কানাগলিতে আটকে গেল নাতো গণতন্ত্র?
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আদম সন্তানের প্রাণহানি, ৩৭টি কেন্দ্রে শূন্যভোট, অগণিত কেন্দ্রে নামমাত্র ভোট, ৩৯৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিতের মধ্য দিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল গতকাল। ভোটের আগেই ভোটাধিকার হারিয়েছেন ১৫৩টি আসনের ভোটাররা। এই আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ৫ জানুয়ারির আগেই নির্বাচিত হয়ে গেছেন দল মনোনীতরা।
জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এই নির্বাচনকে ভোটারশূন্য ও বিতর্কিত আখ্যায়িত করেছে। দেশীয় বিভিন্ন মিডিয়া ভোটার উপস্থিতি নিয়ে যে খবর দিয়েছে তাতে উপস্থিতির হার ডবল ডিজিট ছোঁয়নি। কম ভোটার উপস্থিতির কথা স্বীকার করলেও নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভোটার উপস্থিতির হার ৩০ শতাংশের কাছাকাছি দাবি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে ভোটে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই ভোটে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে।
নির্বাচন বর্জনকারী প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতারা জোটের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন করায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাদের দাবি- এর ফলে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে।
সরকার, নির্বাচন কমিশন, বিরোধী দল যে যার অবস্থান থেকে নির্বাচন নিয়ে তাদের মতামত দিলেও যে জনগণের জন্য ভোটের আয়োজন তাদের প্রকৃত মতামত জানার কোনো সুযোগ এই নির্বাচনের মাধ্যমে মেলেনি।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে তার গুরুত্ব পূর্বেই হারিয়েছিল সেটা বোঝার জন্য বেশি জানা-বোঝার দরকার নেই। এ সত্ত্বেও কেন এই নির্বাচনটি হল তা জনগণের কাছে এখনো পরিষ্কার নয়। তবে জনগণ এতটুকু বুঝেছিল যে, এই নির্বাচনে তাদের কোনো লাভ নেই। বলা যায়, সে কারণে দেশে একটি জনগণের সম্পৃক্ততাহীন সংসদ উপহার দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পক্ষ ও বিপক্ষের দাবি মতে, গণতন্ত্রের বিজয় ঘটল নাকি গণতন্ত্র কানাগলিতে আটকে গেল তা বোঝা যাবে আগামী দিনগুলোতে।