হরতালে বিপাকে দুগ্ধ খামারি
সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা : ১৮ দলীয় জোটের ৬০ ঘণ্টার টানা হরতালে সিরাজগঞ্জ ও পাবনা থেকে ঢাকায় দুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এই অঞ্চলের শত শত খামার-মালিক তাদের উৎপাদিত দুধ নায্যমূল্যে বিক্রি না করতে পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান দুধ কিনেও বিপদে পড়েছে। অন্য জেলাতে পাঠাতে গেলেও পিকেটাররা গাড়ি থামিয়ে সেগুলো সড়কের উপর ঢেলে দিচ্ছে।
শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন খামার মালিক ও দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানের সূত্র জানা গেছে, ৩ দিনের হরতালে- মিল্কভিটা, আড়ং, আকিজ ডেইরি, প্রাণসহ ৮টি দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান শনিবার দুধ কেনার পর আর দুধ কেনেনি।
প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্রে আরও জানা যায়, এ সকল প্রতিষ্ঠানে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ লিটার দুধ মজুদ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে জায়গা না থাকায় কোনো প্রতিষ্ঠানই দুধ কিনছে না।
এ দিকে খামারিরা জানান, দুধ বেচতে না পারার কারণে তাদের প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ লিটার দুধ কমমূল্যে বেচতে হচ্ছে। প্রতি লিটার দুধ ২০ থেকে ২৫ টাকা মূল্যে স্থানীয় মিষ্টির দোকানে বিক্রি করছে। ফলে তারা উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ছে।
দুগ্ধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, জরুরি শিশু-খাদ্য তরল দুধ সরবরাহ হরতালের আওতা-মুক্ত থাকলেও হরতাল সমর্থনকারী পিকেটাররা তা মানছে না। তারা দুধের গাড়ি দেখলেই জোর করে থামিয়ে ভাংচুর করছে। তাই বাধ্য হয়ে মিল্কভিটাসহ সকল প্রতিষ্ঠান দুধের ট্যাংকবাহী ট্রাক ঢাকায় পাঠানো বন্ধ রেখেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার প্রধান কারখানায় গত ৩ দিনে তরল দুধের মজুদ ২ লাখ ৮৫ হাজার লিটার ছাড়িয়েছে। সংগৃহীত তরল দুধের সিংহভাগ ঢাকায় পাঠানো হয়। এই কারখানায় দুধের মজুদের ধারণ ক্ষমতা ১ লাখ ৮৫ হাজার লিটার থাকলেও মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনের সংগৃহীত দুধের ৪০ ভাগ পাউডার তৈরি করছে। ফলে সোমবার পর্যন্ত বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা কারখানায় ১ লাখ ৮৫ হাজার লিটার তরল দুধ মজুদ হয়েছে। মজুদ দুধ ঢাকায় সরবরাহ করা সম্ভব না হওয়ায় ও মজুদের জায়গা না থাকায় রবিবার থেকে খামারিদের কাছ দুধ নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
একই কারণে প্রাণ, আকিজ, আড়ং কোম্পানিও বাধ্য হয়ে দুধ কেনা বন্ধ রেখেছে বলে জানা গেছে।
(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/আইজেকে/এমডি/অক্টোবর ২৮, ২০১৩)