই-টেক
- গাজায় ক্যাফে, স্কুল এবং ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৯৫
- শান্তর ওপর আস্থা রাখছেন অধিনায়ক মিরাজ
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর
রাজনীতি - এর সব খবর
