‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গের বামরাই উচ্ছিষ্টভোগী, আদর্শচ্যুত’
সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট : আমরা পঁচা নই বরং আদর্শচ্যুত হয়ে যারা আওয়ামী লীগের মতো বুর্জোয়া দলে যোগ দিয়ে লেজুড়বৃত্তি করছে তারাই পঁচা। ওই সব বাম নেতারা উচ্ছিষ্টভোগী। উচ্ছিষ্ট ভোগ করার জন্যই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বামমোর্চার শীর্ষ নেতারা। ৬ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাম নেতারা এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন পরবর্তী ওইদিনের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টিতে যারা পাকা পাকা ছিল তাদের আমি দলে নিয়ে নিয়েছি। এখন যারা আছে তারা পঁচা। তারা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার করতে করতে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যাচ্ছেন...।’
প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক দ্য রিপোর্টকে বলেন, সিপিবির সাবেক ১৬ নেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগে রয়েছেন। এক সময় সিপিবিও ১৪ দলে ছিল। এখন তারা বাইরে চলে গেছে। এ জন্য হয়তো প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষোভ থেকে এ কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, সিপিবি একবার বলে ‘নো ইলেকশন আবার বিএনপিকে বলে নো জামায়াত’। আসলে তারা যে কী চাই তা নিজেরাই জানে না।
আমরা আহবান জানাব, আপনারা আবার ১৪ দলে ফিরে আসুন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। দেওয়ার দরকারও মনে করি না।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)- এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এখন মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাবিরোধী রাজনীতি ও শাসন আওয়ামী লীগে চলছে। সেখান থেকে সুবিধা নেওয়ার জন্য বাম নামধারী কিছু নেতা আওয়ামী লীগে গেছেন। আওয়ামী লীগ তাদের সাদরে স্বাগত জানিয়েছে। এদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাম রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আওয়ামী লীগ যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাজনীতি করে না তা ৪২ বছর ধরে প্রমাণিত।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না। এ জন্য আওয়ামী লীগ এখন গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্বৈরতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের পরিবর্তে পুঁজিবাদী অর্থনীতি, ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে ধর্মের রাজনীতি চালু রেখেছে, স্বাধীন অর্থনীতি বিকাশের পরিবর্তে সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু হয়েছে।’
আটটি বামদলের জোট গণতান্ত্রিক বামমোর্চার সমন্বয়কারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা যাদের নিয়েছে তারা যে অধপতিত তা আজ দেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত। যে বামরা নেতারা গেছেন তারা উচ্ছিষ্টভোগ করার জন্যই গেছেন, এটা সবাই জানে। এরা ঘৃণিত, এরা জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত।’
তিনি বলেন, ‘যারা শপথ নিয়েছেন তারাও ঘৃণিত। আমরা এই সংসদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। দেশের মানুষ এদের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করে না।’
(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এইচএসএম/সা/জানুয়ারি ০৯, ২০১৪)