দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা অপ্রীতিকর ঘটনার পাশাপাশি ১৭ জেলায় ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আগুনে পুড়েছে দেড় শতাধিক ভোটকেন্দ্র।

দ্য রিপোর্টের অফিস ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর :

সুনামগঞ্জ : জেলার ধর্মপাশা, মধ্যনগর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার ৩টি ভোটকেন্দ্র আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কেন্দ্রগুলো হলো- ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরস ইউনিয়নের শরীসাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্যনগর থানার দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউনিয়নের গড়াকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার ভোররাতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে এসব ভোটকেন্দ্রের আসবাবপত্র ও বই পুড়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শুভ্রারানী কর বলেন, ঘটনার দিন সকালে দফতরির কাছে স্কুলে আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে কে বা কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা জানা যায়নি। এ ঘটনার পর দুপুরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে আগুনসহ ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। ভোট কেন্দ্রে একদল দুর্বৃত্ত পর পর পাঁচটি ককটেল নিক্ষেপ করে এবং পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে ভোট কেন্দ্রের একটি কক্ষের বেঞ্চ, চেয়ার এবং একটি দরজার আংশিক পুড়ে যায়।

কোটচাঁদপুর থানার ওসি শাহাজান খান ককটেল বিস্ফোরণ ও আগুন দেওয়ার ঘটনা স্বীকার করে জানান, দুর্বৃত্তদের আগুনের ভোট কেন্দ্রের তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

অন্যদিকে শনিবার ভোররাতে জেলার শৈলকুপা ও সদর উপজেলার ৩টি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভোটকেন্দ্র ৩টি হলো শৈলকুপার ললিত ভূঁইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার বিষয়খালী ও মহারাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান দ্য রিপোর্টকে জানান, শৈলকুপা উপজেলার পৌর এলাকার ললিত ভূঁইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোররাতে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে বিদ্যালয়টির চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ও বই-পুস্তকসহ আসবাবপত্র পুড়ে যায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার শহরতলী ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে শনিবার ভোরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারটি কক্ষে সিলিং ফ্যান ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এ ছাড়া শুক্রবার রাতে চরইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রেও আগুন দেয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুর রব ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করে দ্য রিপোর্টকে জানান, বিদ্যালয়ে কে বা কারা আগুন দেওয়ায় চারটি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল-৫ (সদর) ও টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভুঞাপুর) আসনে শনিবার ভোরে ৪টি ভোটকেন্দ্রের দরজায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে ভোটকেন্দ্রের ৪টি দরজা পুড়ে গেছে। তবে ভোটকেন্দ্রের কোনো সরঞ্জামের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে জানান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ঢেলি করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কয়েকজন দুর্বৃত্ত আগুন লাগায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন সরকার দ্য রিপোর্টকে জানান, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের গোপালপুর উপজেলা মাহমুদপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও ভাদুরীর চর এলাকায় দুটি ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা। এতে দরজার একটি অংশ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

অন্যদিকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকেটাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ডেইলি করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

বগুড়া : বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রের পাশে ব্র্যাক পরিচালিত প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এতে ওই ঘরটির সামান্য পুড়ে যায়।

শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল মান্নান দ্য রিপোর্টকে জানান, শাজাহানপুর উপজেলায় শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোনো ভোটকেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উপজেলার মাদলা এলাকার একটি ভোটকেন্দ্রের পাশে ব্র্যাক স্কুলে রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছিল।

কুমিল্লা : কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ভোট কেন্দ্রে পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টায় উপজেলার পীর যাত্রাপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দুর্বৃত্তরা রাত পৌনে ১০টার দিকে মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুটি ককটেল ও একটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে মাদ্রাসার বারান্দায় আগুন ধরে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শনিবার দুটি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

এছাড়া জেলার সীতাকুন্ডে সৈয়দ আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে টানানো সামিয়ানা ও ৩টি বুথে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার বাবুল আক্তার (গোয়েন্দা) জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরপরই যৌথবাহিনীর অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়লে তারা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন।

খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আব্দুল হালিম, ওসি আজিজুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এসএম হাবিবুর রহমান জানান, দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে স্যানিটারি পাইপের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দিনাজপুর : জেলার পার্বতীপুরে উপজেলার ঢাকার মোড় এলাকায় শনিবার দুপুরে জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার পর উক্ত ভোট কেন্দ্রে সেনা সদস্যরা সর্তক অবস্থান নেয়। এছাড়া দিনাজপুর শহরের ৪টি ব্যাংকসহ অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে তারা।

ফেনী : জেলারদাগনভুঞা ও সোনাগাজীর বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। শনিবার বিকেলে নবাবপুর ইউনিয়নের অন্নদাচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের চরদরবেশ বাগিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সেনেরখিল উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া শুক্রবার ভোরে দাগনভুঞার সুলতানা মেমোরিয়াল হাইস্কুল, মাতিভুইয়া করিমুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় ও গজারিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়।

সিলেট : জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় ২টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার গভীর রাতে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং তুবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

