ভোটগ্রহণের দায়িত্বে কর্মক্লান্ত ব্যাংক কর্মকর্তারাও
ডিসেম্বর মাস জুড়ে ছুটির দিনেও (শুক্রবার) অফিস করে কর্মক্লান্ত অনেক ব্যাংক কর্মকর্তাকে রবিবার ভোটগ্রহণের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। টানা অফিস করে বিপর্যস্ত এসব ব্যাংকারের জন্য তা `মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো অবস্থা তৈরি করেছে। বিরোধী জোটের ডাকা হরতালের মধ্যে এই দায়িত্ব তাদের জীবনকে অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে ডিসেম্বর মাস জুড়ে ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশনা প্রদান করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে রবিবার নির্বাচন উপলক্ষে সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনের কোথাও ব্যাংক কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্বের বিষয়টি উল্লেখ নেই। এর পরও রিটার্নিং অফিসার কিংবা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী অনেক ব্যাংক কর্মকর্তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যমুনা ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, আমার অফিস ফেনীতে।আর নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে হবে প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখন সেখানে যেতে হবে। যেখানে গতকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে হামলা হচ্ছে সেখানে রাতে থাকতে হবে নির্বাচনী কেন্দ্রে।
এই বিষয়ে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের একটি প্রথম সারির ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেছেন, ব্যাংকগুলোর অভিভাবক বাংলাদেশ ব্যাংক। লেনদেন না হলেও ছুটির দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দেয়। টানা অফিস করতে করতে ব্যাংকাররা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
রূপালী ব্যাংকের এক সিনিয়র অফিসার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ব্যাংকে চাকরি করতে এসেছি। টানা কাজ করতে করতে এখন আমার পাগল হবার দশা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসরকারী ব্যাংক এসআইবিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, গত সপ্তাহ জুড়ে টানা কাজ করেছি আমরা। এখন আবার রবিবার নির্বাচনী দায়িত্ব। এভাবে টানা আট দিন কাজ করা পীড়াদায়ক।
সাধারণত সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং অফিসার(জেলা প্রশাসক)ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার(টিএনও) ব্যাংকগুলোর কাছে জনবল চেয়ে পাঠায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলো তাদের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের তালিকা দেয়। সেখান থেকে প্রিজাডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাডিং অফিসারসহ অন্যান্য দায়িত্ব বন্টন করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখার ব্যবস্থাপক বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যাংকের কাজ করবে। এখন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনের কাজ করতে হবে।
নির্বাচনের প্রিজাডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করার জন্য নিয়োজিত বেসরকারী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বিনা কারণে ছুটির দিনে ব্যাংক খোলা রাখা হয়। এখন আবার নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ যেন মগের মল্লুক। যা ইচ্ছা তা করছে। কোন নিয়মনীতি নেই।
(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/এইচএসএম/ এনআই/জানুয়ারি ০৪, ২০১৪)