ঐহিত্যবাহী পাগল চাঁদ ঠাকুরের মেলা অনুষ্ঠিত
নড়াইল সংবাদদাতা : নড়াইলের হিজলডাঙ্গায় দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাগল চাঁদ ঠাকুরের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলে এ মেলা। সোমবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুদিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়।
পাগল চাঁদের স্মরণে আলোচনা সভা, ভক্তিগীতি, নামকীর্ত্তণ ও প্রসাদ বিতরণসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মেলার শেষদিন (মঙ্গলবার) সকাল থেকেই প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে দূর-দূরান্তের ভক্তরা মেলায় আসতে শুরু করেন। যাত্রীবাহী বাস, লেগুনা, নসিমন, করিমন, আলমসাধু, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে পাগল চাঁদ ভক্ত ও দর্শনার্থীরা হিজলডাঙ্গা মন্দির প্রাঙ্গনে আসেন।
দুপুর গড়াতেই মন্দিরের কাছে হিজলডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় হাজার হাজার ভক্তের পদচারণায়। মেলা প্রাঙ্গনটি যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়।
মাঠ জুড়ে ছোট-বড় দুই শতাধিক স্টলে হস্তশিল্প, কারুশিল্পসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানীরা। জমজমাট বেচা-কেনা চলে।
মেলায় এ বছরও ভিন্ন আকর্ষণ ছিল মিষ্টির দোকানগুলোতে। হরেক রকমের মিষ্টি দেখে ডায়াবেটিসের রোগীরাও লোভ সামলাতে পারেন না। আর এই শীতে গরম জিলাপী দর্শনার্থীদের দিয়েছে ভিন্ন স্বাদ।
মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক স্বপন রায় জানান, গুরু পাগল চাঁদের অনেক গুণ ছিল। তার জীবদ্দশায় বিভিন্ন রোগে মানত করলে রোগ ভালো হতো। মৃত্যুর পরও এই হিজলডাঙ্গা মন্দিরের সামনে পাগল চাঁদের সমাধিস্থলে কোনো মনোবাসনা নিয়ে মানত করলে রোগব্যাধিসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়ে যায় বলে ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে। তাই প্রতি বছর এই মন্দির ঘিরে মেলাসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় মেলা পরিদর্শন করেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী প্রমুখ।
নড়াইলের সহকারী পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মেদ ভূইয়া জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মেলা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএআর/জানুয়ারি ১৪, ২০১৪)