নবীনদের দৃষ্টিতে সেলিম আল দীন
মুহম্মদ আকবর, দ্য রিপোর্ট : রবীন্দ্র উত্তরকালের অনন্য নাট্যকার নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন। কেমন ছিলেন তিনি, কীভাবে তার নাটকের কাজ এগিয়েছে। লেখনীতে অসাধারণ সব নাটক জীবন্ত করে তুলেছেন কীভাবে-এসবই এ সময়কার নবীন নাট্যকর্মীদের চিন্তার জগতজুড়ে রয়েছে। তাদের সে অভিব্যক্তি নিয়েই এই প্রতিবেদন।
তরুণ নাট্যনির্দেশক সামিয়া লুৎফা নিত্রা বলেন, তার কোনো নাটকে অভিনয় করার সুযোগ হয়নি। পাঠক হিসেবে বা দর্শক হিসেবে মনে হয়েছে তার নাটকের কোনো চরিত্রে অভিনয় করতে পারলে কী হতো- এমন প্রশ্ন প্রায়ই আমার মধ্যে জাগে। ঢাকা থিয়েটার, স্বপ্নদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা প্রযোজনা দেখে মনে হয়েছে থিয়েটার কর্মীদের কতদিক দিয়ে পারদর্শী হতে হয়। শব্দ চয়ন, বাক্যের ব্যপ্তি ও ভাবনা যেমন একজন নাট্যকর্মীকে দেখে ধাক্কা দেয় ঠিক তেমনি বিরাট এক চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করায়। এক বাক্যে পৃথিবীর অনেক ঘটনা উপস্থাপিত হয়, যা একজন নাট্যকর্মীকে অনেক ভাবনায় উজ্জীবিত হবার প্রেরণা জোগায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম সেলিম আল দীন সম্পর্কে বলেন, বাঙালির যে ঐতিহ্যগত নাট্যশৈলী আছে তা আধুনিক করার জন্য তিনি আমৃত্যু কাজ করেছেন। তার মানে এই নয় যে, তাকে একটি স্থানের মধ্যে আটকে রাখা যাবে। তিনি বাঙালির, বাংলাদেশের সেই সাথে বিশ্বনাট্যাঙ্গনের এক অনন্য নাট্যকার।
ইতালি প্রবাসী সংস্কৃতি কর্মী ঠাকুর পায়েল বলেন, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় শুধুমাত্র সেলিম আল দীন সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়নি। সম্প্রতি একটি রিহার্সেল দেখে আমি রীতিমত মুগ্ধ হয়েছি সেইসাথে প্রশ্ন জেগেছে- এত বড় চিন্তার একজন নাট্যকারকে নিয়ে কেন বিশ্ব অঙ্গনে আলোচনা হচ্ছে না।
সামিউন নাহার দোলা বলেন, সেলিম আল দীনের নাটকে অভিনয় করেছি, পাঠ করেছি এবং মঞ্চায়ন দেখেছি।তার নাটকের সংলাপ এবং ভাবনা থেকে বের হতে পারছি না। বিশেষ করে কীর্তনখোলা নাটকের কথা খুব বেশি করে আমার ভাবনার জগতকে প্রসারিত করে। সেলিম আল দীন শুধু একজন নাট্যকার বা লেখক নন তিনি আমার শিল্প-পিতা, আমার নিত্যদিনের সঙ্গী।
চাকা নাটকের কুশিলব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতথ্য বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দা ইফফাত আরা বলেন, সেলিম আল দীন স্যারের ‘চাকা’ নাটকে অভিনয় করা এবং নাট্যকলা বিভাগে পড়ার সুবাধে জানতে পারলাম সেলিম আল দীনের দুরূহ চিন্তার কথা। ইউরোপীয় অনেক নাটকের কাহিনী-সংক্ষেপ কয়েক বাক্যে বলা যাবে হয়ত, কিন্তু সেলিম আল দীনের নাটকের বিন্যাস এমনভাবে করা যেন কোন একটা বিষয়কে বাদ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
প্রাঙ্গণেমোরের নাট্যকর্মী সারোয়ার আলম সৈকত বলেন, ২০০৪ সালে তার ‘হাত হদাই’ নাটক মঞ্চে দেখি। দেখে মনে হয়েছে একজন বিচক্ষণ মানুষ ছাড়া নির্দেশনা দেয়া সম্ভব নয়। তার নাটকে সুনির্দিষ্ট কোন চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ নেই তাই সেখানে একজন অভিনেতাকে বিকশিত করার সুযোগ কতটুকু এমন প্রশ্ন আমাকে ভাবায়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এনআই/জানুয়ারি ১৪, ২০১৪)