ব্যাংককে সরকারি দফতরে বিরোধীদের তালা
থাইল্যান্ডে বিরোধীদের ঘোষিত ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী ব্যাংককের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। সরকার অচল করার লক্ষ্যে বিক্ষোভকারীরা দেশটির সব সরকারি দফতরের সামনে অবস্থান নেয়।
আলজাজিরার খবরানুযায়ী, বিক্ষোভকারীরা সরকারি দফতরগুলোতে তালা দিয়েছে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এ সময় তারা সব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো ঘেরাও করে রাখে।
রাজধানীতে যে কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে ১৮ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য গত নভেম্বরে আন্দোলন শুরু করে বিরোধীরা। বিক্ষোভের মুখে ইংলাক নতুন করে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়নি। তারা ইংলাকের পদত্যাগ ও নির্বাচন অনুষ্ঠান বন্ধ করতে সপ্তাহব্যাপী ব্যাংকক ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে। সোমবার থেকে এ কর্মসূচি চলছে।
এ পর্যন্ত দেশটিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে কমপক্ষে ৮ জন মারা গেছেন এবং ৫ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
ইংলাক সিনাওয়াত্রার ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা দুর্নীতির দায়ে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হলে ইংলাক দলের দায়িত্ব নেন। গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে আসার পর রাজনীতিতে নিষিদ্ধ থাকসিন নির্বাচন করতে না পারায় ইংলাকই ভাইয়ের ইমেজ কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এমতাবস্থায় নির্বাচিত সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কেন বিরোধী দল আন্দোলন শুরু করল তা স্পষ্ট নয়। তবে উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে থাইল্যান্ডকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য থাকসিন যে দায়িত্ব পালন করেছেন সেটিই তাদের দলের প্রতি জনসমর্থনের অন্যতম কারণ। ইংলাকও ভাইয়ের পথকে অনুসরণ করছেন বলে জানা যায়।
পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকে। থাইল্যান্ডেও সে ঘটনা ঘটে থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। ইংলাক সরকারের বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ উঠতেই পারে। সে কারণে তার পদত্যাগের দাবি বিরোধীদের কাছে যৌক্তিক। তবে কোনো মতেই একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে থাইল্যান্ডের উন্নয়ন এবং তার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এ অন্দোলনে যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে প্রত্যাশা আমাদের।