দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : ব্যাটিংয়ে নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলাম।বোলাররাও কম যাননি। হ্যাটট্রিক করেছেন রুবেল হোসেন। এক কথায় দারুণ পারফর্ম। টাইগারদের এমন দিনে জয়ের বিকল্প চিন্তা করেননি ক্রিকেট ঈশ্বর। তাই বৃষ্টিস্নাত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে নিউজিল্যান্ডকে ৪৩ রানে হারিয়ে আনন্দে নেচেছে স্বাগিতকরা।

মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় নিউজিল্যান্ড। খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগিতকদের। ইনিংসের গোড়াতেই তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।

তৃতীয় ওভারেই বিদায় নেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। টিম সাউদির বলে এলবিডব্লউর ফাঁদে পড়েন মারকুটে তামিম (৫)। আর উইকেটের প্রান্ত বদল করতে গিয়ে রান আউট হন মিরপুর ও ঢাকা টেস্টে দ্যুতি ছড়ানো মমিনুল হক (০)।

পরপর দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরার পর সাউদির দ্বিতীয় শিকার হন এনামুল হক (১৩)। তার পরও রানের গতি থামেনি বাংলাদেশের। প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও আকস্মিক দলে ডাক পাওয়া নাঈম ইসলাম।

এই জুটির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পুঁজি গড়তে বেগ হয়নি বাংলাদেশকে। গুরুত্বপূর্ণ ১৫৪ রান করে এ জুটি। ৯০ রানে আউট হন মুশফিকুর রহিম। নিশামের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ৯৮ বল খেলে আটটি চার ও দুটি ছয়ের সাহায্যে এই রান করেন টাইগার নেতা।

অধিনায়কের পরপর ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন নাঈম। বন্ধু সাকিব জ্বর আক্রান্ত হওয়ায় একাদশে সুযোগ পান তিনি। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরলেও তার ব্যাটে মরচে পড়েনি। সাউদির তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে ১২টি চারের সাহয্যে ৮৪ রান করেন। সঙ্গে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর গড়ার পাশাপাশি পঞ্চম অর্ধশতকও পূর্ণ করেন তিনি।

মুশফিক ও নাঈমের বিদায়ের পর বড় জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। শেষপর‌্যন্ত গুটিয়ে যাওয়ার আগে ২৬৫ রান করতে সমর্থ হয় স্বাগতিক দল।এছাড়া নাসির হোসন ১, মাহমুদউল্লাহ ২৯, সোহাগ ৬ ও মাশরাফি করেন ৬ রান।

জবাবে খেলতে নেমে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। শুরুতেই সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপে আঘাত হানেন সোহাগ গাজী। নিজের পাশে এক রান যোগ করার পরই গাজীর বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি।

গাজীর সঙ্গে যোগ বোলিং আক্রমণে যোগ দিয়ে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ। ব্যক্তিগত ২২ রানে মাহমুদের বলে আউট হন ডেভসিচ। আর রস টেলরকে (৮)ড্রেসিং রুমের পথ দেখান রুবেল হোসেন।

তিন উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের দলীয় খাতায় ৮২ রান যোগ হতেই শুরু হয় বৃষ্টি। ঘণ্টাখানেক প্রকৃতির বৃষ্টির দৃশ্য চলার পর আবারও খেলা মাঠে গড়ায়। এর মধ্যে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে ৩৩ ওভারে আরও ২০৬ রানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন আম্পায়ার। লক্ষ্য থেকে বাদ যায় আগের ৮২ রান।

কিন্তু রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে গন্তব্যে পৌঁছা সম্ভব হয়নি কিউইদের। ২৪তম ওভারে একাই পরপর তিন উইকেট তুলে নিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক করার সঙ্গে সঙ্গে দলকেও নিরাপদ জায়গায় নিযে যান তিনি।

স্পিনারদের ওপর ঝড়ে বয়ে দেওয়া কোরেই অ্যান্ডারসনকে (৪৬) বোল্ড, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (০)ও নিশামকে (০)ক্যাচ আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রুবেল। পরপর তিন উইকেট হারিয়ে পরে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি কিউইরা। শেষপর‌্যন্ত অলআউট হওয়ার আগে ১৬২ রান করতে পারে তারা। ২৬ রান দিয়ে ছয় উইকেট নেন রুবেল।

এ জয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৬৫ (মুশফিক ৯০, নাঈম ৮৪, মাহমুদউল্লাহ ২৯; নিশাম ৪/৪২)

নিউজিল্যান্ড: ১৬২ (ইলিয়ট ৭১, অ্যান্ডারসন ৪৬; রুবেল ৬/২৬)

ফল: ৪৩ রানে জয়ী বাংলাদেশ (ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি)

(দিরিপোর্ট২৪/সিজি/এএস/এমডি/অক্টোবর ২৯, ২০১৩)