রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল কাঁপছে শীতে
এসএম জাকির হুসাইন, রংপুর : রংপুরসহ উত্তরাঞ্চল এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে। এ অঞ্চলের প্রায় ৩০ লাখ দরিদ্র শীতার্ত মানুষের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে কনকনে শীতে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। বিশেষ করে চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও চরমে উঠেছে।
এ ছাড়া শীতজনিত রোগবালাইও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। গত পাঁচদিন থেকে এ অঞ্চলের মানুষ সূর্যের মুখ দুপুরের আগে দেখছে না। কোথাওবা দেখা গেলেও তাও ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। গতকাল সকাল থেকে সারাদিন ছিল আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীত। বিরূপ আবহাওয়ায় জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বেরুচ্ছে না।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, মঙ্গলবার এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে।
ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি জেলা থেকে যে পরিমাণ শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছিল তার বিপরীতে বরাদ্দ এসেছে খুব সামান্য। প্রতিটি জেলায় গড়ে বরাদ্দ এসেছে তিন থেকে পাঁচ হাজার পিস শীতবস্ত্র। অথচ প্রতিটি জেলায় হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের সংখা গড়ে দুই লাখের ওপর। এসব শীতার্ত মানুষের পাশে এখন পর্যন্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে এগিয়ে আসেনি।
শীতজনিত রোগবালাই বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই শিশু ও বৃদ্ধ মারা যাওয়ার খবর আসছে। সূত্রমতে, গত পাঁচদিনে শীতজনিত রোগ নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টজনিত রোগে কমপক্ষে ১০ শিশু ও বৃদ্ধ মারা গেছেন। এর মধ্যে বেশ কজন ছিন্নমূল মানুষও রয়েছেন।
রংপুর ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, নতুন করে শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠনো হয়েছে। একই অবস্থা উত্তরের ১৬ জেলায়। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বরাদ্দ আসায় স্থানীয় প্রশাসনকে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
অপরদিকে শীতের জন্য নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মের অভাব দেখা দিয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা ঠিকমতো নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে না পেরে চরম বেকায়দায় রয়েছেন। ঘনকুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্রেতার সমাগম কম দেখা গেছে। রাস্তাঘটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে।
(দ্য রিপোর্ট/এসএমজে/এএস/জানুয়ারি ৮, ২০১৪)