thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

মানবাধিকার লংঘনের বছর ২০১৩

২০১৪ জানুয়ারি ০২ ২২:৪৯:২৫
মানবাধিকার লংঘনের বছর ২০১৩

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মানবাধিকার লংঘনের বছর হিসেবে ২০১৩ কে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা (বিএমবিএস)।

রাজধানীর কলেজ রোড এলাকায় বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক আবুল বাসার এ কথা বলেন। এ সময় মানবাধিকার বিষয়ক বিএমবিএসের বার্ষিক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনটি তিনি উত্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে আবুল বাসার বলেন, ‘এ বছরটি রাজনৈতিক দল ও সরকার কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। দেশের সকল প্রধান ইস্যুতেই ক্ষমতাসীন দল ও প্রধান বিরোধী দল ছিল বিপরীতমুখী কঠোর ও অনমনীয় অবস্থানে। পরস্পরের মধ্যে ছিল অবিশ্বাস ও আক্রমনাত্বক মনোভাব। শিক্ষা, বিদ্যুৎ, নারী উন্নয়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং ইতোমধ্যেই একজনের রায় কার্যকর, বিশ্বজিৎ হত্যা বিচারের রায়ের মত কিছু ইতিবাচক দিক থাকলেও সার্বিকভাবে মানবাধিকার, দেশের অর্থনীতি ও জননিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক হিংসা ও অবিশ্বাসের ফলে বছর জুড়ে নানান সহিংসতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন দশ হাজার ৪০৩ জন আর নিহত হয়েছেন ৫৭৩ জন। সামাজিক অসন্তোষ ও প্রতিহিংসায় এ বছর আহত হয়েছেন নয় হাজা ৯১৭ জন এবং নিহত হয়েছেন ৫৬০ জন।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১৩ সালে ১৪২ জন নারী এবং ১৩৫ জন শিশু ধর্ষিত হয় যা ২০১২ সালের তুলনায় শতকরা ১৩৩ ভাগ বেশি। এছাড়া নারীর ২১৭টি এবং পুরুষের ৫৫১টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থাহীনতায় জনগণ অপরাধীকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ না করে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিয়ে গণপিটুনি দিয়েছে। যাতে এ বছর মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের।

টিআইবির এক জরিপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাসার বলেন, ‘এবছর গোড়ার দিকে টিআইবির এক জরিপে দেখা গেছে দেশের প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগ এমপি-মন্ত্রীরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তার প্রতিফলন এবার নির্বাচনী হলফ নামার তথ্যে পাওয়া যায়। এ সকল এমপি-মন্ত্রীদের কারো কারো সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ গুণ। বড় ট্রাজেডি হলো সরকার এর হিসাব না নিয়ে বরং ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা যা পক্ষান্তরে দুর্নীতিকেই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়।’

সরকারের এমন কার্যক্রম সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ (জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস), ১১ অনুচ্ছেদ (মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা), ১৫ অনুচ্ছেদ (রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিমালা), ২৬-৪৭ অনুচ্ছেদ (মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার) লংঘিত হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকার বিরোধী দলের ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ঠেকাতে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে ঢাকাকে বিছিন্ন করে রেখেছিল। এমনকি ট্রেন ও নৌকার মত যানবাহনও সরকারি ইচ্ছায় বন্ধ হয়েছে, যা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহারের চরম দৃষ্টান্ত।’

দেশের এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে জিডিপি ৫ শতাংশে নেমে যাবে বলে আশংকা করেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচন ও সংবিধানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচন না করে দেশে একটি সত্যিকারের নির্বাচন করা প্রয়োজন। জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন না ঘটিয়ে সংবিধানের দোহাই দেওয়া সংবিধানের মূলনীতি পরিপন্থি। মানুষের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়।’

আগামী থেকে সরকার এবং বিরোধী দল উভয়েই গণতন্ত্র চর্চা করবেন, গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলবেন এবং জনগণের ভাষা বুঝবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সিগমা হুদা, পারভিন আখতার।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমসি/জানুয়ারি ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর