‘ফৌজদারি মামলায় আদালতের অনুমতি ছাড়া অ্যাফিডেভিট নয়’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ফৌজদারি মামলায় আদালতের অনুমতি ব্যতিত কোনো অ্যাফিডেভিট করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলায় এক সাক্ষীর সাক্ষ্য অ্যাফিডেভিট করা বাগেরহাটের দুই আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা চাইলে তিনটি নির্দেশনা দিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ রবিবার এ আদেশ দেন।
আদালত তার নির্দেশনায় বলেন, ১. কোনো ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় উক্ত আদালতের অনুমতি ছাড়া অ্যাফিডেভিট করা যাবে না। ২. অ্যাফিডেভিটকারীকে অবশ্যই অ্যাফিডেভিট বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। ৩. যার সম্পর্কে অ্যাফিডেভিট করা হচ্ছে তার ব্যাপারে ভালোভাবে জানতে হবে।
উপরিউক্ত নির্দেশনা দিয়ে বাগেরহাটের দুই নোটারি পাবলিক আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ ও অ্যাডভোকেট শামিমা আক্তারকে অব্যাহতি দেয় ট্রাইব্যুনাল।
একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ নিষ্পত্তির এ আদেশের কপি আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে এ দুই আইনজীবীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মসিহুজ্জামান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম শুনানি করেন।
বাগেরহাট জেলার এ দুই নোটারি পাবলিক আইনজীবী মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে প্রসিকউশনের ৭তম সাক্ষী আসিয়া খাতুনের নামে ২০১০ সালে একটি অ্যাফিডেভিট করেন।
অ্যাফিডেভিটে সাক্ষী আসিয়া বলেছেন, একাত্তরে একেএম ইউসুফ মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
কিন্তু প্রসিকিউশনের সাক্ষী আসিয়া আদালতে সাক্ষী দিতে এসে বলেন, আমি এমন কোনো অ্যাফিডেভিট করিনি। অপরদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীর কাছে এ অ্যাফিডেভিটের কপি আছে বলে আদালতকে অবহিত করেন। তখন আদালত আসামিপক্ষকে বলেন, অ্যাফিডেভিটের কপি থাকবে অ্যাফিডেভিট করা আইনজীবীর কাছে। আপনাদের কাছে তা আসল কীভাবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল-২ নোটারি পাবলিকের দুই আইনজীবীকে আদালতে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা দিতে আদেশ দেন।
এরপর দুই আইনজীবী ভিন্ন ভিন্ন দিনে আদালতে উপস্থিত হন। তারপর রবিবার আদেশে এ দুই আইনজীবীর উপস্থিতিতে তিনটি নির্দেশনা দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করেন ট্রাইব্যুনাল।
(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এসবি/সা/জানুয়ারি ১২, ২০১৪)