এ সরকার সাংবিধানিকভাবে অবৈধ : বিএনপি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য একটি সরকার গঠন সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং সাংবিধানিকভাবে অবৈধ বলে মনে করে বিএনপি। দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন, নতুন সরকার গঠন বিতর্কিত, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ সরকার আইনসম্মত নয়, এতে সংবিধানের লঙ্ঘন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৪৯ জনের মন্ত্রিসভায় রবিবার বিকালে বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুইজন উপমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
নতুন সরকারের মন্ত্রীদের শপথ সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, যে সরকার গঠন হয়েছে তা বিতর্কিত, যেখানে একটি দল বিরোধী দল হিসেবেও থাকবে আবার সরকারের মন্ত্রিসভায়ও থাকবে। তাছাড়া সাংবিধানিকভাবে নবম সংসদ নির্বাচনের মেয়াদ ও নতুন সরকার গঠনের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।
‘প্রহসনের নির্বাচন জাতি যেমন গ্রহণ করেনি, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও সমালোচিত হয়েছে। আর এর মাধ্যমে নির্বাচিতদের নিয়ে যে সরকার গঠন করছে তা আইনসম্মত নয়।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে ও রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া খুব প্রয়োজন। এ জন্য ‘সংলাপ’র গুরুত্ব সবচেয়ে অগ্রাধিকার রয়েছে। বিএনপিও সংলাপের জন্য প্রস্তুত।’
‘দেশে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যত দেরি হবে, তত দেশের ক্ষতি হবে বলেও মনে করেন তিনি।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামছুজ্জামান দুদু বলেন,‘ ভোটারবিহীন নির্বাচনে লটুপাট, ডাকাতি করে জাল ভোট দিয়ে কলঙ্কিত নির্বাচনের ইতিহাস তৈরি করেছে। আর সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে তথাকথিত মন্ত্রিপরিষদের নামে ডাকাতদের পরিষদ গড়ে তুলেছে। এ দলের সর্দারনী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এ স্বৈরাচারী সরকার পতন ঘটাতে কেবল বিএনপিই নয়, যে কোনো সময় যে কেউ রুখে দাঁড়াতে পারে।
চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান বলেন, ‘অর্থহীন, ভোটারহীন নির্বাচন সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। তাই নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণও অবৈধ। আর অবৈধ সাংসদদের দিয়ে সরকার গঠনও অবৈধ। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
তিনি বলেন, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদ আছে। কিন্তু এর আগেই আরেকটি সরকার গঠন করে সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র থাকবে না। এটি না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও স্বার্ভভৌমত্ব অব্যাহত থাকবে না।’
‘এ সরকার সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক ও জনগণের সরকার নয়’ উল্লেখ করে আহমদ আযম বলেন, ভোটাররা এ নির্বাচন বর্জন করেছে। সিংহভাগ দল অংশ নেয়নি। এ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা হয়েছে। তাই গণতন্ত্র সুরক্ষিত রাখতে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১৪৮ এর ৩ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে কার্যভার গ্রহণ হয়ে যাবে। ১২৩ ধারায় বলা আছে, সংসদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। তবে আগের সংসদ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সে অনুযায়ী আইনে নবম সংসদের মেয়াদ ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত আছে। কিন্তু সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ ও সরকার গঠন অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।’
(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এপি/ এনআই/জানুয়ারি ১২, ২০১৪)