মন্ত্রিত্বে আগ্রহ আনিস-ফিরোজের, সিগন্যালের অপেক্ষায় রওশন
নতুন সরকারে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশিদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। রওশন এরশাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সময় তারা এ আগ্রহের কথা প্রকাশ করেন।
তবে রওশন এরশাদ বলেছেন, দুই দিন সময় আছে। একটু ভেবে দেখা জরুরি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীও কিছু বলেননি। বৈঠকে উপস্থিত জাপার একাধিক শীর্ষ নেতার কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জাপা সূত্রের দাবি, জাপার এমপি হওয়া সিংহভাগ নেতাই এরশাদকে মাইনাস করে দেওয়ার পক্ষে। তাদের আশঙ্কা, এরশাদ রাজনীতিতে ফিরে এলেই দলে তাদের গুরুত্ব থাকবে না। তাই তড়িঘড়ি করে বৃহস্পতিবারই রওশনকে বিরোধী দলের নেতা বানানো হয়েছে। যাতে এরশাদের কর্তৃত্ব হ্রাস পায়। আর রওশনও যাতে মন্ত্রিত্ব নিতে না পারেন।
এদিকে রওশনও কৌশলে এরশাদের সিগন্যালের অপেক্ষায় আছেন। সরকারকে দেওয়া শর্ত পূরণ হলেই কেবল মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
জাপার অপর সূত্রের দাবি, রওশন এরশাদ দলে তার অবস্থান ও নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হঠাৎ করেই মন্ত্রিত্ব নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। রওশন ভাবছেন, প্রেসিডিয়াম সদস্যরা মন্ত্রিত্ব নিলে জাপার নিয়ন্ত্রণ আর তার হাতে থাকবে না।
সূত্রের দাবি, শেষমেশ জাপা মন্ত্রিসভায় অংশ নিলে বর্তমান নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা জাপার ছয় মন্ত্রীর মধ্যে বাদ পড়বেন রওশন এরশাদ। তিনি বিরোধী দলের নেতা হয়েই গেছেন। তাই তার আর মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া থাকছেন না এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের ও সালমা ইসলাম। সালমা ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট নন রওশন। তা ছাড়া ৩ ডিসেম্বর এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় পর সালমা ইসলামের স্বামী নুরুল ইসলাম বাবুলের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। ৪ ডিসেম্বর এরশাদের বাসার সামনে থেকে নুরুল ইসলাম বাবুলকে আটকের চেষ্টাও করেছিল র্যাব।
তবে মন্ত্রিসভায় থেকে যেতে পারেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মুজিবুল হক চুন্নু। নতুন করে শপথ নিতে পারেন কাজী ফিরোজ রশিদ।
এ বিষয়ে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচনকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা মন্ত্রিসভায় থাকব কি থাকব না, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের অনেক নেতাই মন্ত্রিসভায় যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, আমি যেহেতু মন্ত্রিসভায় আছি, আমারও আগ্রহ আছে। এখন দেখা যাক, আমাদের সংসদীয় দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ কী সিদ্ধান্ত নেন।
জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্যের সরকারে বিরোধী দল থেকেও মন্ত্রী হতে পারে। অনেক দেশেই এটা হয়। জাপা মন্ত্রিসভায় থাকবে।’
(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এমডি/এসবি/এনআই/শাহ/জানুয়ারি ১০, ২০১৪)