মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেও যানজট
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : যানজট থেকে মুক্তির জন্য মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে উঠলেও সেখানে গিয়ে আরও বড় যানজটের মুখে পড়েছেন গাড়ি চালক ও যাত্রীরা। শুক্রবার যাত্রাবাড়ী থেকে পলাশী পর্যন্ত রাজধানীর সবচেয়ে বড় ফ্লাইওভাবে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ধারণ ক্ষমতার তুলনায় গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়া এবং গুলিস্তান প্রান্তে টোল আদায়ের একটি লেন বন্ধ থাকায় এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১১ অক্টোবর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফ্লাইওভারের মূল অংশটি খুলে দেওয়া হলেও সংযোগ অংশগুলোর নির্মাণ কাজ এখনো চলছে।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে গুলিস্তান যেতে ফ্লাইওভারের উপর গাড়ির সারি যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। গুলিস্তান-চিটাগং রুটে চলাচলকারী একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৪১৬৬৬) সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের দিকে ফ্লাইওভারের উপর দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় চালক তৈয়ব আলী বলেন, ‘প্রত্যেক দিন ব্রিজ দিয়াই আহি যাই, এমুন জাম তো কোনো দিন দেহি নাই মামা।’
ঢাকা-গোপালদী রুটে চলাচলকারী অভিলাষ ট্রান্সপোর্টের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো জ-১৪১৮৪৭) গুলিস্তান যেতে টিকাটুলির দিকে ফ্লাইওভারে উপর যানজটে আটকে ছিল।
এ বাসের চালক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আধা ঘণ্টা ধইরা জ্যামে পইড়া রইছি। টাকা দিয়ে ব্রিজে উঠে জ্যামে আটকাইয়া থাকলে আমগো লাভ কী? তার চাইতে নিচে দিয়া যাওয়াই ভাল।’
ফ্লাইওভারের উপর গাড়ি স্থবির হয়ে পড়লে যাত্রীদের বাস থেকে মেনে হেঁটে গুলিস্তানের দিকে যেতে দেখা গেছে। জয়কালী মন্দিরের দিকে ফ্লাইওভারের উপরে গুলিস্তানের ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি রায়েরবাগ থেকে বাসে উঠেছি। ১০ টাকার ভাড়া ১৫ টাকা দিলাম। যানজটের কারণে সায়েদাবাদ নেমেই হাঁটছি। আমার অতিরিক্ত টাকাও গেল, সময়ও নষ্ট হলো।’
৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ফ্লাইওভাবে আটকে থাকায় বাস থেকে নেমে হাঁটতে থাকেন অপর এক যাত্রী শাহাদাত হোসেন। রাজধানী সুপার মার্কেটের দিকে ফ্লাইওভারে কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘ফার্মগেট যাব, চিন্তা করলাম ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে গুলিস্তান পৌঁছে গাড়ি পাল্টে অল্প সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে যাব। কিন্তু ঘটনা ঘটল উল্টো।’
গুলিস্তান টোল প্লাজায় গিয়ে দেখা গেল তিনটি লেনের মধ্যে মাঝ খানের লেনটি বন্ধ আছে। দুটি লেনে টোল আদায় করা হচ্ছে। টোল আদায়কারী এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকদিনের হরতাল অবরোধের পর শুক্রবার ফ্লাইওভারে গাড়ি চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। এ ছাড়া ফ্লাইওভারের মূল অংশের কিছু কাজ সম্পন্ন করার জন্য ডিভাইডারের এক অংশ বন্ধ রেখে অপর অংশ দিয়ে গাড়ি আসা-যাওয়া করছে।
অপর এক কর্মকর্তা জানান, গুলিস্তান অংশে টোল আদায়ের মাঝখানের লেনটি সংস্কার করার কারণে বন্ধ আছে। গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং দুটি লেনে টোল আদায় করার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এনডিএস/ এনআই/জানুয়ারি ১০, ২০১৪)