‘যারা হামলা-নির্যাতন করে তারাই সংখ্যালঘু’
যশোর সংবাদদাতা : গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা যশোরের অভয়নগর উপজেলার চাপাতলা মালোপাড়ায় পৌঁছান শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। গাড়িবহর প্রথমে চাপাতলায় পৌঁছে। এরপর সেখান থেকে মিছিল সহকারে ক্ষতিগ্রস্ত মালোপাড়ায় পৌঁছায়।
এর আগে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা যশোরে তাদের রাতযাপনের স্থান শহরের আরবপুরস্থ বেসরকারি সংস্থা বাঁচতে শেখার ডরমেটরিতে যান। বহরে চার শতাধিক কর্মী এসেছেন বলে জানা গেছে।
‘সাম্প্রদায়িক হামলা, রুখে দাঁড়াও বাংলা’ স্লোগানকে সামনে রেখে তিন দফা দাবিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে যশোরের চাপাতলা মালোপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করে গণজাগরণ মঞ্চের এই বহর।
চাপাতলায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের উদ্দেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, ধার্মিকতা আর সাম্প্রদায়িকতা এক নয়। কোনো ধর্মই মানুষকে হত্যা, তাদের বাড়িঘরে আগুন, লুটপাট, ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট কাজে অনুমতি দেয় না।
তিনি বলেন, যারা এ সব অপকর্ম করছে, তারা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু।
তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলেন, যারা এ সব অপকর্ম করে তারাই সংখ্যালঘু। নির্যাতিতরা নন।
তিনি চাপাতলার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে আলাপ করে বলেন, ‘আমি আজ বাকরুদ্ধ। আমার কিছু বলার নেই। আপনারা (ক্ষতিগ্রস্ত) এ দেশের মূলস্রোত, আপনারাই প্রকৃত বাংলাদেশ।’
এ সময় গণজাগরণ মঞ্চের বাপ্পাদিত্য বসু, ফরহাদ আহমেদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি ভোট শেষে সন্ধ্যায় অভয়নগরের চাপাতলা মালোপাড়ায় তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলায় ২০-২৫টি বাড়িসহ দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। পাঁচ শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টাকা।
ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসন ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা রাখে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে তাদের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতা জানানো হয়।
ঘটনার তদন্তে এডিসিকে (শিক্ষা) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাসিরউদ্দীন ইউসুফ প্রমুখ।
বর্তমানে ওই এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্প ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সর্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
(দ্য রিপোর্ট/জেএম/এএস/এএল/জানুয়ারি ১১, ২০১৪)