আনুষ্ঠানিকতার ভোট আজ, শঙ্কায় দেশ
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার ভোট আজ। ইতোমধ্যে এই সংসদের ক্ষমতাসীনরা সরকার গঠনের মতো শক্তি করায়ত্ত করেছেন। ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে ভোট ছাড়াই ক্ষমতাসীন দলগুলোর ১৫৩ জন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, যা শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে। বাকি আসনগুলোতে নিজেদের মধ্যে শুধু প্রতীকের লড়াইয়ের আয়োজন করেছে ক্ষমতাসীনরা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে দেশবাসীর তাই কোনো আগ্রহ নেই। এমনিতেই এই ভোটে শতকরা ৫২ জন ভোটারের ভোটের দরকার হচ্ছে না। পাশাপাশি একই দল বা জোটের মধ্যে চলছে নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রীতি ম্যাচ। সে কারণে বাদবাকি ভোটাররা ভোট দিলেও ক্ষমতার কেন্দ্রে কোনো পরিবর্তন ঘটছে না আজকের এই ভোটে।
এরপরও এই ভোট আয়োজনের জন্যে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও সেনাবাহিনী থাকছে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে। তাদের দায়িত্ব শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা। প্রশাসন ও ম্যাজিস্ট্রেটও থাকছেন। ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োজিত হয়েছে বিপুলসংখ্যক প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার। ঝুঁকিপূর্ণ পাহারায় রাখা হয়েছে হেলিকপ্টার। এটি চিত্রের একদিক।
চিত্রের অন্যদিক হলো প্রধান বিরোধী দল ও জোটসহ যে সব রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বর্জন করেছে তারা শুধু বয়কট করেই বসে নেই। নির্বাচন ঠেকানোর জন্য আন্দোলনের কর্মসূচির পাশাপাশি শক্তির লড়াইয়েও নেমেছে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবির সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবি। এতেই গত কয়েক মাসে ব্যাপক জানমাল খোয়া গেছে। দেশ কার্যত হয়ে পড়েছে অচল। ভোট ঠেকানোর সর্বশেষ লড়াইয়ে সহিংসতার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। বিনা ভোটে সর্বাধিক সংখ্যক নির্বাচনের মতোই ইতোমধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক ভোট কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভোট অনুষ্ঠান পর্যন্ত পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় মূলত সেই শঙ্কা নিয়ে দেশ অপেক্ষার প্রহর গুনছে।