আইপিওর টাকায় শোধ হচ্ছে না ঋণ
এমারেল্ডের কাঁধে বোঝা থাকছে আরও পাঁচ গুণ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সংগৃহীত টাকার ৬০ শতাংশই ঋণ পরিশোধে ব্যয় করবে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ। তারপরও ঋণমুক্ত হচ্ছে না কোম্পানিটি। আরও ৫ গুণ ঋণের বোঝা এমারেল্ডের কাঁধে। তবে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েও আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ২৭ কোটি টাকা মূলধনের এমারেল্ড অয়েল পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এর মধ্যে ১২ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করা হবে। তারপরও এ কোম্পানির কাঁধে ৬২ কোটি টাকার ঋণের বোঝা থাকবে। ঋণের বোঝা নিয়েও বিগত বছরের মতো ভালো ফলাফল করবেন বলে আশাবাদী কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
২০১৩ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে এ কোম্পানির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে এ কোম্পানির মূলধন ও ঋণের অনুপাত ১:৩। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ১২ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধের পর ৫ গুণেরও বেশি ঋণ অবশিষ্ট থাকবে। অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলেও ঋণমুক্ত হতে পারছে না।
২০১২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪.০৭ টাকা। যা ২০১৩ অর্থবছরে কমে দাঁড়িয়েছে ২.৮৫ টাকায়। ইপিএস কমার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে ঋণের সুদজনিত ব্যয়। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১২ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৩ অর্থবছরে এ কোম্পানির সুদজনিত ব্যয় বেশি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ২ জুলাই বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসা কোম্পানিটি ২০০৮ সাল থেকেই ঋণগ্রস্ত। কোম্পানিটি উৎপাদনে না আসলেও ২০০৮-০৯, ২০০৯-১০, ২০১০-১১ অর্থবছরে ঋণের সুদজনিত ব্যয় মেটাতে হয়েছে। এ কারণে ২০১০-১১ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটি ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পুঞ্জীভূত লোকসানের কবলে পড়ে।
তবে ঋণের কারণে ব্যয় বাড়লেও উৎপাদনে আসার পর কোম্পানিটি গত দুই অর্থবছরে তুলনামুলক ভালো ফলাফল করেছে।
উল্লিখিত বিষয়ে কোম্পানির পরিচালক সজন কুমার বশাক বলেন, আইপিওর জন্য ২০১৩ সালের শুরুতে আবেদন করা হলেও তা অনুমোদন হয়েছে বছরের শেষের দিকে। মধ্যবর্তী সময়ে কাজের গতি স্বাভাবিক রাখতে নতুন করে ঋণ নিতে হয়েছে। অন্যথায় অনেক কাজ বন্ধ হয়ে যেত। আর ২০১১ সালে উৎপাদনে আসার আগে বিল্ডিং তৈরি ও মেশিনারিজ ক্রয় করতে ঋণ নেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।
কোম্পানির উৎপাদিত কোলেস্টোরেল মুক্ত ভোজ্য তেল নিয়ে তিনি আশাবাদী। বিগত দুই বছরের মুনাফা কর্তৃক্ষকে আশাবাদী করেছে বলে জানান সজন কুমার বশাক।
তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধনশীল ব্যবসার কারণে আইপিও অনুমোদন পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়নি।
বর্তমানে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও চালের কুড়া থেকে এমারেল্ডের উৎপাদিত তেলের দাম প্রতিলিটার ১৬৫ টাকা। এমতাবস্থায় এমারেল্ড অয়েল বাজারে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সজন কুমার বলেন, সয়াবিন তেলের সাথে তাদের উৎপাদিত তেলের তুলনা করাটা ঠিক হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাদের উৎপাদিত তেল কোলেস্টোরেল মুক্ত ও ব্যবহারে সাধারণ সয়াবিন তেলের তুলনায় ২০-২৫ শতাংশ কম লাগে।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত ২০ কোটি টাকার মধ্যে ১২ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধের পর বাকি ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা কোম্পানির উৎপাদন কমর্কাণ্ডে ও বাকি ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা আইপিও খাতে ব্যয় করা হবে।
(দ্য রিপোর্ট/আরএ/ডব্লিউএন/সা/জানুয়ারি ৬, ২০১৪)