আগুনে তুবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি করে ভোটকেন্দ্র পুড়ে গেছে।

তুবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম জানান, শুক্রবার রাত ১টার দিকে দুর্বৃত্তরা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আগুন দেয়। আগুনে কক্ষের দরজা, জানালা ও আসবাবপত্র পুড়ে যায়। ওই কক্ষটিতে রবিবার ভোটগ্রহণের কথা ছিল।

জৈন্তাপুর থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দুটি স্কুলে আগুন দেওয়ার ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে- নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্যই দুর্বৃত্তরা এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে।

মৌলভীবাজার : জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী বছিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে শুক্রবার গভীর রাতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুন দেওয়ার পরপরই এলাকাবাসী আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আগুন দিয়েছিল তবে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ময়মনসিংহ : শনিবার সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গৌরীপুর উপজেলার নিজাম উদ্দিন আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্বনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পুংগাই রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, গফরগাঁও উপজেলার কান্দিপাড়া ও ছাপিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ত্রিশাল উপজেলার মান্দানিয়া ও বাগদারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আসিম ইউনিয়নের কালাইপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাক্তা ইউনিয়নের কাঁচিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এতে কোথাও কোথাও দরজা-জানালা ও বেঞ্চ পুড়ে যায়।

জেলা প্রশাসক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী জানান, সামান্য অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে দূর্বৃত্তরা। এতে ভোট নেওয়ায় প্রভাব পড়বে না।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের কুঞ্জমহিপুর ও তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ব্যালট পেপারসহ ভোট গ্রহণের উপকরণ ছিনিয়ে নিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।একইসঙ্গে তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে তারা। শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ভোট গ্রহণ সামগ্রী কুঞ্জমহিপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথে এবং তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌছানোর পর ১৮দলের কর্মীরা ওই ঘটনা ঘটায়।

তাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সহকারী অধ্যাপক সাবদার হোসেন বলেন, ভোটকেন্দ্রে পৌছানোর পর অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে ব্যালট পেপারসহ সবকিছু কেড়ে নেয় দুস্কৃতকারীরা। পরে সমস্তকিছু ভোট কেন্দ্রেই অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার (চলতি দায়িত্বে থাকা) ও সমাজ সেবা কর্মকর্তা শরিফুল আলম বলেন, ওই কেন্দ্রে নতুন করে আবারো ব্যালট পেপারসহ ভোট গ্রহণ উপকরণ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই সেখানে সেনাবাহিনীসহ অতিরিক্ত পুলিশ অভিযানে নেমেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফরহাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

অন্যদিকে শুক্রবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত পলাশবাড়ীতে ৩টি ভোট কেন্দ্রসহ ৪টি বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।

ভোটকেন্দ্র গুলো হলো-পলাশবাড়ী সদর ইউনিয়নের মহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিশোরগাড়ি ইউনিয়নের সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া উপজেলা সদরের বঙ্গবন্ধু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও আগুন দেওয়া হয়েছে।

পলাশবাড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর ১-রামগঞ্জ আসনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুক্রবার গভীর রাতে দূর্বৃত্তরা ৯টি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে ভোট কেন্দ্রগুলোর কয়েকটি চেয়ার টেবিলসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নতুন বই পুড়ে গেছে।

অগ্নিসংযোগের ফলে লামচর ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম করপাড়া নূরে মদিনা দাখিল মাদ্রাসা, শাহজকি উচ্চ বিদ্যালয়, বদরপুর দাখিল মাদ্রাসার বেশ কয়েকটি চেয়ার-টেবিলসহ শিক্ষার্থীদের জন্য আনা নতুন কয়েকশ বই পুড়ে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলার ৬নম্বর লামচর ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বেগম জানান, ভোররাতে হঠাৎ স্কুলটিতে আগুন দেখা যায়। এ সময় ফজরের নামাজ পড়তে আসা লোকজনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু বই পুড়ে যায়।

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করীম ভূইয়া জানান, আমরা একটি ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দীন জানান, আমরা ৬টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়ার খবর পেয়েছি। নির্বাচনী আসবাবপত্র প্রেরণের পর আমি ভোটকেন্দ্র গুলো পরিদর্শনে যাব। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ঘটনাটি অবহিত করা হয়েছে।

মানিকগঞ্জ : শিবালয়ের নিহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মালুচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে শুক্রবার রাতে দুর্বত্তরা আগুন দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নিহালপুর ভোট কেন্দ্র ও মালুচী ভোট কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে লোকজন এসে আগুন নিভাতে সক্ষম হয়েছে।

এ ব্যাপারে শিবালয় থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার দু’টি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার ভোররাতে বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চরনবীপুর কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলুয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে দুটিতে আগুন দেওয়া হয়। কর্তব্যরত পুলিশ আগুন দেখতে পেয়ে তা নিভিয়ে ফেলে।

এ ঘটনার পর থেকে বেলকুচি উপজেলার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এপি/জেএম/জানুয়ারি ০৪, ২০১৪)