বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে সাঁকো দিয়ে মালামাল খালাস
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : উত্তরাঞ্চলের প্রধান নৌবন্দর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ীর ২নং জেটির স্টিলের স্পার্ড ভেঙে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ থেকে কোনো পণ্য ওঠানামা করানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
একটি দায়িত্বশীল সূত্রে প্রকাশ, এ বন্দরের জেটির সংখ্যা ৩টি। এর মধ্যে দুটি সচল থাকলেও ২নং জেটি প্রায় ৪ মাস ধরে বিকল থাকায় পণ্য খালাসে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। ধীরগতিতে পণ্য খালাসের কারণে বন্দরে ব্যাপকহারে জাহাজজটের সৃষ্টি হয়েছে। নৌবন্দর ঘাট এলাকায় শতাধিক ইউরিয়া সারবোঝাই জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২নং জেটির পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে বিকল্প ব্যবস্থায় জাহাজ থেকে সার নামানোর কাজ শুরু করছে। এ কারণে বন্দরের শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সারের বস্তা মাথায় নিয়ে ওঠানামা করছে।
বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা দ্য রিপোর্টকে জানান, আশির দশকে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় সার, সিমেন্ট, পাথর, কয়লাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য কম খরচে সরবরাহের উদ্দেশ্যে তৎকালীন সরকার বাঘাবাড়ীর যমুনা, বড়াল ও করতোয়া নদীর উত্তর মোহনায় দ্বিতীয় শ্রেণীর মানসম্পন্ন একটি পূর্ণাঙ্গ এ নৌ-বন্দর স্থাপন করা হয়। বন্দর স্থাপনে বড়াল নদীর উত্তর পাশে প্রায় ৩৫.২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে খাদ্য বিভাগকে ৩ একর, বিএডিসিকে ২ একর, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে ৩ একর ও আবহাওয়া অধিদফতরকে ০.৭৬ একর ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। অবশিষ্ট জায়গার উপর গড়ে তোলা হয় আধুনিক মানসম্মত উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ নৌ-বন্দর।
এ বন্দরের তিনটি জেটির মাধ্যমে জাহাজ থেকে সার, কয়লা, পাথর, ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী উঠানো-নামানো করা হয়। নৌবন্দরে সারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে ১২-১৩টি জাহাজ ভিড়ে থাকে প্রতিদিন। এতে দুটি জেটি দিয়ে এতোগুলো জাহাজ থেকে দ্রুতগতিতে মালামাল খালাস সম্ভব হচ্ছে না। নদীর বিভিন্ন চ্যানেলে পানির গভীরতা বর্তমানে কম থাকায় জাহাজ ভিড়তে বিঘœ ঘটছে।
এ ব্যাপারে লেবার হ্যান্ডলিং এজেন্ট আব্দুস সালাম জানান, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ৪ মাসেও ২নং জেটিটি মেরামত না করায় তারা জাহাজ থেকে বাধ্য হয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে মালামাল খালাস করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, ২নং জেটিটি আরও মজবুত আকারে নির্মাণের জন্য দুটির স্থলে চারটি স্পার্ডবিশিষ্ট নতুন জেটি তৈরির জন্য নকশা প্রণয়ন করে বিআইডব্লিউটিএ ঢাকা প্রধান অফিসে পাঠানো হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
(দ্য রিপোর্ট/আরএ/এএস/জানুয়ারি ৬, ২০১৪)