শুভেচ্ছা বিনিময় ফটোসেশনে মন্ত্রীদের প্রথমদিন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ফুলেল শুভেচ্ছা, মতবিনিময়, গণমাধ্যমের সামনে ফটোসেশন আর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়েই দিনের প্রথম ভাগ পার করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা।
অনেক বিতর্কের মধ্যে অর্পিত এই দায়িত্ব কেউ কেউ দেখছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। আবার অনেকেই নিয়েছেন স্বাভাবিকভাবে। তাদের দাবি, সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নয়, মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে ৫ বছরের জন্য। এই সময়ের মধ্যে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন উত্তরসূরীদের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দিকে।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন পুরোনো অভিজ্ঞতার আলোকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এই প্রভাবশালী নেতা। এবার তিনি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী। সম্পুর্ণ ভিন্ন এক মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পেলেও চিন্তিত নন এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। এরশাদ সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলাম। তখন পরিস্থিতি এর চেয়েও কঠিন ছিল। তাই বর্তমান সময়ে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করছি না।’
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও চিন্তিত না এই নেতা।
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক তার মন্ত্রণালয়ের চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করে বলেন, ‘যে কোনো মূল্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই থাকবে আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে আমরা বদ্ধপরিকর।’
নিজ দলের ভূয়সী প্রশংসা করে আওয়ামী লীগের এই মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, আওয়ামী লীগের সময় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়। গতবার ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেলহত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধী, পিলখানা হত্যা, ২০০১ সালের জনগুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার কাজ শুরু করেছে যা ছিল চ্যালেঞ্জিং। সেই অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করা আরও বড় চ্যালেঞ্জ।’
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এই সরকার ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসেননি, আসবেন না। তারা যদি তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতেই সমঝোতা চায় তা হলে কখনোই সমঝোতা সম্ভব নয়।’
জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রসঙ্গে প্রবীণ এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না এসে বড় ধরনের ভুল করেছে। এখন তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা হরতাল, অবরোধ বাদ দিয়ে হানাহানির পথ পরিহার করেছে।’
মন্ত্রণালয়ের চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, ‘জিএসপি পুনরুদ্ধার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া বাণিজ্য সম্প্রসারণ, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়দারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হবে।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ক্ষমতায় আসে নাই। ৫ বছরের জন্য সরকারে এসেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সরকার দেশের মানুষের জান-মাল রক্ষার বিষয়টি বিশেষ করে নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি চাইলে আলোচনা হতে পারে, তবে অবশ্যই তার আগে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসেনি এটা তাদের ভুল, ব্যর্থতা। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। কেননা, তারা জনগণের পাশে থাকেননি। জনগণও তাদের পাশে থাকবে না।’
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে সংস্কৃতি অনেক বড় একটি হাতিয়ার। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যা পালন করা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং। তারপরেও সকল বাধা উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণকে সজাগ করে তোলা হবে।’
(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/এমসি/সা/জানুয়ারি ১৩, ২০১৪)