‘প্রধানমন্ত্রী সরে আসবেন না’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা (বিএমবিএস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মিটিয়ে অতিসত্বর সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য মধ্যবর্তী নির্বাচন করবেন। আমরা আশা করি কোনো অজুহাতেই প্রধানমন্ত্রী তার কথা থেকে সরে আসবেন না।
বিএমবিএসের নির্বাহী পরিচালক আবুল বাসার স্বাক্ষরিত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি আসন গ্রহণ করেছে। স্বতন্ত্র কয়েকটি আসন বাদে বাকি আসন আওয়ামী লীগের জোটের অন্যান্য দল গ্রহণ করেছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সুতরাং তাদের কোনো আসন নেই। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আর অল্প কয়েকদিন আছে যেখানে বিরোধী দল বিএনপি। কিন্তু আগামী আওয়ামী লীগ সরকারে বিএনপি থাকবে না। সুতরাং বিএনপির কোনো সাংবিধানিক দায়-দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি নাগরিকের জানমাল রক্ষার দায় একমাত্র সরকার ও তার জোটের। বর্তমান কালে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চর্চা ছাড়া কেবল শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এ দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। মধ্যযুগের শাসননীতি ছিল শক্তি প্রয়োগের, বিরোধী মত বা দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার প্রচেষ্টা। আমরা মধ্যযুগ অতিক্রম করে এসেছি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংবিধান রক্ষা হয়েছে, কিন্তু দেশ পরিচালনার নৈতিক ভিত্তি অর্জনের জন্য যথেষ্ট জনগণের ম্যান্ডেট অর্জিত হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষের জানমাল ও রুটি-রোজগার এখন সংকটাপন্ন, মানবাধিকার এমনকি সংবিধান প্রদত্ত অধিকারও (অনুচ্ছেদ ২৬ হতে ৪৭) লংঘিত হচ্ছে গুরুত্বহীনভাবে।
বিএমবিএস মনে করে, আমজনতা তো বেশি কিছু চায় না, তারা চায় দেশে হরতাল-অবরোধ বন্ধ হোক, বন্ধ হোক সহিংসতা ও অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু, বন্ধ হোক যাত্রীবাহী গাড়িতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ, রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলা, যেন তারা করে খেতে পারে। তারা আরও চায় যে, যেসব এমপি-মন্ত্রী দুর্নীতি ও অবৈধভাবে গত পাঁচ বছরে ৫০০-৬০০ গুণ সম্পদ বাড়িয়েছেন, তারা সরকার বা আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকুক এবং সরকার তার দায়িত্বের অংশ হিসেবে এসব সামাজিক অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক।
অপর এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই যশোর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনবিরোধী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। তাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। প্রাণভয়ে অসংখ্য হিন্দু পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে, আশ্রয় নিয়েছে পাশের গ্রামে, যা চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাদের অপরাধ নির্বাচনে ভোট দেওয়া।
সংখ্যালঘুসহ সব মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা সরকার ও আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব কিন্তু উভয়ই দায়িত্ব পালনে ও নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ। এসব ঘটনায় নিন্দা জানায় সংগঠনটি।
এ ছাড়া সরকার অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের যাবতীয় ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা জোর দাবি জানানো হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এএস/৮ জানুয়ারি ২০১৪)