thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

যে কারণে রাগান্বিত হন খালেদা জিয়া

২০১৪ জানুয়ারি ০৩ ২২:২৭:৫৯
যে কারণে রাগান্বিত হন খালেদা জিয়া

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : গত ২৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোটের গণতন্ত্রের অভিযাত্রার ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য দুপুর পৌনে ৩টার দিকে তার গুলশানের বাসা থেকে বের হন খালেদা জিয়া। কিন্তু তিনি তার বাসার গেটের সামনে আসলেই পুলিশ তার গাড়ী আটকিয়ে দেয়। এ সময় রাগান্বিত হয়ে পড়েন তিনি।

খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠজনদের মতে, হঠাৎ করে এই রেগে উঠার ঘটনা তার স্বভাববিরুদ্ধ। খালেদা জিয়াকে দেশের মানুষ সব সময়ই একজন ঠাণ্ডা মাথার মানুষ হিসেবে দেখে আসছেন দীর্ঘদিন।

ওই দিন ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে দিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান খালেদা জিয়া। কিন্তু দীর্ঘসময় আহ্বান জানানো সত্ত্বেও পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সদুত্তর দেওয়া হয়নি। পুলিশ শুধু তাকে জানিয়ে দেয়, উপরের নির্দেশে তাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হবে না।

এভাবে বেশ সময় কিছু সময় কেটে যাওয়ার পর খালেদা জিয়া গাড়ী থেকে বের হয়ে তার বাড়ির মূল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ সংবাদকর্মীদেরও বিরোধীদলীয় নেত্রীর কাছে যেতে বাধা দেয়।

এ সময় বিপুল সংখ্যক মহিলা পুলিশ সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির গেটের সামনে ব্যারিকেডের ভেতর নিজেরা অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। খালেদা জিয়া তখন কোনো দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার জন্য তার সামনে আসতে আহ্বান জানান। কিন্তু দীর্ঘসময় তিনি এজন্য অপেক্ষা করলেও কোনো দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা তার সামনে আসেননি। একই সময় মহিলা পুলিশরা উচ্চস্বরে একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিলেন। অনেকে কৌতুহলী হয়ে খালেদা জিয়াকে দেখার জন্য একজন আরেকজনকে খোঁচাখুঁচি ও খুনসুটি করছিলেন। বেশ হৈ-হুল্লোড় পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে। এতে খালেদা জিয়া বিরক্ত হয়ে উঠেন।

এসব বিশৃঙ্খলা দেখে খালেদা জিয়া তার মেজাজ ঠিক রাখতে না পেরে হঠাৎ মহিলা পুলিশদের উদ্দেশ্যে ধমকে উঠেন। তিনি বলে উঠেন, ‘এই মেয়েরা চুপ। চুপ কর। এত কথা বল কেন? কয়দিন হয়েছে চাকরি করো। চাকরি করছো, চাকরি করবে। কিন্তু চিৎকার-চেঁচামেচি কর কেনো? বেয়াদব!’

এরপর তিনি বলে উঠেন, ‘বাড়ি কোথায়? গোপালী? দেশটা কি কারও পৌত্রিক সম্পত্তি? গোপালগঞ্জের নামই থাকবে না।’ আওয়ামী লীগের দালালী করো। কোথায় তোমাদের অফিসার? যে এতক্ষণ অনেক কথা বললো। এখন সে কোথায়? তাকে বল আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই, বুঝলে?’

তিনি আরও বলেন, ‘কি বুঝলে না আমার কথা? আমিতো বাংলায়ই কথা বলছি, নাকি নাকি অন্য ভাষাতে কথা বলতে হবে?’

বিএনপি চেয়ারপারসনের এমন রাগের কথা সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর গোপালগঞ্জবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে এর পক্ষ-বিপক্ষেও আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

যাদের উদ্দেশ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন, সেই মহিলা পুলিশের কয়েক সদস্যর সঙ্গে আলাপ করলে তারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘ম্যাডাম যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখনও আমাদের অনেকে ডিউটি করেছি। তিনি কখনও রাগ করেন না। কোনো কারণে হয়তো তিনি একটু রেগে গিয়েছিলেন। এতে আমরা কিছু মনে করিনি।’

(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/জেএম/জানুয়ারি ০৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর