দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাইস ক্রপ ম্যানেজার (আরসিএম) কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামের প্রযুক্তি নির্দেশিকা ব্যবহার করে কৃষকরা বাড়তি ধান উৎপাদনের পাশাপাশি তাদের আয় বাড়াতে পারবেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ইরি) যৌথভাবে এ অ্যাপলিকেশনটি উদ্ভাবন করেছে।

ব্রি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এটি ইতোপূর্বে অবমুক্ত ‘নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজার ফর রাইস’ বা এনএম রাইসের উন্নত সংস্করণ। সম্প্রতি ব্রি আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

এখন আরো উন্নত ও পরিবর্ধিতরূপে প্রোগ্রামটি দ্রুত কৃষক পর্যায়ে সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে ব্রি’র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস সভায় বলেন, এটি ধান চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর হবে। কেননা এর মাধ্যমে সার প্রয়োগ ছাড়াও ফসল ব্যবস্থাপনার অন্যান্য নির্দেশনা তাৎক্ষণিকভাবে কৃষক পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটি বেশ সহায়ক ও ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ড. বিশ্বাস বলেন, ইতোপূর্বে অবমুক্ত এনএম রাইসের একটি উন্নত সংস্করণ হচ্ছে আরসিএম। এটা বেশ বড় কাজ। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য এটা করা খুব জরুরি ছিল।

সভায় এক প্রশ্নের জবাবে ড. বিশ্বাস আরো জানান, ব্রি থেকে প্রকাশিত আধুনিক ধানের চাষ বইটিতে উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত পরিচিতিসহ উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতির যে বিবরণ ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সারাদেশে দ্রুত কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আরসিএম অ্যাপ্লিকেশনটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে ড. বিশ্বাস ব্রির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আরসিএম ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিক সুপারিশ করেন।

সভায় অংশগ্রহণকারীদের আলোচনা শেষে বাংলাদেশে ধান চাষের কাজে এর ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অ্যাপলিকেশনটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই ব্যবহার করা যাবে।

ওই সভায় ইরি ও ব্রির ৩০জন বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তা অংশ নিয়ে প্রোগ্রামটির উপযোগিতা ও কার্যকারিতার নানা দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন।

ব্রির প্রকাশনা ও জনসংযোগ বিভাগের প্রযুক্তি সম্পাদক ও প্রধান এমএ কাসেম এ প্রসঙ্গে বলেন, স্মার্টফোন অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আরসিএম ব্যবহার করা যাবে। জমির ঊর্বরতার মাত্রা অনুযায়ী কখন, কতটুকু সার প্রয়োগ করতে হবে।প্রত্যাশিত ফলনের জন্য চারার বয়স কত হবে। বীজ বপন ও চারা রোপণের কৌশল ও পদ্ধতি কি হবে। আগাছা ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কখন, কি করতে হবে- ধান চাষের এসব জরুরি পরিচর্যার বিষয়ে প্রোগ্রামটির মাধ্যমে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ও পরামর্শ দেওয়া যাবে।

দ্য রিপোর্টকে তিনি জানান, এ প্রযুক্তির কার্যকারিতার নানা দিক নিয়ে ব্রি এবং ইরি তিন বছর আগে থেকে যৌথ উদ্যোগে কাজ করে আসছে। গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ও কৃষকরা বিনামূল্যে এই সেবা পাবেন। আরসিএম ব্যবহারে বাড়তি ফলন ও মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে হেক্টর প্রতি সাতশ থেকে এক হাজার কেজি ধান এবং আট হাজার থেকে দশ হাজার টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এপি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪)