বগুড়া সংবাদদাতা : বগুড়ার শাজাহানপুরে স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত এক প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ১০৬ নং নির্বাচনী কেন্দ্র সুজাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় স্থানীয় গ্রামবাসী ওই প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে মারমুখী অবস্থান নিলে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশকে ওই প্রধান শিক্ষককে আটকের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত সারাদেশের সব কেন্দ্রের সরকারি অনুদান দেওয়ার ঘোষণায় অর্থনৈতিক লাভবান হওয়ার আশায় নিজ বিদ্যালয়ের বেশ কিছু বেঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান। বেঞ্চগুলো দফতরি ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে বহন করে বিদ্যালয়ের পাশে দফতরি বাবু মিয়ার বাড়ির আড়ালে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি।

ঘটনাটি স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে কারণ জিজ্ঞাসা করতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান। নিজে অগ্নিসংযোগ করে নিরপরাধ গ্রামবাসীকে হয়রানির মধ্যে ফেলতে পারেন- এমন ভয়ে ভীত হয়ে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন। খবর পেয়ে থানার ওসি আব্দুল মান্নান ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। এর পরপরই নির্বাচনে উপজেলা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর এক মেজরের নেতৃত্বে একদল সেনাসদস্য সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পর দুপুর সোয়া ১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং প্রত্যক্ষদর্শী, সহকারী শিক্ষক ও দফতরির দেওয়া জবানবন্দিতে প্রধান শিক্ষককে আটকের নির্দেশ দেন। পুলিশ প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

আটক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন, আমি কেন নিজ স্কুলের আসবাবপত্রে আগুন দিবো। এটা অন্য কেউ করেছে।

স্কুলের দফতরি বাবু মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমি আগুন দিয়েছি। আগুন দেওয়ার জন্য আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।

শাহজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল মান্নান দ্য রিপোর্টকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে স্কুলে গিয়ে সেখানে গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় তাকে আটকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচ/এএস/জানুয়ারি ৭, ২০১৪)