দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বর্তমান সংকট নিরসনে ছয়টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন।

গণমাধ্যমের মাধ্যমে সোমবার বিকেলে সিপিবি এ প্রস্তাবনা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের উদ্দেশে প্রেরণ করা হয়।

সিপিবি বিবৃতিতে জানায়, নানা ধরনের কারচুপি, ভোট চুরি, হামলাবাজি, সন্ত্রাস, আতঙ্ক ইত্যাদির মধ্য দিয়ে রবিবার ‘নগণ্য সংখ্যক ভোটারের অংশগ্রহণে ১৪৭টি আসনের নির্বাচন’ সম্পন্ন হয়েছে। ভোটগ্রহণ ছাড়াই ইতোপূর্বে ১৫৩টি আসনে আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় একক প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বাসে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ ও পশু পুড়িয়ে মারা, রাস্তা ও রেললাইন উপড়ে ফেলা, বৃক্ষ নিধন, স্কুলে অগ্নিসংযোগ, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দল সারাদেশে সহিংসতা চালিয়েছে। এখনো সারাদেশে সহিংসতা চলছে। নিপীড়ন চলছে সংখ্যালঘুদের ওপর।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার যুক্তি দেখিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন, একতরফা ও ‘পোকা-খাওয়া’ নির্বাচনের তামাশা সম্পন্ন হলেও এর ফলে দেশের রাজনৈতিক সংকট ও সংঘাত-সহিংসতা দূর হওয়ার বদলে তা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

সহিংসতা, অচলাবস্থা, বিপর্যয় ও বিপদের আশঙ্কা থেকে দেশ মুক্ত করার জন্য অবিলম্বে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে সিপিবি মনে করে।

১. সব মহল থেকে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতা, সন্ত্রাস ও দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে।

২. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে।

৩. বিএনপিকে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গ পরিত্যাগ করতে হবে।

৪. সরকারকে অবিলম্বে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ এবং তাদের অর্থ-সম্পদ ভাণ্ডার, আন্তর্জাতিক মদদ ও সাহায্য, যোগাযোগ ও সংযোগ ব্যবস্থা, রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম, পরিচালনা কেন্দ্র, ক্যাডার নেটওয়ার্ক ইত্যাদি নিশ্চিহ্ন করার ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আদর্শগত, সাংস্কৃতিক, সামাজিক আন্দোলন শক্তিশালী করতে হবে।

৫. অবিলম্বে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব দলের মধ্যে সংলাপ শুরু করতে হবে।

৬. অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে বিতর্কের স্থায়ী সমাধানের জন্য বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে ‘প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন সংখ্যা’ ব্যবস্থা (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা) প্রবর্তন, না-ভোটের ব্যবস্থা চালু এবং নির্বাচন টাকা, পেশীশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজি, সাম্প্রদায়িক প্রচারণা ইত্যাদির প্রভাব থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/এপি/সা/জানুয়ারি ০৬, ২০১৪)