যশোর সংবাদদাতা : গণজাগরণ মঞ্চের মুখপত্র ইমরান এইচ সরকার রাজনীতিকদের উদ্দেশে বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হলেই আপনারা একে অপরকে দোষারোপ করেন। এই দোষারোপের রাজনীতির কারণেই আমরা সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এগুলো ত্যাগ করেন। নইলে সাম্প্রদায়িকতার এই বিষবাষ্প থেকে আমাদের কারোরই রেহায় নেই।

যশোর শহরের চিত্রামোড়ে শনিবার বিকেলে ঢাকা-যশোর রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। গণজাগরণ মঞ্চ, যশোরের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুস শহীদ লালের সভাপতিত্বে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ইমরান বলেন, স্বাধীনতার ২৩ বছরে আমরা অনেক সরকার দেখেছি। কিন্তু সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ কেউই নেয়নি।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার একটি ঘটনারও যদি সঠিক বিচার করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হত, তবে আজকে আর এমন ঘটনার মুখোমুখি হত না বাংলাদেশ।

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপত্র বর্তমান সরকারকে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান।

ক্ষতিগ্রস্ত চাপাতলা মালোপাড়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০ পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে, এক শ’ পরিবারকে প্রতি ১০ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাপাতলা মালোপাড়ায় গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে একটি প্রাইমারি স্কুল বানিয়ে দেওয়া হবে। যার খরচ বহন করবে গণজাগরণ মঞ্চ।

তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে এটিকে হাই স্কুল এমনকি কলেজ পর্যন্ত করা হবে।

ইমরান ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আপনার দৃঢ় মনোবল নিয়ে থাকুন। গণজাগরণ মঞ্চ আপনাদের আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করবে।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, এখানকার মানুষ এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করুন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি বাপ্পাদিত্যবসু, ছাত্রনেতা ফরহাদ আহমেদ, ডা. ইমদাদুল হক, লাকি আকতার, জিল্লুর রহমান ভিটু, মাহমুদ হাসান বুলু, সানোয়ার আলম খান দুলু, মুজহারুল ইসলাম মন্টু, সুকুমার দাস প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে রাতেই গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ঢাকা ফিরে যাওয়ার কথা। এরপর তারা ঢাকা থেকে রংপুরে যাবেন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, ‘সাম্প্রদায়িক হামলা, রুখে দাঁড়াও বাংলা’ স্লোগানকে সামনে রেখে তিন দফা দাবিতে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে যশোরের চাপাতলা মালোপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে গণজাগরণ মঞ্চের এই বহর। রাত সাড়ে ১০টায় বহরটি যশোর শহরে প্রবেশ করে। রাতে শহরের একটি বেসরকারি সংস্থার ডরমেটরিতে তারা অবস্থান করেন।

শনিবার সকাল ১০টায় চাপাতলার উদ্দেশে শহর ত্যাগ করেন। সকাল সাড়ে ১১টায় তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন, দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং সেখানে কিছু ত্রাণসামগ্রী বণ্টন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন নেতৃবৃন্দ।

এরপর দুপুরে তারা শহরে ফেরেন। বিকেলে চিত্রামোড়ের সমাবেশে মিলিত হন।

(দ্য রিপোর্ট/জেএম/এসবি/সা/জানুয়ারি ১১, ২০১৪)